” আমরাও জবাব দেবো। তবে ফেসবুক বা টুইটারে নয়।একেবারে ঘরের দরজার সামনে।” ঠিক, ঘুর পথে প্রদ্যুৎ তার বক্তব্যের বাস্তবায়ন করেছে গণ্ডাছড়াতে।বলছেন, রাজনীতিকরা।

।।জতুগৃহ গণ্ডাছড়া।।(ছবি – নিজস্ব)

“ইতিহাস ঘাটলে এই তিন রাজনৈতিক দলের জনজাতি তোষণের হাজারো দৃষ্টান্ত খুঁজে পাওয়া যায় পাতায় পাতায়।”

ডেস্ক রিপোর্টার,আগরতলা।।
      বিজেপি – সিপিআইএম ও কংগ্রেস। রাজ্য রাজনীতির তিন জাতীয় রাজনৈতিক দল। তারা একই বৃন্তের তিনটি ফুল। অর্থাৎ তাদের অবস্থান রসুনের কোয়ার মতো। তিনটি জাতীয় রাজনৈতিক দলই কালে কালে ব্যস্ত ছিলো জনজাতি তোষণের রাজনীতিতে। তাদের নজরে বাঙালিরা ছিলো সেকেন্ড ক্লাস নাগরিক।ইতিহাস ঘাটলে এই তিন রাজনৈতিক দলের জনজাতি তোষণের হাজারো দৃষ্টান্ত খুঁজে পাওয়া যায় পাতায় পাতায়। তাতে অবশ্যই দোষের কিছু নেই।ভোট ব্যাংকের জন্য রাজনৈতিক দল গুলি নির্লজ্জের মত তাদের সর্বস্ব বিসর্জন দিতে পারে। আর নেতারা রক্ত পিপাসু ভেম্পায়ার থেকে মারাত্বক, দূর্ত হয়ে উঠতে পারে। এটাই রাজনীতি।

Table of Contents



রাজনীতির ইতিহাস বলছে, রাজ্যে দুই দফায় বামেরা  ৩৫ বছর রাজত্ব করেছে। এই সময়ের মধ্যে সংঘটিত হয়েছে ১৯৮০- র জুনের ভ্রাতৃঘাতী দাঙ্গা। রক্ত ঝরছে বাঙালির। ক্ষতি হয়েছে জনজাতিদেরও। কিন্তু সিংহভাগ ক্ষতি হয়েছে বাঙালিদেরই। তাই আজ পর্যন্ত বাঙালিরা তার কোনো বিচার পায় নি । বাম জামানায় কাঞ্চনপুর থেকে অমরেন্দ্র নগর।কল্যাণপুর থেকে অমরপুর।একের পর এক গণহত্য সংঘটিত হয়েছে বামেদের স্বর্ণযুগে। জনজাতি উগ্রবাদীরা স্নান করেছে বাঙালির রক্তে ।কিন্তু কি হয়েছে?

।।৮০- তে মান্দাই গণ হত্যা।।(ফাইল ছবি)

কমিউনিষ্ট মুখ্যমন্ত্রী নৃপেণ চক্রবর্তী থেকে দশরথ দেব।সর্বপরি মানিক সরকার বাঙালিদের কোনো বিচার পাইয়ে দিতে পারেন নি।বরং বাঙালিদের কোণঠাসা করে জনজাতিদের তোষণ করেছেন।এবং জনজাতিদের স্বার্থ সুরক্ষিত রাখার জন্য গঠন করেছিল এডিসি।  বামেদের জনজাতি তোষণ এতটাই ছিলো, তারা পাহাড়ের কুড়িটি আসনে নিশ্চিত জয় ধরেই প্রতিটি বিধানসভায় অঙ্ক কষতো। অথচ ১৮ ও ২৩- র বিধানসভা নির্বাচনে বামেদের ফুটবলের মতো লাথি দিয়ে পাহাড় থেকে সরিয়ে দেয়। বাঙালিরাই বামেদের ইজ্জত বাঁচিয়েছে।

।।প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার।।

তারপরও বামেদের জনজাতি প্রীতি একটুও কমে নি। বাঙালিদের জন্য কাঁদেনি তাদের প্রাণ।গন্ডাছড়ার ঘটনার পর তার প্রমাণ দিয়েছেন খোদ প্রাক্তন কমিউনিষ্ট মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার। , গণ্ডাছড়ার ঘটনা প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে মানিক সরকার তার মুখে আক্রান্ত বাঙালিদের নাম নিতেও লজ্জা বোধ করেছেন সংবাদিকদের কাছে।ছি: ছি। তিনিও আবার বাঙালি। বাংলা তার মাতৃভাষা।

।।বিজ্ঞাপণ।।

** দীর্ঘ দিন রাজ্যের বিরোধী শিবিরে থাকা কংগ্রেস নেতা সুদীপ রায় বর্মনের গলায়ও জনজাতি দরদ ভেসে উঠেছে মাঝে মাঝেই।জনজাতি ভোট পেতে কংগ্রেস দাবি করে, তারাই নাকি জনজাতিদের এডিসি দিয়েছে।**

।।কংগ্রেস বিধায়ক সুদীপ রায় বর্মন।।

আরো খবর পড়ুন।

https://janatarmashal.com/tripura-news-bjp-leadership-in-the-face-of-public-fire-in-gandachhara-district-governor-failed-to-assure-security-dhalai-gandachhara-riot-janatar-mashal/

দীর্ঘ দিন রাজ্যের বিরোধী শিবিরে থাকা কংগ্রেস নেতা সুদীপ রায় বর্মনের গলায়ও জনজাতি দরদ ভেসে উঠেছে মাঝে মাঝেই।জনজাতি ভোট পেতে কংগ্রেস দাবি করে, তারাই নাকি জনজাতিদের এডিসি দিয়েছে। তবে এই তথ্য একেবারেই সঠিক।
      রাজনীতিকরা বলছেন, রাজ্যের বাঙালিদের বোকা বানিয়ে দেশের তৎকালীন  প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী ও তদানীন্তন মুখ্যমন্ত্রী নৃপেণ চক্রবর্তীর গোপন সমঝোতার রসায়নেই জনজাতিদের কপালে জুটেছে এডিসি। তৎকালীন বাম সরকারের মুখ্যমন্ত্রী নৃপেণ চক্রবর্তী জনজাতিদের  এডিসির জন্য বিধানসভায় বিল পাস করিয়েছিলেন।

।।বিজ্ঞাপণ।।

এরপর এই বিল পাঠিয়ে দেন কেন্দ্রের কাছে। প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরার নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় কংগ্রেস সরকারও লোকসভায় এই বিল পাস করিয়ে নেয়। তৎকালীন  রাজ্যের সিপিএম সাংসদ অজয় বিশ্বাস  নাটক মঞ্চস্থ করে  এডিসির বিরোধিতা করে লোকসভা থেকে ওয়াক আউট করেছিলেন। এটা ছিল কংগ্রেস – সিপিআইএমের আগাম স্ক্রিপ্ট করা নাটক ।এই চিত্রনাট্য থেকে পরিষ্কার কংগ্রেস-সিপিএম উভয় রাজনৈতিক দল কিভাবে বাঙালিদের বোকা বানিয়ে জনজাতিদের এডিসি উপহার দিয়েছিল?

।।ইন্দিরা গান্ধী ও নৃপেণ চক্রবর্তী।।

প্রকৃতপক্ষে ১৯৮২ সালের ১৫ ই জানুয়ারীতে এডিসি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল এবং নির্বাচিত সদস্যরা ১৯৮২ সালের ১৮ জানুয়ারীতে শপথ গ্রহণ করেছিলেন। পরবর্তীকালে, এটি ভারতীয় সংবিধানের ৬ষ্ঠ তফসিলের বিধানের অধীনে ৪৯ তম সংবিধান (সংশোধন) আইন, ১৯৮৪ দ্বারা আপগ্রেড করা হয়েছিল। ১৯৮৫ সালের ১ এপ্রিল থেকে কার্যকর।


।।কাউন্সিল ভবন।।

২০১৮- সালে জনজাতি তোষণের মাষ্টার ব্লাস্টার রাজনৈতিক দল সিপিআইএমকে নাস্তানাবুদ করে ক্ষমতায় এসেছিল বিজেপি। তারা প্রথমে ধোঁয়া দিয়েছিলো প্রয়াত এনসি  দেববর্মার আইপিএফটিকে। ভোটের পর বিজেপি নেতৃত্ব বিলক্ষণ বুঝতে পেরেছিলেন,আইপিএফপিকে দিয়ে পাহাড়ে বামেদের কোণঠাসা করা যাবে না।তখনই তারা আইপিএফটির বিকল্প হিসাবে প্রদ্যুৎ কিশোরকে টার্গেট করে।এবং বিজেপি নেতৃত্বের নির্দেশেই প্রদ্যুৎ কিশোর কংগ্রেস থেকে বেরিয়ে তিপ্রামথা গঠন করেন। লোকসভা নির্বাচনের প্রচারে গিয়ে প্রকাশ্যে এই তথ্য ফাঁস করেছিলেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা সাংসদ বিপ্লব কুমার দেব।
     

।।প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব।।

বিজেপি  প্রথমে ধোঁয়া দিয়েছিলো প্রয়াত এনসি  দেববর্মার আইপিএফটিকে।তারপর তারা প্রদ্যুৎ কিশোরের সঙ্গে আলোচনা করে তুলে ধরে তিপ্রামথাকে।

রাজ্যের অসহায় বাঙালি (ফাইল ছবি)

বাঙালি সমাজের কথায়, এই মুহুর্তে প্রদ্যুৎ কিশোর দেববর্মণ-ই বাঙালি নিধনের মাষ্টার মাইন্ড। প্রদ্যুৎ বরাবর বাঙালি বিদ্বেষী বক্তব্য রাখেন। এরকম বহু দৃষ্টান্ত রয়েছে। অভিযোগ, মূলত তার বক্তব্যের রেশ ধরেই পাহাড়ে আক্রমণ শুরু হয় বাঙালিদের উপর ।গন্ডাছড়ার ঘটনার পর প্রদ্যুৎ কিশোর গিয়েছিলেন নিহত পরমেশ্বর রিয়াংয়ের বাড়িতে।করেছেন আর্থিক সাহায্য।নিঃসন্দেহে এটা ভালো উদ্যোগ।কিন্তু প্রদ্যুৎ যান নি জনজাতি দুষ্কৃতীদের দেওয়া আগুনে নিঃস্ব হওয়া অসহায় বাঙালি পরিবারগুলির কাছে।

।।প্রদ্যুৎ কিশোর।।

প্রদ্যুৎ বুঝিয়ে দিয়েছে,তিনি কত বড় সাম্প্রদায়িক নেতা?

গত কয়েকমাস আগে প্রদ্যুৎ তার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বলেছিলেন, ” আমরাও জবাব দেবো। তবে ফেসবুক বা টুইটারে নয়।একেবারে ঘরের দরজার সামনে।” ঠিক, ঘুর পথে প্রদ্যুৎ তার বক্তব্যের বাস্তবায়ন করেছে গণ্ডাছড়াতে।বলছেন, রাজনীতিকরা।
     

গন্ডাছড়ায় হিংসার রক্তিম আকাশ (ছবি – নিজস্ব)


অভিযোগ, গন্ডাছড়াতে পুলিশের সামনেই একের পর এক বাঙালি বাড়িঘরে জনজাতিরা অগ্নিসংযোগ ,লুটপাট, ভাঙচুর করেছিল। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী ডা : মানিক সাহার পুলিশ সব তাড়িয়ে তাড়িয়ে উপভোগ করেছিল।জনজাতি দুষ্কৃতিদের রুখতে একটি বুলেটও শুন্যে ছড়ার সাহস করেনি তারা। কেন? ১২ জুলাইয়ের ঘটনার পর জনজাতি দুষ্কৃতিদের কেন আজ পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়নি?এই প্রশ্নের উত্তর কি দিতে পারবেন রাজ্যের নিষ্কলুষ মুখ্যমন্ত্রী তথা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ডা: মানিক সাহা?

।।বিজ্ঞাপণ।।

জনজাতি নেতা শ্যামা চারণ ত্রিপুরা থেকে শুরু করে এনসি দেববর্মা। এবং হালের প্রদ্যুৎ কিশোরকে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করেছে। এবং করেছে ক্ষমতা প্রদান।নিজেদের স্বার্থ উদ্ধার করতে গিয়ে তারা ৭০ শতাংশ  বাঙালিদের ঠেলে দেয় অন্ধ কুড়ের দিকে। কংগ্রেস , সিপিএম বিজেপি কখনো বৃহৎ জনগোষ্ঠীর বাঙালিদের স্বার্থ চিন্তা করেনি।

।।বিজ্ঞাপণ।।

আরো খবর পড়ুন

Pinterest : https://pin.it/31bhi2Ixh

অথচ প্রতিটি দলের মুখিয়া ছিলেন বাঙালি। তারা জাতি থেকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন দল ও নিজেদের স্বার্থকে। কিন্তু প্রদ্যুৎ হাঁটছেন উল্টো পথে।কাজ করছেন জাতির জন্য। রাজ্যের সর্ব বৃহৎ ভোট ব্যাংকের মালিক বাঙালিরা এখনো বুঝতেই পারছে না, তাদের কাছের রাজনৈতিক দল কোনটি?এখনো করছে সন্ধান। আর ধান্দাবাজ রাজনৈতিক নেতারা কালে কালেই লুট করছেন বাঙালির ভাবাবেগকে।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনি কি মিস করেছেন