ডেস্ক রিপোর্টার,১৮মার্চ।।
রাজ্যের চারটি বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচন অবশ্যম্ভাবী। এপ্রিল-মে’র মধ্যেই চার বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।এমনটাই জানা গিয়েছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন সূত্রে।
চার কেন্দ্রে উপনির্বাচন নিয়ে ব্যস্ততা বেড়েছে শাসক দল বিজেপিতে। শাসক দলের তৎপরতা থেকেই স্পস্ট যেকোনো সময় ঘোষণা হতে পারে উপভোটের দিনক্ষণ। উপ নির্বাচনে নিজেদের আধিপত্য বজায় রাখতে কার্যকলাপ শুরু করে দিয়েছে গেরুয়া শিবির। কৃষ্ণনগর গঠন করেছে “ইলেকশন ম্যানেজমেন্ট কমিটি”।
যুবরাজ নগর, সুরমা, আগরতলা ও টাউন বড়দোয়ালী চারটি কেন্দ্রের জন্যই পৃথকভাবে “ইলেকশন ম্যানেজমেন্ট কমিটি” গঠন করেছে।প্রতিটি কমিটিতে রয়েছে কনভেনার, কো-কনভেনার ও ইনচার্জ। বিজেপি’র সদর দপ্তরের খবর অনুযায়ী,৬-আগরতলা বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচন জন্য গঠিত কমিটির কনভেনার হয়েছেন রাজ্য বিজেপি’র সহ-সভাপতি অমিত রক্ষিত,ইনচার্জ হয়েছেন উপমুখ্যমন্ত্রী জিষ্ণু দেববর্মন ও কো-কনভেনার তথ্য দপ্তরের মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী।
রাজনৈতিক ভাবে ৬-আগরতলা বিধানসভা কেন্দ্রটি যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। এই কেন্দ্রের বিধায়ক ছিলেন প্রাক্তন স্বাস্থ্য মন্ত্রী সুদীপ রায় বর্মন। গত মাসে তিনি বিজেপি ছেড়ে কংগ্রেসে যোগ দিয়েছিলেন। স্বাভাবিক ভাবেই এই কেন্দ্রে উপনির্বাচন আবশ্যক হয়ে পড়েছে।৬-আগরতলার উপনির্বাচন বিজেপি’র কাছে চ্যালেঞ্জ। সম্মানের লড়াই-ও বটে।অনুরূপ অবস্থা সুদীপ রায় বর্মন ও কংগ্রেসের কাছেও।তবে শক্তির বিচারে শাসক দল বিজেপিকেই এগিয়ে রেখেছে রাজনীতিকরা। বিজেপি’র জয় নিয়ে কোনো দ্বিধা নেই।শুধু মাত্র রেকর্ড সংখ্যক ভোটের ব্যবধানে কংগ্রেস প্রার্থীকে পরাজিত করা বিজেপি’র মূল লক্ষ্য।
রাজধানীর ৬-আগরতলা বিধানসভা কেন্দ্রের জন্য গঠিত কমিটিতেও স্থান পেয়েছেন গেরুয়া শিবিরের হেভিওয়েট ব্যক্তিরা।অমিত রক্ষিত, জিষ্ণু দেববর্মন ও সুশান্ত চৌধুরী রাজ্য বিজেপি’র অলিন্দে থাকা তিন হেভিওয়েট নেতার উপর নির্ভর করবে আগরতলা কেন্দ্রের ভবিষ্যত।কমিটির গুরু দায়িত্বে রয়েছেন দলের সহ-সভাপতি অমিত রক্ষিত। সঙ্গে থাকবেন রাজ্য সারকাতের দুই হেভিওয়েট মন্ত্রী।
৮-টাউন বড়দোয়ালী বিধানসভা কেন্দ্রের “ইলেকশন ম্যানেজমেন্ট কমিটি”র কনভেনার করা হয়েছে বিজেপি’র অপর রাজ্য সহসভাপতি রাজীব ভট্টাচার্যকে।ইনচার্জ শিক্ষামন্ত্রী রতন লাল নাথকে।এবং কো-ইনচার্জ করা হয়েছে সমবায় মন্ত্রী রাম প্রসাদ পালকে। টাউন বড়দোয়ালী বিধানসভা কেন্দ্রের উপ নির্বাচনও হবে জমজমাট। এই কেন্দ্রাটিও ছিলো বিজেপি’র দখলে।বিধায়ক ছিলেন বিজেপি’র প্রাক্তন সহ-সভাপতি আশীষ কুমার সাহা।তিনিও সুদীপ রায় বর্মনের পথ ধরে বিজেপি’র সঙ্গ ত্যাগ করেছিলেন। স্বাভাবিক ভাবেই শহরের এই আসনটিতেও পাখির চোখ বিজেপি-কংগ্রেস উভয় শিবরের। তবে উপ নির্বাচনে হাসতে হাসতে জয় পাবে বিজেপি। শাসক দলের মূল লক্ষ্য হবে ভোটের হার বাড়ানো।
উপভোট অনুষ্ঠিত হবে ৪৬-সুরমা বিধানসভা কেন্দ্রে। এই কেন্দ্রটিও বিজেপি’র দখলেই ছিলো।কিন্তু দলের বিধায়ক আশীষ দাস বিজেপি ছেড়ে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিয়েছিলেন।এরপরই আসনটি বিধায়ক শূন্য হয়ে যায়। সুরমা বিধানসভা কেন্দ্রের জন্যও “ইলেকশন ম্যানেজমেন্ট কমিটি” গঠন করা হয়েছে। কমিটির কনভেনার করা হয়েছে বিজেপি’র রাজ্য নেতা যাদব লাল নাথকে।ইনচার্জ পর্যটন মন্ত্রী প্রানজিত সিংহ রায়কে।এবং কো-কনভেনার খাদ্য মন্ত্রী মনোজ কান্তি রায়।এই আসনে এবার বিজেপি’র মূল প্রতিদ্বন্দ্বী থাকবে তিপ্রামথা।কংগ্রেস, তৃণমূল কংগ্রেস বা সিপিআইএম বিশেষ সুবিধা করতে পারবে না বলেই মনের করছেন রাজনীতিকরা।তবে সুরমা বিধানসভা কেন্দ্রের উপভোটের ২২গজে এগিয়ে থেকেই ইনিংস শুরু করবে শাসক দল।
উত্তর জেলার যুবরাজ নগর বিধানসভা কেন্দ্রেও অনুষ্ঠিত হবে উপভোট। এই আসনটি ছিলো বামেদের দখলে। বিধায়ক ছিলেন রাজ্য বিধানসভার প্রাক্তন অধ্যক্ষ রমেন্দ্র চন্দ্র দেবনাথ। সম্প্রতি বার্ধ্যক জনিত কারণে প্রয়াত হন রমেন্দ্র চন্দ্র দেবনাথ। এরপরই আসনটি বিধায়ক শূন্য হয়ে পড়ে। নিয়ম অনুযায়ী হবে উপনির্বাচন। এই কেন্দ্রের জন্য বিজেপি’র গঠিত “ইলেকশন ম্যানেজমেন্ট কমিটি”র কনভেনার হয়েছেন টিঙ্কু রায়।তিনি প্রদেশ বিজেপি’র সাধারণ সম্পাদক। ইনচার্জ শ্রমমন্ত্রী ভগবান দাস এবং কো-কনভেনার সমাজ শিক্ষা -সমাজ কল্যাণ দপ্তরের মন্ত্রী সান্তনা চাকমা। এই আসনেও সিপিআইএম খুব বেশি আধিপত্য দেখতে পারবে না। বামেদের মধ্যে নেই কোনো হেভিওয়েট নেতৃত্ব।বলছেন স্থানীয় লোকজন। উপভোট বিজেপি’র ধারেকাছে পৌঁছতে পারবে না অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলো। সব মিলিয়ে শক্তির চুলচেরা বিশ্লেষণে এগিয়ে থাকবে শাসক দল বিজেপি। অর্থাৎ যুবরাজনগর বিধানসভায় উপভোটে প্রায় নিশ্চিত জয় পাচ্ছে বিজেপি।এমনটাই মন্তব্য রাজনীতির প্রাজ্ঞ কর্তা-ব্যক্তিদের।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *