ডেস্ক রিপোর্টার, ৭আগস্ট।।

এক অসহায় মহিলা বলছেন, পার্টি অফিসের দরজা বন্ধ করে তার বাবাকে মারধর করেছে বিজেপি নামধারী গুন্ডারা। রাত একটা নাগাদ অসহায় মহিলা তার অসুস্থ বাবাকে নিয়ে যান হাসপাতালে। এবং তাকে ভর্তি করান। বাবা এখন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
ঘটনা দক্ষিণ জেলার বিলোনিয়া মহকুমার ঋষ্যমুখ মণ্ডলের উত্তর সোনাই ছরি এলাকায়। অভিযোগ, এখানে জঙ্গল রাজ শুরু করেছে শাসক দলীয় গুন্ডারা।অসহায় পুলিশ প্রশাসন। বিজেপির গুন্ডাদের আস্ফালনে বিপন্ন হয়ে উঠছে জন জীবন।
শুধু কি তাই, অসহায় মহিলার বাবাকে বিজেপির দুষ্কৃতীরা হুমকি দিয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে থানায় দায়ের করা মামলা প্রত্যাহার না করলে তার গলা ও মাথা পৃথক করে নেবে। এবং মহিলার মুখে ছুড়ে দেবে অ্যাসিড।

কোথায় যেন দক্ষিণ জেলায় ফিকে হয়ে গেলো দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বেটি বাঁচাও,বেটি পড়াও স্লোগান। হায় রে! বিজেপির গুন্ডা রাজের কাছে পরাস্ত হয়ে গেলো বিশ্বের শক্তিশালী রাষ্ট্র নেতা নরেন্দ্র মোদীর স্লোগান। এরাই বাস্তব অর্থে বিজেপির নেতা – কর্মী – সমর্থক? নাকি অন্য কোনো রাজনৈতিক দলের এজেন্ট হয়ে কাজ এরা? প্রশ্ন তুলছে খোদ বিজেপির লোকজন।

নির্যাতিত অসহায় গৃহবধূর নাম পোপী বিশ্বাস। তার বাবা গৌরাঙ্গ বিশ্বাস। গোটা পরিবারটি দিন দারিদ্র্। গত কয়েক বছর আগে সামাজিক ভাবে বিয়ে হয়েছিল গোপী বিশ্বাসের। তারপর পোপীর সংসার আলো করে আসে এক কন্যা সন্তান। কিন্তু বিয়ের দুই বছরের মধ্যেই তার বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। কোলের কন্যা সন্তানকে নিয়ে পোপী চলে আসেন উত্তর সোনাই ছড়িস্থিত তার বাবার বাড়িতে।

পোপীর বাবার সংসারে নুন আনতে পান্তা ফুরায়। এই অবস্থায় নিজের সন্তানের মুখ দু’মুঠো অন্য তুলে দেওয়ার জন্য কাজের সন্ধানে বের হয় পোপী। কাজ পেয়ে যান এলাকার ব্যবসায়ী নারায়ণ চৌধুরীর বাড়িতে। নারায়ণ চৌধুরী ও তার অসুস্থ স্ত্রীকে দেখাশোনা করার দায়িত্ব নেন পোপী। বিনিময়ে পারিশ্রমিক বাবদ মাসিক ৬হাজার টাকা পান। এই টাকা দিয়ে বাবা ও এক মাত্র কন্যা সন্তানকে ভালোই চলছিলো পোপীর সংসার।

সম্প্রতি স্থানীয় বিজেপির দুষ্কৃতীরা নারায়ণ চৌধুরীর জমি জবর দখল করে। এবং তার জমিতে পার্টি অফিস বানিয়ে নেয়। নারায়ন চৌধুরীর বাগান ধংস করে তাও দখল নেয় বিজেপি নামধারী জমি দস্যুরা। এর প্রতিবাদে সরব হন নারায়ণ চৌধুরী ও তার ছেলে দেবাশীষ চৌধুরী। দেবাশিষ একজন বিএসএফ জওয়ান। সে পাঞ্জাবের ভারত – পাক সীমান্তে কর্মরত। বর্তমানে ছুটিতে বাড়িতেই আছেন জওয়ান দেবাশীষ। স্বাভাবিক ভাবেই বিজেপির দুষ্কৃতীদের জুলুমবাজি নিয়ে প্রতিবাদে সরব হয়েছেন দেবাশীষ।তার তাতেই কাল হয়েছে অসহায় গৃহবধূ পোপী ও তার বাবার।

জওয়ান পরিবারকে বশে আনার জন্য এক জঘণ্য খেলায় মেতে উঠে স্থানীয় বিজেপির দুষ্কৃতীরা। তারা জওয়ান দেবাশীষ চৌধুরীর সঙ্গে গৃহবধূর ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল করে দেয়।ছড়িয়ে দেয় নানান কু-কথা।এই বিষয়টি জানার পর প্রতিবাদী হয়ে উঠেন পোপী। এবং থানায় দায়ের করেন মামলা। এই মামলা প্রত্যাহারের জন্য পোপীর বাবাকে পার্টি অফিসের মধ্যে দরজা বন্ধ করে মারধর করে দুষ্কৃতীরা।

উত্তর সোনাই ছড়ির কারা কারা পোপী বিশ্বাসের বাবা গৌরাঙ্গ বিশ্বাসকে মারধর করেছেন? কারা তার ও বিএসএফ জওয়ানের ছবি ভাইরাল করেছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে? পোপীর কথায়, এলাকার নেতা প্রদীপ বৈদ্য, সারদা চৌধুরী, দীপঙ্কর মজুমদার,জয়ন্ত মজুমদার,কল্যাণ দে, অজিত পালরা তার জীবন নিয়ে করছে ছিনিমিনি খেলা। অতিরিক্ত হিসাবে আছে হুমকী হুজ্জুতি।
পোপী বিশ্বাসের আহত বাবা হাসপাতালের ব্যাডে বসে আতংকের প্রহর গুনছেন। তিনি ভয়ে জর ভরত। ভয়ে কিছু বলতে চাইছে না।আক্রমনকারীদের তিনি সনাক্ত করেছেন। কিন্তু তাদের নাম বলতে পারছেন না ভয়ে।

এই ঘটনা থেকে পরিষ্কার গোটা বিলোনিয়া মহকুমাতে চলছে গুন্ডারাজ।অসহায় পুলিশ প্রশাসন। কেন না, পোপী বিশ্বাস থানায় মামলা করার পরও বিজেপির হোমরা চোমরা নেতাদের কেন গ্রেফতার করতে পারে নি পুলিশ।

যেখানে মহিলার জীবন নিয়ে ছেলে খেলা করছে দস্যুরা। কোথায় মুখ্যমন্ত্রীর জিরো টলারেন্স নীতি? পুলিশ কেন হাতে চুড়ি পরে আছে? তার উত্তর কি দিতে পারবেন দক্ষিণ জেলার পুলিশ সুপার? প্রশ্ন তুলছে আম জনতা।