ডেস্ক রিপোর্টার, ১৬মার্চ।।
হাস্যকর! শেষ পর্যন্ত ঝোলা থেকে বেরিয়ে এলো বিড়াল। দিদিকে বিজেপির প্রার্থী করে নিজের দলের জনজাতি নেতাদের করলেন চূড়ান্ত অপমান। প্রদ্যুৎ কিশোরের এই রাজনৈতিক খেলায় ভেঙ্গে পড়েছে তিপ্রামথার প্রথম সারির নেতারা।
প্রদ্যুৎ কিশোর ঘোষনা দিয়েছিলেন, ” তিনি এমন একজনকে পূর্ব আসনে জন্য মনোনীত করবেন, যিনি দিল্লিতে গিয়ে তিপ্রাসাদের স্বার্থে কথা বলবেন”। নিজের লোক ব্যতীত ভুল লোক পাঠালে তিনি ত্রিপাক্ষিক চুক্তি সংক্রান্ত বিষয় গুলিকে বাস্তবায়িত করতে দেবেন না”।
পূর্ব ত্রিপুরা আসনে বিজেপি কৃতি সিং দেববর্মার নাম ঘোষণা করতেই স্পস্ট হয়ে যায় প্রদ্যুৎ কিশোরের আসল ব্যক্তিটি কে? প্রদ্যুৎ কিশোরের এই সিদ্ধান্ত নিয়ে ঝড় বইছে খোদ তিপ্রামথার নেতাদের মধ্যে। প্রশ্ন উঠছে, তাহলে কি তিপ্রামথার মধ্যে প্রদ্যুৎ কিশোরের কোনো বিশ্বাসযোগ্য নেতা নেই? যার উপর প্রদ্যুৎ আস্থা রেখে তাকে দিল্লিতে পাঠাতে পারেন। তিপ্রামথা মধ্যে কি এমন কোনো নেতা নেই? যিনি লোকসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেন? বর্তমানে প্রদ্যুৎ কিশোরের হাতে থাকা নেতা কর্মীদের দিয়েই ২১- র এডিসি নির্বাচন ও ২৩- র লোকসভা নির্বাচনে মাথা তুলে দাঁড়িয়ে ছিলেন। কিন্তু এখন তাদেরকে ব্রাত্য করে দিদি কৃতিকে ছত্রিশগড় থেকে উড়িয়ে এনে ভারতীয় জনতা পার্টির প্রতীকে টিকিট পাইয়ে দিলেন? প্রদ্যুৎ নিজ জনজাতিদের মধ্য থেকে একজনকেও খুঁজে পেলেন না, যাকে দিল্লিতে পাঠানো যায়।

প্রদ্যুৎ কিশোরের দিদি কৃতি সিং দেববর্মা ২০০৩ সালে বিবাহ সূত্রে চলে গিয়েছিলেন ছত্রিশগড়ে। এরপর থেকে ত্রিপুরার সঙ্গে তার সরাসরি কোনো যোগাযোগ ছিল না। ত্রিপুরার জনজাতিরা খেয়েছেন কি না, তারা যথাযত ভাবে চিকিৎসা পরিষেবা পাচ্ছে কি না, পাহাড়ে জনজাতিদের শিক্ষার অবস্থা কি? আর্থিক ভাবে তারা কেমন আছেন? দৈনন্দিন জীবনে চলার পথে জনজাতিরা কি কি সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে? তার খোঁজ নেওয়ার জন্য ছিলেন না কৃতি সিং।পাহাড়ে দূষিত জল খেয়ে ডাইরিতেও মৃত্যু হওয়া জনজাতি পরিবারের পাশে থাকেন নি কৃতি। তার নাম রাজ্যের জনজাতিরা ভালো করেও জানেন না। আর যারা জানতেন তারা এতো দিনে ভুলেই গিয়েছে।

দুই দশকের অধিক সময় ধরে যিনি স্বামী – সন্তানদের নিয়ে ছত্রিশগড়ের রাজবাড়ীতে জীবন কাটিয়েছেন, তিনি নাকি এখন রাজ্যের জনজাতিদের ত্রাতা হয়ে উঠবেন। তাও আবার সংসদে। রাজনীতিকরা বলছেন, বিজেপির টিকিটে পূর্ব আসন থেকে কৃতি সিংয়ের জয় প্রায় নিশ্চিত। নির্বাচনী জয়ী হলেন তিনি যাবেন সংসদে। কৃতি কি পারবেন জনজাতিদের সমস্যা নিরসন করতে। এর আগে ত্রিপুরা রাজ পরিবার থেকে প্রদ্যুৎ কিশোরের বাবা কিরিট বিক্রম, মা বিভু কুমারী দেবী সংসদে গিয়েছিলেন। কিন্তু তারা কি সংসদে হয়ে জনজাতিদের স্বার্থে গলা ফাটিয়ে ছিলেন? তারা কি জনজাতিদের দুঃখ দুর্দশা গুছাতে পেরেছিলেন? না। বরং রাজনীতিকে হাতিয়ার করে সুবিধা- ই ভোগ করেছিলেন তারা।