ক্রাইম ব্রাঞ্চ তদন্তে নেমে প্রাথমিক ভাবে তিন জনজাতি যুবককে গ্রেফতার করেছে। জিজ্ঞাসাবাদের সময় তারা ১২- জুলাইয়ের ঘটনার বেশ কিছু তথ্য উগলে দিয়েছে।
জনজাতি সম্প্রদায়ের মানুষ অপরাধ সংঘটিত করলেও বিচারের দরবারে তারা “নির্দোষ”। ক্ষতি গ্রস্থ মানুষের প্রশ্ন,তাহলে মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহার প্রশাসন কি নিঃশর্ত আত্মসমর্পণ করেছে গন্ডাছড়ার সাম্প্রদায়িক দুষ্কৃতিদের কাছে?
।।বিজ্ঞাপন।।
ডেস্ক রিপোর্টার, ১৬ সেপ্টেম্বর।। শেষ পর্যন্ত গন্ডাছড়ার ১২- জুলাইয়ের ঘটনার মামলার তদন্ত বর্তেছে রাজ্যের ক্রাইম ব্রাঞ্চের উপর। সম্প্রতি গণ্ডাছড়া থানা থেকে মামলার সমস্ত বিষয় হস্তান্তর করা হয়েছে ক্রাইম ব্রাঞ্চের কাছে। ক্রাইম ব্রাঞ্চ মামলা হাতে পেয়ে নিজেদের মতো করে তথ্য সংগ্রহে নেমেছে।কিন্তু তার মধ্যেও ক্ষণে ক্ষণে বাধা প্রাপ্ত হচ্ছে ক্রাইম ব্রাঞ্চের তদন্তকারী দল। অভিযোগ, ক্রাইম ব্রাঞ্চ হাত খুলে কাজ করতে পারছে না।বারবার তদন্তকারী দলের উপর আসছে নানান চাপ। চাপের মুখে ক্রাইম ব্রাঞ্চও ভ্যাপাচেপা খেয়ে বসে আছে।স্বাভাবিক ভাবেই অনুমেয় গণ্ডাছড়ার বাঙালি মহল্লায় হামলা ,ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ঘটনার তদন্তে বেরিয়ে আসবে অশ্ব ডিম্ব। রাজ্যে এর আগেও এই ধরনের সাম্প্রদায়িক ঘটনার বিচার পায় নি ক্ষতিগ্রস্থ বাঙালি জাতি।
ধলাই জেলার এসপি অবিনাশ কুমারকেও শুনতে হয় কটুক্তি ।
ক্রাইম ব্রাঞ্চ সূত্রের খবর, তারা তদন্তে নেমে প্রাথমিক ভাবে তিন জনজাতি যুবককে গ্রেফতার করেছে। জিজ্ঞাসাবাদে তাদের কাছ থেকে ১২- জুলাইয়ের ঘটনার বেশ কিছু তথ্য সংগ্রহ করেছে।ধৃতদের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, ক্রাইম ব্রাঞ্চ যখন বড় মাথায় হাত দেয়, তখনই বাঁধা প্রাপ্ত হয়।স্থানীয় তিপ্রামথা নেতৃত্ব তাতে তীব্র আপত্তি জানায়।তারা গণ্ডাছড়া থানায় এসে হম্বিতম্বি করে।অভিযোগ, এরপর শুরু হয় যায় দলের প্রথম সারির নেতাদের দৌড়ঝাঁপ। ধলাই জেলার পদস্থ আধিকারিকদের নানান ভাবে হুমকি হুজ্জুতি দেওয়া হয়। ধলাই জেলার এসপি অবিনাশ কুমারকেও শুনতে হয় কটু কথা। কান পাতলেই শোনা যায়, এই ঘটনায় নাকি হস্তক্ষেপ করছেন খোদ গণ্ডাছড়ার বিধায়িকা নন্দিতা রিয়াং।
।।বিজ্ঞাপন।।
তদন্তকারী পুলিশ ১২ জুলাইয়ের ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে স্থানীয় কৃষি দপ্তরের এক কর্মীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছিলো।তখন পুলিশের হাত থেকে তাকে ছাড়িয়ে নিতে গণ্ডাছড়া থানায় একাধিক নেতা – নেত্রী হাজির হন। থানায় বেজে উঠে আগরতলার নেতাদের ফোন।স্বাভাবিক ভাবেই চাপে পড়ে যায় পুলিশ। প্রাথমিক ভাবে নেতাদের অন্যায় আবদার মানতে রাজি হন নি ধলাই জেলার এসপি অবিনাশ কুমার।কিন্তু শেষ পর্যন্ত শাসক জোটের শরিক তিপ্রামথার নেতাদের চাপের মুখে এসপিও নতি স্বীকার করে বিরক্তি প্রকাশ করেন।
স্থানীয় তিপ্রামথার নেতাদের পরিষ্কার বক্তব্য, ১২- জুলাইয়ের ঘটনায় তাদের কাউকে গ্রেফতার করতে পারবে না। নেতা স্তরের কাউকে গ্রেফতার করলে পুনরায় আগুন জ্বলে উঠবে গণ্ডাছড়াতে। পুলিশও তাদের হুমকিতে ভরকে উঠে।এবং অঘোষিত ভাবে তদন্ত থেকে হাত গুটিয়ে নেয়।কারণ তদন্ত মসৃণ ভাবে এগিয়ে নিয়ে যেতে প্রতি মুহূর্তে বাধা প্রাপ্ত হচ্ছে অনুসন্ধানকারী দল।
নেতা স্তরের কাউকে গ্রেফতার করলে পুনরায় আগুন জ্বলে উঠবে গণ্ডাছড়াতে।
এই কারণেই ঘটনার দুই মাস অতিক্রান্ত হলেও অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ঘটনায় জড়িত কোনো বড় মাথাকে গ্রেফতার করতে পারছে না পুলিশ।অথচ পুলিশের বিচারের আশায় শরণার্থী ক্যাম্পে বসে আছে সাম্প্রদায়িক আগুনে নিঃস্ব হয়ে যাওয়া লোকজন। এই ঘটনা থেকে পরিষ্কার অপরাধীদের রুদ্ররোষে জ্বলছে পুলিশও। অর্থাৎ জনজাতি সম্প্রদায়ের মানুষ অপরাধ সংঘটিত করলেও বিচারের দরবারে তারা “নির্দোষ”। ক্ষতি গ্রস্থ মানুষের প্রশ্ন,তাহলে মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহার প্রশাসন কি নিঃশর্ত আত্মসমর্পণ করেছে গন্ডাছড়ার সাম্প্রদায়িক দুষ্কৃতিদের কাছে?