ডেস্ক রিপোর্টার, ৮মে।।  
          “সোমবার রাতে আমার বাবার বাড়িতে সিভিল ড্রেসে পুলিশ এসেছিলো। তারা সঙ্গে নিয়ে এসেছিলো একজন মহিলা ও যুবতীকে। সিভিল ড্রেসে থাকা পুলিশ তার বাবাকে নির্দেশ দেয়, তাদের সঙ্গে গাড়ি করে আসা মহিলা ও যুবতীকে রাতে থাকার ব্যবস্থা করে দিতে। কিন্তু এই মহিলার বাবা তাতে রাজি হন নি। তাদের বাড়িতে আসা লোকজনের পরিচয় জানতে চাইলে,’ওরা’ জানায়, তারা এসেছে এয়ারপোর্ট থানা থেকে।”—- এই বক্তব্য অঞ্জনা দত্ত নামে এক মহিলার। তার বাবার বাড়ির সঙ্গে ঘুর পথে সম্পৃক্ততা রয়েছে ভারত রত্ন সংঘের সম্পাদক দূর্গা প্রসন্ন হত্যাকাণ্ডের।
         দুর্গা প্রসন্ন হত্যা মামলায় ধৃত সুস্মিতা সরকারের আরো এক প্রেমিক রয়েছে।তার নাম রাকেশ দত্ত।কর্ম সূত্রে থাকেন বহিঃ রাজ্যে।রাকেশের বাড়ি বোধজংনগর থানার পশ্চিম নোয়াবাদি এলাকায়।তাহলে কি দূর্গা প্রসন্ন হত্যা মামলায় সুস্মিতা সরকারের প্রেমিক রাকেশ দত্ত- ও জড়িত? না, আপাতত পুলিশের কাছে এমন কোনো তথ্য নেই।রাকেশ সাদাসিদা ছেলে। কিন্তু রাকেশের পরিবার দুর্গা প্রসন্ন হত্যা মামলার চক্রবুহ্যে ফেঁসে গিয়েছে।ছুটছে তাদের ত্রাহি ত্রাহি ডাক। দূর্গা প্রসন্ন হত্যার রেশ ধরেই জিবি হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন সুস্মিতার প্রেমিক রাকেশ দত্তের বাবা বাবুল দত্ত।বলেছেন, অসুস্থ বাবুল দত্তের মেয়ে অঞ্জনা দত্ত। অর্থাৎ সুস্মিতার প্রেমিক রাকেশ দত্তের দিদি।

।।অসুস্থ বাবুল দত্ত জিবিতে চিকিৎসাধীন।।

অঞ্জনা দত্ত স্বীকার করেছেন, তার ভাই রাকেশের সঙ্গে দুর্গা প্রসন্ন হত্যা মামলায় ধৃত সুস্মিতার প্রণয়ের সম্পর্ক ছিলো। রাকেশ কর্ম সূত্রে থাকে রাজ্যের বাইরে।সোমবার রাতে অচমকা কয়েকজন লোক অঞ্জনাদের পশ্চিম নোয়াবাদিস্থিত বাড়িতে গিয়ে উঠেছিলো। তারা নিজেদের এয়ারপোর্ট থানার পুলিশ বলে দাবি করেন।কোমরে ছিলো পিস্তলও। তবে সিভিল ড্রেসে। সঙ্গে ছিলো একজন মহিলা ও একজন যুবতী। তাদের নাম ঊমা সরকার ও প্রতিমা সরকার।তারা দুর্গা প্রসন্ন হত্যা মামলায় ধৃত সুস্মিতা সরকারের মা ও বোন।
         অঞ্জনা দত্তের বক্তব্য, সিভিল ড্রেসে থাকা লোকজন  সুস্মিতার মা ও বোনকে তার বাবার বাড়িতে রাখার জন্য চাপ দেয়। তখন অঞ্জনার বাবা বাবুল দত্ত তাতে রাজি হন নি। তাই তারা বাবুল দত্তের হাতে থাকা মোবাইল সেটটি ছিনিয়ে নিয়ে যায়।কথাবার্তা শুনে আশপাশের লোকজন আসতেই সিভিল ড্রেসে থাকা পুলিশ গাড়ি নিয়ে বাবুল দত্তের বাড়ি থেকে চম্পট দেয়।


অঞ্জনা জানিয়েছেন, রাতের ঘটনার পর তার বাবা বাবুল দত্ত ভয় পেয়ে যান। এবং অপমান বোধ করেন।তিনি এই অপমান সহ্য করতে না পেরে মঙ্গলবার সকালে বিষ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন।বর্তমানে তিনি জিবি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।লড়াই করছেন জীবন – মৃত্যুর সঙ্গে।
বাবার এই ঘটনার জন্য দায়ী অপরাধীদের কঠোর শাস্তি চাইছেন অঞ্জনা। এবং বাবাকে দ্রুত সুস্থ করে তুলতে চাইছেন।
  জিবি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বাবুল দত্তের স্ত্রী অর্থাৎ সুস্মিতার প্রেমিক রাকেশ দত্তের অসহায় মা আতঙ্কগ্রস্থ অবস্থায় তার স্বামীর উপর মানসিক অত্যাচারের কথা জানিয়েছেন অকপটে। তিনিও  বলেছেন, ঘটনার রাতে তাদের বাড়িতে আসা লোকজন নিজেদের এয়ারপোর্ট থানার পুলিশ বলে দাবি করেছিলো।


এই ঘটনা সম্পর্কে আমরা যোগাযোগ করেছিলাম এয়ারপোর্ট থানার ওসি অভিজিৎ মণ্ডলের সঙ্গে। ঘটনা শুনে তাজ্জব ওসি নিজেও। তিনি বলেন, “এয়ারপোর্ট থানা থেকে পশ্চিম নোয়াবাদীতে সোমবার রাতে কোন পুলিশ পাঠানো হয়নি এবং দুর্গাপ্রসন্ন হত্যা মামলায় ধৃত সুস্মিতা সরকারের মা ও বোন আছে পশ্চিম থানার পুলিশের হেফাজতে। তিনি ঘটনা সম্পর্কে কিছুই জানেন না।”
  তাহলে তো স্পষ্ট, যে দূর্গা প্রসন্ন হত্যার রহস্যের জাল অনেক গভীরে। রাতের আঁধারে পুলিশের গাড়িতে করে উমা ও তার মেয়ে প্রতিমাকে নিয়ে কারা গিয়েছিল বাবুল দত্তের  নোয়াবাদীস্থিত
বাড়িতে? যারা নিজেদের পুলিশ বলে দাবি করেছিলো। এবং বলেছিল ঊমা সরকার ও তার মেয়েকে আশ্রয় দেওয়ার জন্য।


এয়ারপোর্ট থানার ওসি অভিজিৎ মণ্ডলের কথা অনুযায়ী, সোমবার রাতে সুস্মিতা সরকারের মা ঊমা সরকার ও বোন প্রতিমা সরকার পশ্চিম থানার হেফাজতে ছিল। এয়ার পোর্টথানা কর্তৃপক্ষ কিছুই জানে না। তাহলে ঊমা ও প্রতিমাকে সেভ জোনে রাখার জন্য পশ্চিম থানার পুলিশ কি তাদেরকে বাবুল দত্তের বাড়িতে নিয়ে গিয়েছিল? পুলিশের স্বার্থই বা কি?যদি পশ্চিম থানার পুলিশ ঊমা ও তার মেয়েকে বাবুল দত্তের বাড়িতে না নিয়ে যায়, তাহলে কারা নিয়ে গিয়েছিলো? যারা গিয়েছে তাদের পরিচয়- ই বা কি? আবার সাধারণ সিভিলিয়ানরা পশ্চিম থানার হেফাজত থেকে কিভাবে উমা সরকার ও তার মেয়ে প্রতিমাকে নিয়ে যাবে পশ্চিম নোয়াবাদিতে? কার এই দুঃসাহস! পুরো ঘটনা রহস্য জনক এবং হাড় হিম করার মতো।
 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *