ডেস্ক রিপোর্টার, ১৯এপ্রিল।
                রাজ্যের বিরোধী দল তিপ্রামথার দাবি মেনে ইন্টারলোকেটর নিয়োগ এখন বিষবাও জলে। দিন যত গড়াচ্ছে ইন্টারলকেটর নিয়োগের বিষয়টি ততই মলিন হচ্ছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ প্রতিশ্রুতি দিলেও এখন চুপ। ইদানিং কালে হাসফাঁস কমে গেছে তিপ্রামথার সুপ্রিমো প্রদ্যুৎ কিশোরের। গত ২৭মার্চ ইন্টারলোকেটর নিয়োগের কথা ছিলো। কিন্তু এখন  কেন্দ্রীয় সরকার বিষয়টি নিয়ে আর ইন্টারেস্ট দেখাচ্ছে না।


স্বাভাবিক ভাবেই ব্যাকফুটে চলে যাচ্ছেন প্রদ্যুৎ নিজেও। জনজাতি সম্প্রদায়ের কাছে তিনি এখন কোনো সদুত্তর দিতে পারছেন না,বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।


রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা বলছেন, তিপ্রামথার ইন্টারলোকেটর নিয়োগ কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষে এতোটা সহজ নয়।কারণ ২৩- এ বিজেপির ক্ষমতায় আসার ক্ষেত্রে বাঙালি ভোট ধন্বন্তরির মতো কাজ করেছে। ২৬টি আসনে বাঙালিরা বিজেপির জয় নিশ্চিত করেছে।পাহাড় থেকে পেয়েছে মাত্র ছয়টি আসন। তাও আবার যেসমস্ত আসলে বাঙালি ভোটারের সংখ্যা ৪০ থেকে ৪৫ শতাংশ।


বরং তিপ্রামথার জন্য কয়েকটি আসন বিজেপির হাত ছাড়া হয়েছে।এই পরিস্থিতিতে ইন্টারলোকেটর নিয়োগ করলে ধাক্কা লাগতে পারে বাঙালি ভোটে।সামনেই ২৪- র লোকসভা নির্বাচন।রাজ্যের দুইটি লোকসভা আসন নিশ্চিত করতে হলে ধরে রাখতে হবে বাঙালি ভোট।কারণ লোকসভার পূর্ব ও পশ্চিম আসনে বাঙালি ভোটারের সংখ্যা সর্বাধিক।


২৩- র বিধানসভা নির্বাচনে ভোটের এক নতুন মেরুকরণ দেখা গিয়েছে।কারণ কমিউনিষ্টরাও বাঙালি ভোটে দখল নিয়েছে। এতো দিন কমিউনিস্টদের মূল ভোট ব্যাংক ছিলো জনজাতি ভোট।এবার জনজাতিরা বামেদের ভোট দেয় নি।
               


কমিউনিষ্টদের ঝুলিতে আসা ১১টি আসন এসেছে বাঙালি ভোট থেকেই। যদি বিজেপি তিপ্রামথার ক্ষেত্রে নরম মনোভাব দেখায় তাহলে বাঙালি ভোট সুইং করার প্রবণতা দেখা দিতে পারে। তাতে আক্ষরিক অর্থে সমস্যা বাড়বে বিজেপির। তাছাড়া প্রদ্যুৎ সহ তিপ্রামথার নেতৃত্বের জাতি বিদ্বেষী বেশি বক্তব্য প্রতিমুহূর্তে বাঙালিদের আঘাত করছে। ক্ষোভ বাড়ছে মথার প্রতি। এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় সরকার ইন্টারলোকেটর নিয়োগ করলে বেকে বসতে পারে বাঙালিরা । তখন পরিস্থিতি সামাল দেওয়া বিজেপির পক্ষে নিশ্চিত ভাবে কঠিন হবে।তখন মাঝখান থেকে ফায়দা লুঠবে বামেরা।


কমিউনিস্টদের অবশ্যই এই সুযোগটি দিতে চাইবে না বিজেপি।এই মুহূর্তে ইন্টারলোকেটর নিয়োগ নিতে কমিউনিস্টরা মুখে কুলুপ এঁটে রেখে।সরকারের পদক্ষেপ দেখেই তারা ঝাঁপিয়ে পড়বে ময়দানে।তখন বামেরা পাশে পেয়ে যেতে পারে বাঙালিদের। তাই ইন্টারলোকেটর নিয়ে উভয় সংকটে আছে কেন্দ্রীয় সরকার।


সম্ভবত এই ভাবেই ইন্টারলোকেটর ইস্যু জিইয়ে রেখেই ২৪- র লোকসভা ভোটের দৌঁড়গোড়ায় পৌঁছে যেতে চাইছে বিজেপি।


বাঙালি ভোটকে প্রাধান্য দিয়েই লোকসভার দুইটি আসন পুনরায় নিজেদের দখলে রাখতে চাইছে বিজেপি।এই কারণেই ইন্টারলোকেটর প্রসঙ্গে ধীরে চলো নীতি অবলম্বন করেছে ভারতীয় জনতা পার্টি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *