সদ্য সমাপ্ত এডিসি নির্বাচনে ক্ষমতা দখল করেছে তিপ্রামথা।বিরোধী আসনে বিজেপি।রাজ্যের উন্নয়নের গতির সঙ্গে সাযুজ্য রেখে পাহাড়েও চলবে উন্নয়নের ইঞ্জিন।এটাই প্রত্যাশিত। ক্ষমতা দখলের পর রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে রাজ্য সরকারের সঙ্গে হাতে হাত মিলিয়ে পাহাড়ে কাজ করার অঙ্গীকার করেছিলেন তিপ্রার সুপ্রিমো প্রদ্যুত কিশোর দেববর্মন। এই সংক্রান্ত পোস্ট সোশ্যাল মিডিয়ায় করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব নিজেও।
সাম্প্রতিক কালে পাহাড়ে ঘটে যাওয়া কিছু ঘটনা বলছে অন্য কথা।দিচ্ছে এক অশনি সংকেত।যা রাজ্যের জন্য আগামীদিনেও ভয়ানক হয়ে উঠতে পারে।এমনটাই মনে করছেন রাজনীতিকরা। করোনা পরিস্থিতিতেও থেমে থেমে তপ্ত হয়ে উঠছে পাহাড়। খুন,তোলা আদায়,সহ মারধরের ঘটনা ঘটছে।
কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে পাহাড়ে তিপ্রামথা-বিজেপির রাজনৈতিক সংঘর্ষে মিশেল হচ্ছে সাম্প্রদায়িক বিষ বাষ্প।পাহাড়ে বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক সংঘর্ষের ঘটনার পর বিষয়টি আর তিপ্রা-বিজেপির মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকছে না।জল গড়াচ্ছে অন্যদিকে। এই জলে বইছে চোরা স্রোত।এবং স্রোতের কারেন্ট বেশ হাই ভোল্টেজ।
সোমবার নতুন বাজারের ভোমরাছড়া এডিসি ভিলিজ দখলের জন্য গিয়েছিল তিপ্রামথা।অভিযোগ বিজেপির।কিন্তু ভিলিজ দখল করতে গিয়ে মথা ও বিজেপির কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।ঘটনাস্থলে থাকা সবাই ছিল জনজাতি অংশের মানুষ। কিছুক্ষন সংঘর্ষের পর তা বন্ধও হয়ে যায়। নিজেদের মধ্যে মীমাংসা করে নেয়।এটা অবশ্যই সুষ্ঠ রাজনীতির অঙ্গ।
ভোমরাছড়া ভিলেজের ঘটনার পর তিপ্রামথার কিছু উগ্রকর্মী সমর্থক চলে নতুন বাজার বাজারে। তারা এখানে এসে সিন ক্রিয়েট করে বলে অভিযোগ বিজেপির।ফের সংঘর্ষ শুরু হয় দুই রাজনৈতিক দলের কর্মী সমর্থকদের মধ্যে।এরপর গ্রামের পাঁচ শতাধিক উপজাতি নারী-পুরুষ চলে আসে নতুন বাজার বাজারে। এরপর বাজারের দোকানপাট চলে নির্বিচারে ভাঙচুর।পুলিশ এসে সামাল দেয় পরিস্থিতি।তার জন্য পুলিশকে করতে হয় লাঠিচার্জ।এবং নিক্ষেপ করতে হয় টিয়ার গ্যাস।
পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হওয়ার পর তিপ্রার নেতারা অভিযোগ করতে গিয়ে বলেন, বিজেপির “বাঙালি” সমর্থকরা তাদের উপর হামলা করেছে। তিপ্রা নেতাদের এই বার্তা ভয়ঙ্কর।তার মানে বিজেপির জনজাতি সমর্থকদের সঙ্গে তাদের কোনো ঝামেলা হয়নি।ঝামেলা হয়েছে বিজেপির অনুপজাতি অংশের লোকজনের সঙ্গে। তাদের এই ধরণের বার্তা আগামীদিনে পাহাড় রাজনীতিতে একটা বড় বিপদ ডেকে আনতে পারে বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
সম্প্রতি মনুতে খুন হয়েছে বাসু মজুমদার। আমবাসার অটো চালক বাসুকে তার অটোর সঙ্গে বেঁধে মনুর গভীর জঙ্গলে জীবিত অবস্থায় আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।এই ঘটনা আজ পর্যন্ত পুলিশ খুনিদের খুঁজে বের করতে পারেনি।বা করেনি।পুলিশের একটা সূত্রের দাবি,তিপ্রার কিছু উগ্র সমর্থক অটো চালক বাসু মজুমদারের কাছে চাঁদা চেয়েছিলো।কিন্তু বাসু চাঁদা দিতে রাজি হয়নি।তাই তাকে দুষ্কৃতীরা নৃশংস ভাবে খুন করেছিলো। কিন্তু গোটা প্রশাসন চেপে গিয়েছে।এই ভাবে পাহাড়ে যদি রাজনীতির নামে জাতি বিদ্বেষ’র সমীকরণ তৈরি হয়,তাহলে আগামী দিনে রাজ্যের আকাশে কালো মেঘ যে আরো প্রগার হবে,তা বলার অপেক্ষা রাখে না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *