।।শঙ্কর সরকার।।

ডেস্ক রিপোর্টার, ১১ডিসেম্বর।।
          ত্রিপুরা সহ গোটা দেশে সিপিআইএম এখন সাইনবোর্ড সর্বস্ব।তাদের ভবিষ্যত এক ঘোর অমাবস্যার দিকে ধাবিত হচ্ছে। তারপরও লড়াই করে নিজেদের হারানো জমি পুনরুদ্ধার করতে চাইছে সিপিআইএম। কিন্তু তারা কতটা কি করতে পারবে তা বলবে সময়েই।রাজ্যে দীর্ঘ ২৫বছর বামেরা যে দুর্নীতির অক্টোপাসে জড়িয়ে গিয়েছিল তার প্রমাণ আজও দিচ্ছেন খোদ বাম নেতৃত্ব।
    শঙ্কর সরকার। তিনি সিপিআইএম- র ডুকলি মহকুমা কমিটির সদস্য। একই সঙ্গে ত্রিপুরা তপশিলি সমন্বয় সমিতি ডুকলি মহকুমা কমিটির সম্পাদকও।শঙ্করের বাড়ি শহর সংলগ্ন বাধারঘাট বিধানসভার বেলাবর পঞ্চায়েত এলাকায়। পেশায় তিনি সর্বশিক্ষার শিক্ষক।তার কর্মস্থল কাঞ্চনমালাতে।
নেতা হওয়ার সুবাদে তিনি দীর্ঘ বাম জামানায় মিছিল, মিটিংয়ের অগ্র ভাগে থেকে রাজনীতি করেছেন। ভোগ করেছেন সমস্ত সরকারী সুযোগ সুবিধা। কিন্তু সিপিআইএম ক্ষমতা হারানোর পরও শঙ্কর সরকার আছেন বহাল তবিয়তে। তিনি  বাধারঘাট বাম রাজনীতির উজ্জ্বল মুখ।

।।দিল্লিতে বামেদের সভায় সুধন – রতন।।

গত ৪ ডিসেম্বর থেকে দিল্লীতে পার্লামেন্টে শুরু  হওয়া শীতকালীন অধিবেশনে “পার্লামেন্ট অভিযান” করেছে বামপন্থীরা। ত্রিপুরা থেকেও এই পার্লামেন্ট অভিযানে যোগ দিয়েছিল একটি দল।নেতৃত্বে ছিলেন প্রাক্তন মন্ত্রী তথা ত্রিপুরা তপশিলি সমন্বয় সমিতির সম্পাদক সুধন দাস, প্রাক্তন মন্ত্রী রতন ভৌমিক সহ অন্যান্যরা। দিল্লি সাফররত এই দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন ত্রিপুরা তপশিলি সমন্বয় সমিতি ডুকলি মহকুমা কমিটির সম্পাদক তথা সর্বশিক্ষার শিক্ষক শঙ্কর সরকার। এই কর্মসূচিতে শঙ্করের যোগ দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে প্রকাশ্যে মুখ খুলছে খোদ স্থানীয় বামপন্থী কর্মীরা।
সর্বশিক্ষার শিক্ষক তথা তপশিলি সমন্বয় সমিতি ডুকলি মহকুমা কমিটির সম্পাদক শঙ্কর সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ বাম কর্মী-সমর্থকরা। বাধারঘাট বিধানসভার বেলবর অঞ্চলে কান পাতলেই বাম নেতারা শঙ্কর সম্পর্কে বহু দুর্নীতির উপাখ্যান শোনা যায়। দীর্ঘ বাম জামানায় শঙ্করের দুর্নীতি নিয়ে টু – শব্দ করার সাহস করে নি কেউ।কারণ শঙ্কর যে রাজ্যের প্রাক্তন সাংসদ ঝর্না দাস বৈদ্যের মানস পুত্র।  অভিযোগ, রাজ্য সভার প্রাক্তন সাংসদ ঝর্না দাস বৈদ্যের নাম করে শঙ্কর নানান দুর্নীতি করেছেন। মানস পুত্রের মাথায় মা ঝর্নার হাত থাকায় শঙ্কর ছিলো ধরা ছোঁয়ার বাইরে।

।।প্রাক্তণ সাংসদ ঝর্না দাসের সঙ্গে শঙ্কর সরকার।।

সিপিআইএম ক্ষমতায় থাকাকালীন শঙ্কর নাকি সমস্ত সরকারী সুযোগ সুবিধা নিংড়ে নিয়েছিলেন। কর্মীদের মানুষ বলে গণ্য করেন নি।বাম কর্মীদের অভিযোগ, শঙ্কর বাম জামানায় খোকলা করে দিয়েছিলেন বেলাবর পঞ্চায়েতকে। এখন তিনি দলের কর্মীদের সঙ্গে আর যোগাযোগ রাখেন না।একেবারেই জনবিচ্ছিন্ন। কিন্তু বামেদের রাজ্য বা মহকুমা স্তরের কর্মসূচী গুলিতে যোগ দেন আড়ালে আবডালে। আসলে তাকে তাড়া করে চাকরীর ভয়। এটাই বাস্তব।


রাজনীতিকরা বলছেন, বাম জামানায় শঙ্কর সরকার যদি বেলাবর পঞ্চায়েতে দুর্নীতির জাল বিস্তার করেই থাকেন, তাহলে পঞ্চায়েতের বর্তমান শাসক দল বিজেপির নেতারা নিশ্চুপ কেন ? তাহলে কি শঙ্কর সরকারের বিরুদ্ধে তোলা বাম কর্মীদের অভিযোগ মিথ্যা?নাকি, বেলাবর পঞ্চায়েতে বিজেপি ও সিপিআইএমের মধ্যে চলছে আন্ডার স্ট্যান্ডিং পলিটিক্স বা সমঝোতার রাজনীতি? কারণ,বেলাবর পঞ্চায়েতের বর্তমান শাসক দলের প্রধান কিঙ্কর মণ্ডলও ধোয়া তুলসী পাতা নন।


কিংকর বিজেপির পুরনো কর্মী হলেও তার বিরুদ্ধে রয়েছে দুর্নীতির লম্বা ফর্দ। তাই নাকি,বাম নেতা শঙ্করের দুর্নীতি নিয়ে মুখে কুলুপ বর্তমান শাসক দল বিজেপির প্রধান কিংকর মণ্ডলের। আবার কিঙ্করের দুর্নীতি নিয়েও নীরব শঙ্কর সরকার নেতৃত্বাধীন বেলাবরের বামপন্থী মুখগুলি। বেলাবর পঞ্চায়েতে রাম – বাম দুই রাজনৈতিক শিবিরের সমঝোতার রাজনীতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন স্থানীয় জনতা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *