ডেস্ক রিপোর্টার, আগরতলা।।
         “বন্দুক দিয়ে অধিকার অর্জন করা যায় না অধিকার অর্জন করতে হয় শান্তির মাধ্যমে” । বক্তা, তিপ্রামথার সুপ্রিমো প্রদ্যুৎ কিশোর দেববর্মা। রবিবার রাজ অন্দরমহলে অনুষ্ঠিত এক সাংবাদিক বৈঠকে এ কথা বলেন তিনি।  প্রদ্যুৎ কিশোর তার এই বক্তব্যের মাধ্যমে প্রকারন্তে রাজ্যের নিষিদ্ধ  জঙ্গি সংগঠন এনএলএফটির দিকেই আঙ্গুল তুলেছেন। কেননা দীর্ঘ বছর ধরে রাজ্যের নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠনগুলি অস্ত্রের মুখে স্বাধীন ত্রিপুরার স্বপ্ন দেখাতে শুরু করেছিলো।  বাস্তব অর্থে এখন পর্যন্ত বন্দুকবাজ স্বাধীন ত্রিপুরার ফেরিওয়ালারা তাদের  স্বপ্ন সফল করতে পারেনি।আগামী দিনেও তাদের স্বপ্ন সফল হবে না। এটা বিলক্ষণ বুঝতে পেরেছেন প্রদ্যুৎ। তাই তিনি ঘুরিয়ে হলেও রাজ্যের নিষিদ্ধ জঙ্গি গোষ্ঠী এনএলএফটি কড়া বার্তা দিয়েছেন বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
          এদিনের সাংবাদিক বৈঠকে প্রদ্যুৎ কিশোর দেববর্মন ঘোষণা দিয়েছেন আগামী ১২ নভেম্বর রাজধানীর স্বামী বিবেকানন্দ ময়দানে  মথার জনসভা অনুষ্ঠিত হবে। এই জনসভাতে রেকর্ড সংখ্যক লোকের সমাগম হবে বলেও দাবি করেছেন প্রদ্যুৎ।  তবে প্রদ্যুৎ কিশোর তার দলের অনুগামীদের সতর্ক করে দিয়ে বলেন, রাজধানীতে জনসভা করতে হবে শান্তি বজায় রেখে।  মানুষকে কোনো রকম সমস্যা করা যাবে না। সেদিকে লক্ষ্য রেখে হবে শান্তিপূর্ণ পরিস্থিতিতে সমাবেশ করে দলের মূল দাবি উত্থাপন করতে হবে।  তবেই পৌঁছা যাবে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে।
          প্রদ্যুৎ কিশোর বলেন, আগামী পয়লা ডিসেম্বর ২০০০ জনজাতি অংশের লোক জড়ো হবে দিল্লির যন্তর মন্তরে সেখানে তারা ধর্নায় বসবে।রেলে করে দলের নেতা – কর্মী সমর্থকরা দিল্লিতে যাবেন। এদিন  প্রদ্যুৎ কিশোর বলেন, এখন পর্যন্ত কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জোট নিয়ে কোনো কথা হয় নি।তবে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল তার সঙ্গে যোগাযোগ করছে। প্রদ্যুৎ কিশোরের বক্তব্য, যে রাজনৈতিক দল তিপ্রাসাদের স্বার্থে লিখিত চুক্তি করবে তাদের সঙ্গেই জোট করবে। তবে তিপ্রাসাদের সাংবিধানিক সমাধানের মাধ্যমে অধিকার ফিরিয়ে দিতে হবে।
          প্রদ্যুৎ কিশোর সরাসরি বিজেপির নাম না করেই বলেই, ইডি, সিবিআইয়ের ভয় দেখিয়ে ধামকানো চমকানোর চেষ্টা করলে মানুষ ভোট বাক্সে তার উপযুক্ত জবাব দেবে। তাই বিজেপিকে ঘাড়ে বন্দুক (!) রাস্তা থেকে বিরত থাকার জন্য বার্তা দিয়েছেন প্রদ্যুৎ
          তিপ্রামথার প্রধানের দাবি, দেশের কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী রাজ্যের জনজাতিদের জন্য ১৩০০কোটি টাকার প্রকল্পের ঘোষনা দিয়েছে। বিজেপি বলেছে জনজাতিদের স্বার্থে এই টাকা ব্যবহার করা হবে। কিন্তু প্রদ্যুতের বক্তব্য এই টাকা এখনো রাজ্য সরকারের কাছে আসেনি।তাহলে রাজ্য সরকার জনজাতি উন্নয়ন করবো কোথায় থেকে? সবটাই নাকি জুমলা।
          রিয়াং শরণার্থী পুনর্বাসন ইস্যুতে প্রদ্যুৎ কিশোর বলেন, রাজ্য সরকার ইচ্ছাকৃতভাবে সমস্যার সৃষ্টির চেষ্টা করছে। কারণ যে সমস্ত জায়গাতে মানুষের রাবার বাগান রয়েছে, এইসব জায়গাতেই শরণার্থীদের পুনর্বাসন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।স্বাভাবিক কারণেই প্রতিবাদের মুখে পড়তে হয়। কারণ এতদিন যারা রাবার বাগান কেন্দ্র করে অর্থ উপার্জন করে আসছে তাতে ধাক্কা লাগবে। এই কারণেই সরকারের সিদ্ধান্তকে মানুষ মেনে নিতে চাইছে না। অথচ শরণার্থীদের জন্য আরো বেশ কিছু জায়গা দেখানো হয়েছিল। এই জমি শরণার্থীদেরও পছন্দ হয়। তারপরও সরকার ঐ সমস্ত জায়গায় শরণার্থীদের পুনর্বাসন দিতে রাজি হচ্ছে না। আসলে ইচ্ছাকৃত ভাবে ঝামেলা করার জন্য সরকারের এই কারসাজি।
          এডিসির কেলেঙ্কারি নিয়ে বিজেপির সাংসদ রেবতী ত্রিপুরার সমস্ত অভিযোগ খন্ডন করেন প্রদ্যুৎ।তিনি বলেন, রেবতী ত্রিপুরা কিছুই জানেন না। শুধু শুধু মিথ্যা কথা বলছেন। এডিসির সমস্ত কেলেঙ্কারির অভিযোগ নাকি মথার জমানার আগে।
         

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *