সীমান্তের ওপারে বসবাসকারী সনাতনী বাঙালিদের সঙ্গে এপারের বাঙালিদের নাড়ির টান রয়েছে। তারপরও তাদের দুঃসময়ে পাশে দাঁড়াতে পারেনি এবারের সনাতনী বাঙালি সমাজ।
চট্টগ্রামে জলসা জনজাতিদের বাড়িঘর। ( ছবি – সংগৃহীত)
বাংলাদেশের চট্টগ্রামে বসবাসকারী জনজাতিদের উপর সেই দেশের সেনাবাহিনী ও ইসলামিক জঙ্গীরা হামলা করেছে ।হত্যা করেছে নিরীহ জনজাতিদের । এই ঘটনা নিঃসন্দেহে দুঃখের। তাই ঘটনার প্রতিবাদে এপাড়ের জনজাতি সম্প্রদায়ের মানুষ কোমর কেচে আন্দোলনের ময়দানে নেমেছে। অবশ্যই তাদের এই আন্দোলন প্রশংসার যোগ্য রাখে ।
সনাতনী বাঙালি আন্দোলনের কথা মুখে আনতেই যেন ভীত স্বতন্ত্রস্ত হয়ে উঠে!
ডেস্ক রিপোর্টার, ২৩ সেপ্টেম্বর।। রাজ্যের জনজাতিরা পেরেছেন। ব্যর্থ হয়েছেন এই রাজ্যের সনাতনী বাঙালিরা।” একতা” শব্দটি কি ? এই রাজ্যের সনাতনীদের কষাঘাত করে বুঝিয়ে দিয়েছে জনজাতি সম্প্রদায়ের মানুষ। গত এক মাস ধরে বাংলাদেশের অস্থির পরিস্থিতিতে ওপারের একের পর এক সনাতনী বাঙালিদের বাড়িঘরে হামলা, অগ্নিসংযোগ, লুটপাট, খুন, অপহরণ ও ধর্ষণের মতো নেক্কারজনক ঘটনা সংঘটিত করেছিল ইসলামী জিহাদীরা। এই সমস্ত চলমান ঘটনা নিয়ে রাজ্যের সনাতনী বাঙালিদের শিরা ধমনীতে কোনরকম রক্তচাপ ওঠেনি। তারা স্বাভাবিক ছন্দে ব্যস্ত নিজেদের ভোগ বিলাস নিয়ে। একটি বাঙালি সংগঠনও বাংলাদেশের হিন্দু নির্যাতনের ঘটনা নিয়ে রাজপথে কোন মিছিল বা সভা করেনি। তবে সনাতনী বাঙালি সমাজ নামে একটি সংগঠন আন্দোলন করার উদ্যোগ নিয়েছিল। কিন্তু সেই আন্দোলন ভেস্তে দিয়েছিল পশ্চিম জেলা পুলিশ প্রশাসন। তারপরও রাজ্যের সনাতনী বাঙালিরা একত্রিত হয়ে কোনরকম আন্দোলন প্রদর্শন করার দুঃসাহস দেখাতে পারি নি। শনিবার দিনভর রাজপথে এটাই করে দেখালেন রাজ্যের জনজাতি সম্প্রদায়ের মানুষজন।
বাংলাদেশের চট্টগ্রামে বসবাসকারী জনজাতিদের উপর সেই দেশের সেনাবাহিনী ও ইসলামিক জঙ্গীরা হামলা করেছে ।হত্যা করেছে নিরীহ জনজাতিদের । এই ঘটনা নিঃসন্দেহে দুঃখের। তাই ঘটনার প্রতিবাদে এপাড়ের জনজাতি সম্প্রদায়ের মানুষ কোমর কেচে আন্দোলনের ময়দানে নেমেছে। অবশ্যই তাদের এই আন্দোলন প্রশংসার যোগ্য রাখে । একই সঙ্গে তাদের একতা অর্থাৎ তাদের ভাষায় থানসার আবারো চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে।
।।বিজ্ঞাপন।।
বর্তমানে রাজ্যের মানদন্ড রয়েছে একটি হিন্দুবাদী রাজনৈতিক দলের হাতে। এই দলের দন্ডমুন্ডের কর্তাদের সিংহভাগ সনাতনী বাঙালি সম্প্রদায়ের। রাজ্যের বসবাসকারী ৭০ শতাংশ মানুষ সনাতনী বাঙালি ।সীমান্তের ওপারে বসবাসকারী সনাতনী বাঙালিদের সঙ্গে এপারের বাঙালিদের নাড়ির টান রয়েছে। তারপরও তাদের দুঃসময়ে পাশে দাঁড়াতে পারেনি এবারের সনাতনী বাঙালি সমাজ। তারা আন্দোলনের কথা মুখে আনতেই যেন ভীত স্বতন্ত্রস্ত হয়ে উঠে। “একতা” বলতে কিছুই নেই। এই কারণেই রাজ্যে বিভিন্ন সময় সাম্প্রদায়িক দুষ্কৃতীদের হাতে সনাতনী বাঙালিরা নিপীড়িত হওয়ার পরও কোন সুবিচার পায়নি আজ পর্যন্ত। আগামী দিনেও তারা যে সুবিচার পাবে না এটা হলফ করে বলা যায়।
রাজনৈতিক দল তিপ্রামথার ফাউন্ডার প্রদ্যুৎ কিশোর দেববর্মন রাতে তার ফেসবুক লাইভে এসে বাংলাদেশ সরকারকে কড়া ভাষায় সমালোচনা করেছেন।
সীমান্তের ওপারে জনজাতিরা আক্রান্ত হওয়ার পর রাজ্যের জনজাতি ভিত্তিক প্রধান রাজনৈতিক দল তিপ্রামথার ফাউন্ডার প্রদ্যুৎ কিশোর দেববর্মন রাতে তার ফেসবুক লাইভে এসে বাংলাদেশ সরকারকে কড়া ভাষায় সমালোচনা করেছেন। তিনি বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী কালীন সরকারের কাছে সেই দেশের জনজাতি সম্প্রদায়ের মানুষের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন। প্রদ্যুৎ কিশোর প্রতিটি ক্ষেত্রে রাজনীতির উর্ধ্বে উঠে তাঁর জাতির জন্য ব্যাটন ধরেছেন। আজকের দিনেও প্রদ্যুৎ প্রমাণ করলেন তাঁর কাছে জাতি প্রথম। দল অনেক পরে। অথচ এই রাজ্যের তিন জাতীয় রাজনৈতিক দলের প্রধানরা সনাতনী বাঙালি। কিন্তু তারা ভুলেও বাংলাদেশে হিন্দু নির্যাতনের ঘটনা নিয়ে একটি শব্দ ব্যয় করেননি। এ রাজ্যের তিনটি জাতীয় রাজনৈতিক দলের প্রথম সারির নেতারা ব্যস্ত আছেন নিজেদের চেয়ার ধরে রাখতে। তাদের কাছে ব্যক্তিগত স্বার্থই প্রাধান্য পেয়ে থাকে বারবার। জাতির কথা মুখেও আনেন না তারা। আর যদি কশ্মিন কালে তারা জাতির কথা মুখে আনেন, তাহলে বুঝতে হবে গোটা চিত্রনাট্যের পেছনে রয়েছে তাদের ব্যক্তিগত কায়েমী স্বার্থ।
এই রাজ্যের তথাকথিত সনাতনী বুদ্ধিজীবীরাও বাংলাদেশের হিন্দু নির্যাতনের ঘটনা নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটে রেখেছেন ।
শুধু রাজনৈতিক নেতারা নয় , এই রাজ্যের তথাকথিত বুদ্ধিজীবীরাও বাংলাদেশের হিন্দু নির্যাতনের ঘটনা নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটে রেখেছেন । আজও তাদের একই অবস্থা। অথচ জনজাতি সম্প্রদায়ের রাজনৈতিক নেতা ও বুদ্ধিজীবীরা বুঝিয়ে দিয়েছেন তারা জাতির জন্য প্রাণ উৎসর্গ করতে পারেন ।তাদের কাছে ব্যক্তি স্বার্থ মূল্যহীন। অন্তত শনিবারের রাজপথের আন্দোলনের চিত্র তারই আভাস দিয়েছে। বাস্তব অর্থে এই রাজ্যের সনাতনী বাঙালি জাতি নিজেদের কায়েমী স্বার্থ ও ল্যাং মারামারিতে এতটাই ব্যস্ত, যে সনাতনী বাঙালি জাতি দিন দিন উচ্ছন্নে গেলেও তাতে তাদের কিছু আসে যায় না। তারা আছে বিন্দাস।