ডেস্ক রিপোর্টার, ১১ফেব্রুয়ারি।।
     রাজ্য পুলিশে বরাবর ডিরেক্ট  আইপিএস অফিসাররা একটা বড় ভূমিকা পালন করে থাকেন। রাজ্য পুলিশে বিভিন্ন সময়ে বাঘা বাঘা আইপিএস অফিসাররা সাফল্যের সঙ্গে কাজও করেছেন। জঙ্গিপনা থেকে মাফিয়া দমনের ক্ষেত্রে তাদের ভূমিকা অনস্বীকার্য। কিন্তু বর্তমানে রাজ্য পুলিশের কয়েকজন আইপিএস তাদের কর্ম ক্ষেত্রে অনেকটাই ব্যর্থ। তাদের ব্যর্থতার কারণে মাথা চাড়া দিচ্ছে অপরাধ জগতের কুশীলবরা। কোথায়ও যেন তাদের তাড়া করছে “ভয়”। এই কারণেই অপরাধীদের আইনী “ভ্যাট” দিয়ে চলছেন আইপিএস’রা। তারই প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে পশ্চিম জেলা থেকে গোমতী ও খোয়াই জেলায়। সংশ্লিষ্ট জেলায় কর্মরত আইপিএসরা কিভাবে ব্যর্থ?” জনতার মশাল”র এই স্পেশাল রিপোর্টে  তুলে ধরা হবে আইপিএসদের ব্যর্থতার উপাখ্যান।

*আইপিএস কিরণ কুমার:
________________________

পশ্চিম জেলার পুলিশ সুপারের দায়িত্ব রয়েছেন আইপিএস কিরণ কুমার। কিরণ কুমার জেলার এসপি’র দায়িত্ত্ব পেয়ে মাদক বাণিজ্যে কোনো লাগাম টানতে পারেন নি। গোটা জেলায় চষে বেড়াচ্ছে মাদক কারবারীরা। অভিযোগ, পশ্চিম জেলার বেশ কয়েকজন পুলিশ আধিকারিক মাদক কারবারের মাষ্টার মাইন্ডদের সঙ্গে বৈঠক করে সংগ্রহ করেছে মোটা অঙ্কের তোলা। কোথায় আছেন কিরণ কুমার? তিনি কিছুই কি জানেন না।
          কিরন কুমারের সময় কালে আগরতলা আদাতল চত্বরে খুন হয়েছিলেন একজন নিরীহ মুহুরী।নাম অমিত আচার্য। এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত আদালতের কয়েকজন আইনজীবী। কিরণ কুমারের নেতৃত্বাধীন পুলিশ বহু দিন অভিযুক্তদের স্পর্শই করে নি। শেষ পর্যন্ত সংবাদ মাধ্যমের টানা খবরের কারণে পুলিশ ধাপে ধাপে দুই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে। কিন্তু তারা ভুয়ো আইনজীবী(!) এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্যান্য রাঘব বোয়াল আইনজীবীদের পুলিশ আতশ কাঁচ দিয়েও খোঁজে পায় নি। অভিযোগ, গোপন সমঝোতার কারণে পুলিশ বাদবাকি অভিযুক্তদের এখনোও ছাড় দিয়ে রেখেছে। এটা কি আইপিএস কিরণ কুমারের ব্যর্থতা নয়? মুহুরী অমিত আচার্য হত্যাকাণ্ড এখন ক্লোজ চাপ্টারে পরিণত হয়ে গিয়েছে। এই চাঞ্চল্যকর একটা খুনের মামলায় পুলিশ সুপার কিরণ কুমার কি ভূমিকা পালন করেছে? তিনি নিজেই হয় তো এই প্রশ্নের উত্তর দিতে পারবেন না।


সম্প্রতি আমতলীর প্রাক্তন এসডিপিও প্রসূন কান্তি ত্রিপুরা সিভিল ড্রেসে সাধারণ লোকজনকে অনৈতিক ভাবে মারধর করেছেন। নিয়ম অনুযায়ী, একজন পুলিশ অফিসারের ক্ষেত্রে এই ধরনের ঘটনা সংঘটিত করা বেমানান। খোদ এসপি কিরণ কুমারের সামনেই  ডিএসপি প্রসূন কান্তি ত্রিপুরা নিরীহ লোকজনকে ধমকিয়ে চমকিয়ে ব্যতি ব্যস্ত করে তুলেছিলেন। এসপির মুখে ছিলো কুলুপ।প্রসূন কান্তি ত্রিপুরা কেন এরকম কাজ করলেন?


প্রসূনের কাছ থেকে এই প্রশ্নের উত্তর জানতে চেয়েছেন কি পুলিশ সুপার কিরণ কুমার। শেষ পর্যন্ত নির্যাতিত মানুষের চাপের মুখে কিরণ কুমার এসডিপিও প্রসূন কান্তি ত্রিপুরাকে শাস্তি মূলক বদলি করিয়ে দিয়েছেন। অথচ এসপি প্রসূন কান্তি ত্রিপুরাকে কোনো ধরনের শোকজ লেটারও দেন নি। বলা যায়, এক্ষেত্রেও চূড়ান্ত ব্যর্থ আইপিএস কিরণ কুমার। এবং ডিএসপি প্রসূন কান্তি ত্রিপুরার অপরাধকে ছাই চাপা দিতে কার্য্যকরী ভুমিকা পালন করেছেন কিরণ কুমার।


*আইপিএস নমিত পাঠক:
______________________

                  গোমতী জেলার পুলিশ সুপারের দায়িত্বে আছেন আইপিএস নমিত পাঠক।সম্প্রতি তিপ্রামথার বিজিত প্রার্থী বীর লাল নোয়াতিয়া গর্জি প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ঝামেলা পাকিয়ে ছিলো। মারধোর করেছিলো কর্তব্যরত চিকিৎসক সপ্তদ্বীপ দাসকে। চিকিৎসক হয়েছিলেন রক্তাক্ত। ঘটনার পর সমস্ত চিকিৎসকরা বীরলালের বিরুদ্ধে মামলাও দায়ের করেছিলেন। কিন্তু দুর্ভাগ্যের হলেও সত্যি, আইপিএস নমিত পাঠকের নেতৃত্বাধীন পুলিশ তিপ্রামথার নেতা বীর লালকে থানায় ডেকে পাঠানোর সাহস করে নি। আজও বহাল তবিয়তে চিকিৎসক হামলাকারী মথার নেতা বীরলাল। এক্ষেত্রে এসপি নমিত পাঠক চূড়ান্ত ব্যর্থ।কারণ নমিত পাঠককে তাড়া করছে বড়মুড়াতে তিপ্রামথার আন্দোলনের ভূত।


রাস্তা অবরোধ কালে বড়মুড়াতে তিপ্রামথার এক উগ্র মহিলা সমর্থক অন্তর্বাস খুলে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল নমিত পাঠকের উপর।তখন তিনি পশ্চিম জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের (গ্রামীন ) দায়িত্বে ছিলেন। এই ভয়ের কারণেই নাকি নমিত পাঠক এখনোও চিকিৎসকের উপর প্রাণঘাতি হামলার নায়ক বীর লালকে গ্রেফতার করার দুঃসাহস দেখাতে পারেন নি। ছি: ছি:। তিপ্রামথার গুন্ডাকেও ভয় পাচ্ছেন এসপি নমিত পাঠক।


*আইপিএস রমেশ যাদব
              খোয়াই জেলার এসপি’ র দায়িত্বে আছেন আইপিএস রমেশ যাদব। তেলিয়ামুড়াতে এসডিপিও ‘ র দায়িত্বে আছেন আইপিএস সুধাম্বিকা আর। গত ২৬ জানুয়ারি রাতে তেলিয়ামুড়ার কলই পাড়াতে সাম্প্রদায়িক দুষ্কৃতীরা বড় ধরনের ঘটনা সংঘটিত করার চেষ্টা করেছিলো।রাস্তায়  জাতি বিদ্বেষী স্লোগান লেখে এবং বাড়ি ঘরে হামলা চালিয়েছিল।দুষ্কৃতীরা নির্বিচারে করেছিলো ভাঙচুর।ঘটনার এতো দিন পরও এসপি রমেশ যাদব ও এসডিপিও  সুধাম্বিকা আর মূল কুশীলবদের সনাক্ত করতে পারে নি। বরং নিজেদের দোষ ঢাকতে ঘটনার ভিডিও কারা এবং কিভাবে ভাইরাল করেছে, তা নিয়ে তারা ব্যাতি ব্যস্ত হয়ে উঠেন। বাস্তবে কাজের কাজ কিছুই হয় নি। কলই পাড়া কাণ্ডে জড়িত কুশীলবরা এখনো বহাল তবিয়তে।
        


*আইপিএস সুধাম্বিকা আর
_________________________
তাদেরকে সনাক্ত করতে রমেশ যাদবের নেতৃত্বাধীন খোয়াই জেলা পুলিশ পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে। কিছুদিন আগে পুলিশের সামনেই বন দপ্তরের লকআপ থেকে বনদস্যু হেমন্ত রিয়াংকে ছিনতাই করে নিয়ে গিয়েছিলো গ্রামবাসীরা। পুলিশ কিছুই করতে পারেনি। ঘটনার সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন তেলিয়ামুড়ার এসডিপিও সুধাম্বিকা আর নিজেও। এই সমস্ত ঘটনার মধ্য দিয়ে দুই আইপিএস রমেশ যাদব ও সুধাম্বিকা আরের ব্যর্থতা প্রতিফলিত হয়।


বর্তমানে রাজ্যে কর্মরত এই চার আইপিএস অফিসারের সাফল্য প্রায় শূন্যের কোটায়। তারা সঠিক ভাবে অপরাধ দমন করতে পারছেন না।স্বাভাবিক ভাবেই মাথা চাড়া দিয়ে উঠেছে অপরাধ জগতের দানবীয় চাইরা।বলছেন সংশ্লিষ্ট জেলাগুলির সাধারণ মানুষ। তাও আবার তথ্য প্রমাণ দিয়ে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *