টাকারজলা, জম্পুইজলা, জারুলবাচাইয়ের ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি হতে চলছে গণ্ডাছড়ায়।
১২- জুলাইয়ের গন্ডাছড়া ধ্বংসলীলা (ফাইল ছবি)
গত ১২ জুলাইয়ের ঘটনার পর থেকেই গণ্ডাছড়াতে নিরাপত্তা হীনতায় ভুগছে বাঙালি অংশের মানুষ। প্রশাসন তাদের সঙ্গে করেছে অমানবিক আচরণ। শরণার্থী ক্যাম্পে থাকা লোকজনকে খাওয়ায় বন্ধ করে দিয়ে তাদেরকে জোর করে শিবির ছাড়তে বাধ্য করা হয়েছে।পুলিশ – নিরাপত্তা বাহিনী নিয়ম করে চক্কর কাটেচেত।কিন্তু তারপরও তাদেরকে তাড়া করছে এক অজানা আতঙ্ক।
ডেস্ক রিপোর্টার,২৪ নভেম্বর।। অতীতে জঙ্গি আতঙ্কে রাজ্যের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে বাস্তুচ্যুত হয়েছিলো বাঙালিরা। গণ হারে বাঙালিরা সম্পত্তি ফেলে ঠাঁই নিয়েছিল আগরতলা ও তার আশপাশ অঞ্চলে। এই সময়ে গুলিতে বহু মানুষ উদ্বাস্তু হয়ে জীবনের মূল শ্রোত থেকে নিজেদের হারিয়ে ফেলেছিলো। কত মনুষ উদ্বাস্তু হয়েছিলো? সরকারী তথ্য অনুযায়ী, সংখ্যাটা নেহাত কম নয়।প্রায় দুই লক্ষ। এই সমস্ত বাঙালি আজ কোথায় আছে? প্রশাসনের কাছে কোনো খবর নেই। আগরতলা শহরের সন্নিকটে থাকা টাকারজলা, জম্পুইজলা, জারুলবাচাইয়ে উদ্বাস্তুদের ইতিহাস আজও জ্বলজ্বল করছে।রাজ্যের অন্যান্য প্রান্তের গণ হারে উদ্বাস্তু হয়েছে বাঙালি অংশের মানুষ।বর্তমানে এই দৃশ্য প্রকট হচ্ছে ধলাই জেলার গন্ডাছড়াতে।
রাজ্যে বিভিন্ন সময়ে প্রায় ২লক্ষ সনাতনী বাঙালি হয়েছিল উদ্বাস্তু।
গত ১২ জুলাইয়ের ঘটনার পর থেকেই গণ্ডাছড়াতে নিরাপত্তা হীনতায় ভুগছে বাঙালি অংশের মানুষ। প্রশাসন তাদের সঙ্গে করেছে অমানবিক আচরণ। শরণার্থী ক্যাম্পে থাকা লোকজনকে খাওয়ায় বন্ধ করে দিয়ে তাদেরকে জোর করে শিবির ছাড়তে বাধ্য করা হয়েছে।পুলিশ – নিরাপত্তা বাহিনী নিয়ম করে চক্কর কাটেচেত।কিন্তু তারপরও তাদেরকে তাড়া করছে এক অজানা আতঙ্ক।
বিজ্ঞাপন(ICA/C-2544)
আতঙ্কগ্রস্ত বাঙালিরা এখন আর গণ্ডাছড়ার থাকতে চাইছে না। গণ্ডাছড়া যে তাদের জন্য নিরাপদ নয়,এটা বিলক্ষণ বুঝতে পেরেছেন তারা।তাই বাঙালিরা গনহারে গণ্ডাছড়াতে ছাড়তে শুরু করেছে। বর্তমানে গণ্ডাছড়ার বাঙালি অংশের নব্বই শতাংশ মানুষ নতুন ঠিকানার খোঁজ শুরু করেছে।অর্থনৈতিক ক্ষমতা অনুযায়ী বাঙালি অধ্যুষিত বিভিন্ন স্থানে তারা ক্রয় করছে জমি।নতুন ভাবে গড়ে তুলছে বসতি। নিশ্চিত ভাবে আগামী দিনে গণ্ডাছড়াও হবে “বাঙালি শূন্য”। আর এটাই চাইছিল স্থানীয় জনজাতি অংশের মানুষ।
ভোট পাখিরাও এই ইস্যুতে দেউলিয়া। তারাও হাবে ভাবে বুঝিয়ে দিয়েছে তাদের কাছে বাঙালিদের ভোট নিষ্প্রয়োজন।
রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে বাঙালিরা জঙ্গিদের বন্দুকের নলের মুখে ও জনজাতি অংশের মানুষের সঙ্গবদ্ধ আক্রমণের মুখে বারবার এডিসি অঞ্চল ছেড়ে আশ্রয় নিয়েছিল আগরতলা ও তার আশপাশে। বিভিন্ন ,জেলা মহকুমার বাঙালি অধ্যুষিত অঞ্চল গুলিতে। এই চিত্র এখন গণ্ডাছড়াতে। তাতে অবশ্যই প্রশাসনের কোন ভ্রুক্ষেপ নেই। ভোট পাখিরাও এই ইস্যুতে দেউলিয়া। তারাও হাবে ভাবে বুঝিয়ে দিয়েছে তাদের কাছে বাঙালিদের ভোট নিষ্প্রয়োজন।
।।নিজ ভূমেই বাঙালিরা শরণার্থী।(ফাইল ছবি)
গন্ডাছড়া প্রশাসনের কাছে আজও বাঙালি আজও দ্বিতীয় সারির নাগরিক।
গন্ডাছড়া স্থানীয় লোকজনের বক্তব্য, “পরিস্থিতি এমন এক জায়গায় গিয়ে পৌঁছেছে, যে কোন সময় নানান ইস্যু কেন্দ্র করে বাঙালিদের উপর ফের হামলা করতে পারে জনজাতি অংশের মানুষ।তাছাড়া গোটা গণ্ডাছড়াতে বাঙালি সম্প্রদায়ের লোকজন এখন দ্বিতীয় সারির নাগরিক। তাদের উপর কোনো অত্যাচার হলে প্রশাসন থাকে নিশ্চুপ। থানা – পুলিশে মামলা করেও তারা পায় না বিচার।
।।বিজ্ঞাপন।।
গণ্ডাছড়ায় কোথায় আছে বাঙালির নিরাপত্তা? কোথায় আছে সাংবিধানিক ইজ্জত – সন্মান?
গত ১২ জুলাইয়ের ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ এখন পর্যন্ত জনজাতি সম্প্রদায়ের কোনো লোকজনকে গ্রেফতার করার দুঃসাহস দেখাতে পারে নি।তাহলে গণ্ডাছড়ায় কোথায় আছে বাঙালির নিরাপত্তা? কোথায় আছে সাংবিধানিক ইজ্জত – সন্মান? আসলে এই রাজ্যে কালে কালে বাঙালি হারিয়েছে তার সম্ভ্রম। আজও তা বহাল। হালে এই দৃষ্টান্ত স্থাপন করলো খোদ “গণ্ডাছড়া”।