প্রাক্তন পঞ্চায়েত প্রধানের পোস্ট থেকে পরিষ্কার স্থানীয় বিজেপির নেতাদের যোগসাজশেই বেআইনি ভাবেই চলছে পুকুর ভরাট।
।।এই সেই বিতর্কিত পুকুর।।
সম্প্রতি রাতের আধারে পুকুর ভরাটের সময় শিবির টিলা এলাকার স্থানীয় লোকজন তাতে বাধা প্রদান করে। তারা সঙ্গবদ্ধ ভাবে মাটির ট্রাক ফিরিয়ে দেয়। অভিযোগ, এরপরই মাঠে নামে উত্তম বাহিনী ও এলাকার দাগী সমাজদ্রোহী মন্টি ওরফে বিপ্লব বাহিনী। অতীতের দাগি চোর মন্টি ওরফে বিপ্লব নাকি এখন বেলাবর পঞ্চায়েতের প্রধানের চেয়ার শোভাবর্ধন করে থাকেন।
ডেস্ক রিপোর্টার,১৪ নভেম্বর।। শাসক দলের দুই পঞ্চায়েত সদস্যের বেআইনি ভাবে পুকুর ভরাট কেন্দ্র করে তপ্ত বাধারঘাট বিধানসভার(Badharghat constituency) চারিপাড়া এলাকা। পরিস্থিতি এমন জায়গাতে পৌঁছেছে, যেকোনো সময় ঝরতে পারে রক্ত। কিন্তু হুশ নেই বাধারঘাটের বিধায়িকা মিনা সরকারের(MLA Mina Sarkar) গোটা ঘটনার নেপথ্যে রয়েছে দুই জমি দস্যু তথা বেলাবর পঞ্চায়েতের(Belabar GP) দুই সদস্য বনমালী দত্ত ও তপন কুমার দত্ত। স্থানীয় লোকজন পুকুর ভরাটে বাধা দিতেই দুই পঞ্চায়েত সদস্য মাঠে নামেন। প্রতিবাদী মানুষকে দেন হুমকি – হুজ্জুতি। এলাকার তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যে ঘী ঢেলে দিয়েছেন খোদ বেলাবর পঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধান কিঙ্কর মন্ডল।
কিঙ্কর তার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি পোস্ট করে বলেন, ” এলাকার কোন এক নেতার মদতে রাতের অন্ধকারে সরকার অনুমতিবিহীন পুকুর ভরাট করা হচ্ছে। মানুষ জানতে চায় এই নেতার নাম।” অর্থাৎ জমি দস্যু দুই পঞ্চায়েত সদস্যের পেছনে রয়েছেন আরো এক নেতা।যিনি তাদের উপদেষ্টা। তিনি কে? কিঙ্কর মন্ডলের পোস্ট থেকে পরিষ্কার স্থানীয় বিজেপির নেতাদের যোগসাজশেই বেআইনি ভাবেই চলছে পুকুর ভরাট।
পুকুর ও আশপাশ মিলিয়ে মোট জমির পরিমাণ এক কানি চার গন্ডা।
।।পুকুর ও জমির পর্চা।।
খবর অনুযায়ী, গত বছর দেড়েক আগে দুই পঞ্চায়েত সদস্য বনমালী দত্ত ও তপন কুমার দত্ত যৌথভাবে চারিপাড়া এলাকায় একটি পুকুর ক্রয় করেছিলেন। পুকুর ও আশপাশ মিলিয়ে মোট জমির পরিমাণ এক কানি চার গন্ডা। এই পুকুরটি এলাকার মানুষ দীর্ঘ বছর ধরে ব্যবহার করে আসছিলেন। ক্রয়ের পর বনমালী-তপনরা পুকুরটি ভরাট করার উদ্যোগ নিয়েছিল। কিন্তু ২৩- র বিধানসভা নির্বাচন দোরগোড়ায় থাকায় ঝামেলা এড়ানোর জন্য জমি দস্যুরা পুকুর ভরাট করার সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছিলো। তাদের মূল উদ্দেশ্য ছিল পুকুরটিকে ভরাট করে প্লট আকারে চড়া দামে বিক্রি করা।
