অমরপুর ডেস্ক, ২২জানুয়ারি।।
ব্যবসায়িক ঝামেলা কেন্দ্র দুষ্কৃতীর গুলিতে নিহত এক মৎস্যজীবী।গুরুতর জখম আরো দুই মৎস্যজীবী। নিহত ব্যক্তি নাম সিতন দাস(৪০)। আহতরা হলেন সটন দাস(৪২) ও লিটন দাস(৩৫)। তাদের বাড়ি অমরপুরের যতন বাড়ি আইটিআই সংলগ্ন এলাকায়। শনিবার ভোরে স্থানীয় রামভদ্র এলাকায় এই ঘটনা সংঘটিত হয়েছে।নিহত ব্যক্তি ও আহত দুইজন সম্পর্কে ভাই। অর্থাৎ একই পরিবারের এক ভাই খুন হয়েছে।অপর দুইজন হাসপাতালে পাঞ্জা লড়ছে মৃত্যুর সঙ্গে। এই ঘটনা কেন্দ্র করে অমরপুর ও করবুক এলাকায় বিরাজ করছে তীব্র উত্তেজনা। ঘটনাস্থল ছুটে গেছেন পদস্থ পুলিশ আধিকারিকরা। করবুক থানার পুলিশ একটি মামলা রুজু করে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।তবে এখন পর্যন্ত নেই গ্রেফতারের কোনো খবর। একাংশ স্বার্থনেশি মহল এই ঘটনাকে সাম্প্রদায়িক রূপ দেওয়ার জন্য মাঠে নেমেছে।এর ফলে আড়ালে চলে যাচ্ছে মূল ঘটনা।
পুলিশ জানিয়েছে, যতনবাড়ি আইটিআই এলাকায় বাসিন্দা সিতন-সটন-লিটনরা।তারা পেশায় মৎস্যজীবী। প্রতিদিন ভোরে তিন ভাই একসঙ্গে মাছ সংগ্রহ করার জন্য উপজাতি মহল্লায় ছুটে যান। প্রতিদিন তারা এলাকার সিংহ ভাগ মাছ সংগ্রহ করে বাজারে নিয়ে আসেন।তিন ভাইয়ের সঙ্গে বাণিজ্যিক দৌঁড়ে ক্রমেই পিছিয়ে পড়ছিল জনজাতি অধ্যুষিত রামভদ্র সহ আশপাশ এলাকার মৎস্য ব্যবসায়ীরা। এনিয়ে বেশ কিছুদিন ধরেই স্থানীয় মাছ ব্যবসায়ীদের সঙ্গে ঠান্ডা লড়াই চলছিলো তিন মৎস্যজীবী ভাইয়ের।
অন্যান্য দিনের মতো শনিবার ভোরে মাছ সংগ্রহের উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হন তিন ভাই
সিতন-সটন-লিটনরা। মহকুমা পুলিশের খবর অনুযায়ী, রামভদ্র যাওয়ার পরই পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে স্থানীয় ১৫-২০ জন মৎস্যজীবী একজোট হয়ে সিতন-সটন-লিটনদের পথ অবরোধ করে।এবং তিন ভাইকে গণধোলাই দেয়।এরপর খুব সামনে থেকে থেকে তিন মৎস্যজীবীকে গুলি করে হত্যার চেষ্টা করা হয়।দুস্কৃতিদের বুলেটের আঘাতে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় সিতন দাসের। বুলেট বিদ্ধ হয়ে রক্তাক্ত হয় অপর দুই ভাই সটন ও লিটন।
এদিন সকালে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যায় করবুক থানার পুলিশ। তারা সিতন দাস ও তার দুই ভাই সটন ও লিটনকে প্রথমে অমরপুর হাসপাতালে নিয়ে আসে। চিকিৎসকরা সিতন দাসকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। শারীরিক অবস্থা অবনতি হওয়াতে সিতন দাসকে রেফার করা হয় আগরতলার জিবি হাসপাতালে।এবং লিটন দাসকে রেফার করা হয়েছে গোমতী জেলা হাসপাতালে।
খবর পেয়ে নিহত ও আহতদের বাড়িতে ছুটে গিয়েছেন অমরপুরের বিধায়ক রঞ্জিত দাস।তিনি ঘটনার সুষ্ঠ তদন্তের আশ্বাস দিয়েছেন। তবে এই ঘটনা কেন্দ্র করে গোটা অমরপুর, নতুন বাজার ও করবুক এলাকায় সৃষ্টি হয়েছে ব্যাপক উত্তেজনা। এবং এই ঘটনায় চড়ছে সাম্প্রদায়িক রঙ। ঘটনার সকালে উত্তেজিত জনতা যতনবাড়িতে রাস্তা অবরোধ করে প্রতিবাদ জানায়। আন্দোলনকারীরা অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবি তুলে।পরিস্থিতি আচ করতে পেরে সংশ্লিষ্ট এলাকায় মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত নিরাপত্তা বাহিনী।স্থানীয়দের দাবি, রামভদ্র এলাকায় রিয়াং ও মুন্ডা সম্প্রদায়ের বসবাস।মূলত এই জনজাতি গোষ্ঠীর একাংশ লোকজন এই ঘটনা সংঘটিত করেছে বলেই ধারণা করা হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *