ডেস্ক রিপোর্টার,আগরতলা।।
        রাজধানীর নতুন নগর গুলি কাণ্ডে এখনো অধরা মূল মাস্টারমাইন্ড রাজু বর্মন ও বিমান দাস। পুলিশ ঘটনার রাতেই প্রভাকর ঘোষ ও সন্তোষ দাসকে গ্রেফতার করেছিল। তদন্তকারী পুলিশের দৌড়ঝাঁপ  দেখে মনে হয়েছিল কয়েক ঘন্টার মধ্যেই তদন্তের জাল গুটিয়ে আনতে সক্ষম হবে। এবং গ্রেপ্তার করবে গুলি কাণ্ডের মূল কুশীলবদের। কিন্তু  দুর্ভাগ্যের বিষয়, কোনো এক অজ্ঞাত কারণে তদন্তকারী পুলিশ অনেকটাই নিষ্ক্রিয় হয়ে গিয়েছে। গুলি কান্ডের মূল কুশীলবরা এখনো আসেনি পুলিশের তদন্তের টর্চ লাইটের নিচে। নিন্দুকদের কথায়, পুলিশ সবই জানে। কিন্তু মূল কুশীলবদের মাথায় “ডাক্তার স্যারে”র হাত থাকায় কিছুই করতে পারছেন না । আগামী দিনে পুলিশ এই মামলার তদন্ত কতটা মসৃণ ভাবে করতে পারবে? তা নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। কারণ গুলি কাণ্ডের পর থেকেই পুলিশ “ডাক্তার স্যারে”র তৈরি করা কক্ষপথ দিয়ে ঘুরছে। এই কক্ষপথের বাইরে এখনো যেতে পারেন নি সদর এসডিপি অজয় কুমার দাস ও তাঁর টিম।


উষা বাজারের সিপিডব্লিউডি নিগোসিয়েশনের  মধুর ভান্ডের দখল নিয়েই নতুননগর গুলি কান্ডের সূত্রপাত। তদন্তকারী পুলিশের কাছে এই বিষয়টি জলের মতো পরিষ্কার। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে তাহলে, এই মুহূর্তে সিপিডব্লিউডির নিগো বাণিজ্যের ব্যাটন কার হাতে? যার হাতে ব্যাটন, তার নির্দেশেই রচিত হয়েছে গুলি কাণ্ডের স্ক্রিপ্ট। এনিয়ে কোনো সন্দেহ নেই।


কেন এবং তারা নতুন নগরের গুলি কাণ্ড সংঘটিত করেছে? তার পূর্ণাঙ্গ তথ্য রয়েছে পুলিশের কাছে। পুলিশ ঘটনার পর পরেই এই সমস্ত তথ্য সংগ্রহ করেছিলো সুনিপুণভাবে।এরপরই তদন্তকারী পুলিশকে টেনে দেওয়া হয় লক্ষণ রেখা। এই লক্ষণ রেখা টেনে দেওয়ার কান্ডারী স্থানীয় ডাক্তার স্যার। এমনটাই গুঞ্জন খোদ পুলিশ মহলে। ডাক্তার স্যারের কালো হাতের বুদবুদ গন্ধ ছড়িয়ে পড়েছে গোটা বড়জলা বিধানসভা এলাকাতেও।

বুলেট বিদ্ধ হরিপদ ও সঞ্জয়।

স্থানীয় মানুষের কাছে স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে হরিপদ দাস ও সঞ্জয় দাসের উপর কারা গুলি চালিয়েছিলো এবং কেন?  পুলিশের অজানা নয়, এই সংক্রান্ত তথ্য। তা সত্ত্বেও গুলি কান্ডের মাস্টারমাইন্ডরা এখনও পুলিশের ধরাছোঁয়ার বাইরে। কারণ ডাক্তার স্যার পুলিশ ও অপরাধীদের মধ্যে ডিফেন্সিভ স্কিনের ভূমিকা নিয়েছেন । এই কারণেই মূল কুশীলব রাজু বর্মন ও বিমান দাস পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছে। এবং তারা ভালো করেই জানেন  পুলিশ কখনো তাদেরকে গ্রেফতার করতে পারবে না। কারণ ডাক্তার স্যার তাদের হয়ে পুলিশকে সব রকমের উপশম দিয়ে দিয়েছেন।

ধৃত প্রভাকর ঘোষ ও সন্তোষ দাস

এমন ঘটনা নতুন নয়। এর আগেও হয়েছে। বহি: রাজ্যের ঠিকাদার অপহরণ মামলার সময়ও ডাক্তার স্যার রাজু- বিমানদের মত দাগি অপরাধীদের বাঁচিয়ে দিতে কোন রকম কার্পণ্য করেননি।  অপরাধীদের পুলিশি জেরা থেকে রেহাই দেওয়ার জন্য তাদেরকে অসুস্থতার ভান করারও নাকি নির্দেশ দিয়েছিলেন ডাক্তার স্যার। পাশাপাশি হাসপাতালের চিকিৎসকদের সঙ্গেও ডাক্তার স্যার সমান্তরাল সম্পর্ক রেখেছিলেন। এর ফলে হাসপাতালের চিকিৎসক, তদন্তকারী পুলিশ ও ডাক্তার স্যারের ত্রিবেণী সঙ্গমে ঠিকেদার অপহরনে জড়িত অভিযুক্তদের খুব সহজেই ভর্তি করিয়ে দেওয়া হয়েছিল আইজিএম হাসপাতালে। রাজু বর্মন, বিমান দাসদেরর মতো দাগি অপরাধীদের ক্রাইম ব্রাঞ্চ কিছুই করতে পারেনি। বর্তমান সদর এসডিপিও তথা তৎকালীন ক্রাইম ব্রাঞ্চের ডিএসপি অজয় কুমার দাস দৌঁড় ঝাঁপ করে অপরাধীদের গ্রেপ্তার করলেও ডাক্তার স্যারের নির্দেশে তাদেরকে  জামাই আদর করেই রাখতে হয়েছিলো। এবারও একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হবে বলে আশঙ্কা ওয়াকিবহাল মহল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *