ডেস্ক রিপোর্টার,১১নভেম্বর।।
ট্রাফিক বিধি লঙ্ঘনের জরিমানার নামে বিশ্রামগঞ্জ থানায় চলছে তোলা বাণিজ্য। খোদ থানা পুলিশ হজম করছে সরকারী কোষাগারের টাকা।পুলিশকে জরিমানার টাকা পাঠাতে হয় গুগল পে – তে। এই গুগল পে’ র নম্বর আবার থানার এক কনস্টেবলের। তিনিই নাকি বিশ্রামগঞ্জ থানার ক্যাশিয়ার। মাসান্তে হিসেব হয় সমস্ত তোলার টাকার।এরপর নিয়ম করে হয় ভাগাভাগি।
থানার বড় বাবু থেকে মেঝ বাবু এবং ছোট বাবু থেকে কনস্টেবল সবার পকেটেই চলে যায় সরকারের লক্ষ্মীর ধন। দীর্ঘ দিন ধরেই বিশ্রামগঞ্জ থানায় চলছে এই সংস্কৃতি। কিন্তু সবাই নিশ্চুপ। বিশ্রামগঞ্জ থানার এই কদর্য চেহারা প্রকাশ্যে আসে সম্প্রতি।
গত ৪ নভেম্বর কৃত্তিকা দত্ত নামে এক মহিলা তার স্বামী ,সন্তানকে নিয়ে স্কুটি চেপে বিশ্রামগঞ্জ থেকে আসছিলেন বিশালগড়ের দিকে। স্কুটিতে চালকের আসনে ছিলেন তার স্বামী। স্কুটিতে থাকা তিন জনের মাথায় ছিলো হ্যালমেট। বিশ্রামগঞ্জ থানার নাকা পয়েন্টে আসতেই থানার মাফিয়া পুলিশ কর্মীরা স্কুটি থামানোর নির্দেশ দেন।যথারীতি কৃত্তিকার স্বামী স্কুটি থামিয়ে দেন। কর্তব্যরত পুলিশ স্কুটির প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দেখতে চায়। কৃতিকা ও তার স্বামী স্কুটির সমস্ত কাগজপত্র তুলে দেন পুলিশের হাতে। তাদের সমস্ত কাগজ পত্র ছিলো আপডেট।
পুলিশ তা খতিয়ে দেখে বলেন, স্কুটির পলিউশনের কাগজ দিতে।তখন কৃত্তিকা দাবি করেন, স্কুটিতে দূষণের কোনো কাগজ দরকার হয় না।এনিয়ে বেশ কিছুক্ষন পুলিশের সঙ্গে তার বাক বিতন্ডা হয়। শেষ পর্যন্ত পুলিশ কৃত্তিকাকে পাঁচশ টাকা জরিমানা করে। তবে পুলিশ জানিয়ে দেন, জরিমানার টাকা দিতে হবে গুগল পে- তে। থানার কনস্টেবল হোসেনের মোবাইল নম্বরে গুগল পে করতে হবে। তখনই বেকে বসেন কৃত্তিকা।তিনি বলেন, জরিমানার টাকা দিলে টাকা রসিদ দিতে হবে। কিন্তু পুলিশ তাতে রাজী হয় নি। শেষ পর্যন্ত এক মহিলা পুলিশ এসে কৃত্তিকাকে নির্দেশ দেন, থানার ভিতরে গিয়ে সেকেন্ড অফিসারের সঙ্গে কথা বলতে। সঙ্গে সঙ্গে কৃত্তিকা ও তার স্বামী ছুটে যান থানায়।তখন সেকেন্ড অফিসার বিধান দেন, থানায় এলে এক হাজার টাকা জরিমানা দিতে হবে। তাও আবার থানার কনস্টেবল হোসেনের মোবাইল নম্বরে করতে হবে গুগল পে। কিন্তু কৃত্তিকা রাজি হয় নি।
শেষ পর্যন্ত কৃত্তিকা তার পরিচিত শাসক দলের এক নেতাকে ফোন করেন।এবং একটা বিহিত চান।এরপর মাঠে নামেন শাসক দলের নেতা।তিনি রাজ্য পুলিশের এক ডিএসপিকে জানান। ডিএসপির ফোন পেয়ে থানায় ছুটে আসেন ওসি সুবিমল দেবনাথ।তিনি এসে ঘটনা মিটমাট করেন।এবং প্রকারন্তে দুঃখ প্রকাশ করেন। তিনি স্বীকার করেছেন, তার অনুপস্থিতিতে থানার পুলিশ কর্মীরা এধরনের ঘটনা করে থাকেন।বিষয়টি তিনি শক্ত হাতে দেখবেন বলেও মন্তব্য করেন। এরপর কৃত্তিকা ও তার স্বামী বেরিয়ে আসেন থানা থেকে।এই ঘটনা থেকে স্পষ্ট পুলিশ কর্মীরা কিভাবে তোলাবাজি করে থাকে।এবং সরকারি কোষাগারের টাকা বাকা পথে ঢুকিয়ে নেয় নিজেদের পকেটে। এই ঘটনার পর বিশ্রামগঞ্জ থানার ওসি ও এসডিপিও কি থানার সেকেন্ড অফিসার, কনস্টেবল হোসেনের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেবেন? এই প্রশ্নের উত্তর দেবেন কে?