এলাকার বিজেপির কর্মীদের বক্তব্য, সম্প্রতি বনমালী ও তপন পুকুর ভরাট করার সিদ্ধান্ত নেয়। তারা এই বিষয়ে শলা পরামর্শ করেন স্থানীয় নেতা তথা জিলা পরিষদের সদস্য উত্তম দাস ও বেলাবর পঞ্চায়েত প্রধান মন্টি ওরফে বিপ্লব মজুমদারের সঙ্গে। অভিযোগ, উত্তম – মন্টির অভয় পেয়েই নাকি রাতের আধারে পুকুর ভরাটের কাজ শুরু করেছে দুই পঞ্চায়েত সদস্য বনমালী ও তপন।
।।জমি দস্যু বনমালী দত্ত ও তপন দত্ত।।
সম্প্রতি রাতের আধারে পুকুর ভরাটের সময় শিবির টিলা এলাকার স্থানীয় লোকজন তাতে বাধা প্রদান করে। তারা সঙ্গবদ্ধ ভাবে মাটির ট্রাক ফিরিয়ে দেয়। পুকুরে মাটি ফেলার ঠিকা নিয়েছেন স্থানীয় এক পঞ্চায়েত সদস্যা স্বামী গোপেশ রায়।
।।পুকুর বুজানোর ঠিকাদার গোপেশ রায়।।
প্রতিবাদী লোকজনকে দুষ্কৃতীরা নাকি জনিয়ে দেয়, ” স্থানীয় বিধায়িকা মিনা সরকারের জ্ঞাত সারেই পুকুর ভরাট করার কাজ চলছে।
অভিযোগ, এরপরই মাঠে নামে উত্তম বাহিনী ও এলাকার দাগী সমাজদ্রোহী তথা প্রধান মন্টি ওরফে বিপ্লব বাহিনী। স্বাভাবিক ভাবেই উত্তম ও মন্টি বাহিনী তাদের রাজনৈতিক শক্তির দাপট দেখিয়ে প্রতিবাদী লোকজনকে পাল্টা আক্রমন করে। প্রতিবাদী লোকজনকে দুষ্কৃতীরা নাকি জনিয়ে দেয়, ” স্থানীয় বিধায়িকা মিনা সরকারের জ্ঞাত সারেই পুকুর ভরাট করার কাজ চলছে। এরপর স্থানীয় লোকজন পিছু হটে।
।পঞ্চায়েত প্রধান মন্টি ওরফে বিপ্লব মজুমদার।(রেড মার্কিং করা)
এই বিষয়ে জিলা পরিষদের সদস্য উত্তম দাস জানিয়েছেন, ” তিনি এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত নন। স্ব-দলীয়রা ষড়যন্ত্র করে তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার করছে। উত্তমের কথায়,তিনি দলের শীর্ষ নেতৃত্বের নির্দেশের সাংগঠনিক কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকেন।” অবশ্যই দুই পঞ্চায়েত সদস্য বনমালী দত্ত ও তপন দত্তের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায় নি।
উত্তম দাস (জিলা পরিষদের সদস্য)
প্রয়াত দাদার সাজানো রাজনীতির বাগানে মিনা সরকারের নিযুক্ত মালিরাই মিনা ঠেলে দেবে রাজনীতির অন্ধকূপে!
।।বিজ্ঞাপন।।
পরবর্তী সময়ে স্থানীয় লোকজন গিয়েছিলেন ডুকলি ব্লকের ডিসিএম- র কাছে। এবং আমতলী থানায়।দুই জায়গাতেই তারা নালিশ জানায়। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয় নি। জমি দস্যুরা নিয়মিত ভাবে বুক ফুলিয়ে মাটি ফেলে পুকুর ভরাটের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। তাহলে তো বলতেই হয়, এই ঘটনা সম্পর্কে কি ওয়াকিবহল নন বিধায়িকা মিনা সরকার? স্থানীয় বিজেপির কর্মীদের বক্তব্য, প্রয়াত দাদার সাজানো রাজনীতির বাগানে মিনা সরকার যে সমস্ত মালিদের নিযুক্ত করেছেন, তারাই মিনা ঠেলে দেবে রাজনীতির অন্ধকূপে। সেই দিন বেশী দূর নেই।