#Agartala।Sanatani।Bangali।Police।Janatar mashal।
বাংলাদেশের হিন্দু নির্যাতনের ঘটনার প্রেক্ষিতে আগরতলায় প্রতিবাদ মিছিল করার উদ্যোগ নিয়েছিল “সনাতনী বাঙালি সমাজ” নামে একটি সংগঠন। কিন্তু রহস্য জনক কারণে সনাতনীদের আন্দোলন করতে দেয় নি পুলিশ প্রশাসন।

” অবাক করার মত ঘটনা ১১ আগস্ট রাতে পুলিশ পাল্টা চিঠি দিয়ে জানিয়ে দেয় রাজ্যের সুষ্ঠ আইন-শৃঙ্খলার প্রশ্নে স্বামী বিবেকানন্দ ময়দানে সনাতনী বাঙালি সমাজের সভা ও মিছিল বাতিল করা হয়েছে। পরিবর্তে সংগঠনটিকে আগরতলা রেল স্টেশনে সভা করার অনুমতি দেওয়া হয়।”
পুলিশ প্রশাসন সনাতনীদের সভা ও মিছিল ঠেকানোর জন্য আগরতলা রেল স্টেশনে তাদের যুদ্ধ নিরোধক যান ‘বরুণ ‘ও ‘বজ্র’কে নিয়ে হাজির করেছিলো।

ডেস্ক রিপোর্টার,২৩ সেপ্টেম্বর।।
বাংলাদেশের চট্টগ্রামে জনজাতিদের উপর হামলার ঘটনার প্রতিবাদে তপ্ত হয়ে উঠে রাজধানী আগরতলা। বিভিন্ন জনজাতি সংগঠন ও বৌদ্ধ ভিক্ষুরা শনিবার পৃথক পৃথকভাবে আন্দোলন করে। রাজধানীতে তারা করে বিক্ষোভ মিছিল ও সভা। শহরের পুলিশের অনুমতি নিয়েই জনজাতিদের বিভিন্ন সংগঠন আন্দোলনে সরব হয়েছে আন্দোলন চলাকালীন পুলিশ তাদেরকে নিরাপত্তাও দিয়েছে। কিন্তু এই পুলিশই রাজ্যের সনাতনী সংগঠন গুলিকে বাংলাদেশে হিন্দু নির্যাতন ইস্যুতে আন্দোলন করার কোন অনুমতি দেয়নি। রাজ্য পুলিশের এই দ্বিচারিতা কেন? প্রশ্ন উঠছে এই রাজ্যের সনাতনী জনমনে। তাহলে কি রাজ্যে শুধু জনজাতিদের আন্দোলন করার ক্ষমতা আছে। আর সনাতনী হিন্দুদের আন্দোলন করার অধিকার নেই। এই প্রশ্নের উত্তর কি দিতে পারবেন রাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ মানিক সাহা?

একের পর এক হিন্দুদের বাড়ি ঘরে লুটপাট, ভাঙচুর , অগ্নি সংযোগ ,খুন সহ হিন্দু নারীদের অপহরণ ও ধর্ষনের ঘটনা সংঘটিত করে জিহাদীরা।
অগাষ্ট মাসের প্রথম দিকে শেখ হাসিনার বাংলাদেশ ত্যাগের পর সেই দেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর আক্রমনের স্টিমরোল চালিয়ে দেয় ইসলামিক জিহাদী গোষ্ঠী। একের পর এক হিন্দুদের বাড়ি ঘরে লুটপাট, ভাঙচুর , অগ্নিসংযোগ ,খুন সহ হিন্দু নারীদের অপহরণ ও ধর্ষনের ঘটনা সংঘটিত করে জিহাদীরা। নীরব ছিল বাংলাদেশের গোটা প্রশাসন সহ সেনাবাহিনী। হিন্দুদের মন্দিরে মন্দিরে ভাঙচুর করেছিল বিএনপি – জামাত গোষ্ঠী। ভেঙ্গে দিয়েছিল হিন্দু দেবদেবীর মূর্তি। বাংলাদেশের চলমান এই সংক্রান্ত ঘটনার নিন্দা করেছিলো গোটা বিশ্ব।

এই সময়ে বাংলাদেশের হিন্দু নির্যাতনের ঘটনার প্রেক্ষিতে আগরতলায় প্রতিবাদ মিছিল করার উদ্যোগ নিয়েছিল “সনাতনী বাঙালি সমাজ” নামে একটি সংগঠন। গত ১২ আগস্ট দুপুর ১২ টা থেকে ৩টা পর্যন্ত শহরের স্বামী বিবেকানন্দ ময়দানে প্রতিবাদ মিছিল ও সভা করার উদ্যোগ নিয়েছিল এই সনাতনী সংগঠনটি। সেই মোতাবেক সংগঠনের পক্ষ থেকে ৯ আগস্ট মিছিল ও সভার অনুমতি চেয়ে আবেদন করা হয়েছিল পশ্চিম জেলা পুলিশের কাছে। একই সঙ্গে সদর মহকুমা পুলিশ আধিকারিকের কাছেও। সংগঠনের পক্ষ থেকে সুভাষ চন্দ্র দাস মিছিল ও সভার জন্য আবেদন করেছিলো পুলিশের কাছে। পুলিশ প্রাথমিক ভাবে সনাতনী বাঙালি সমাজ নামে সংগঠনটিকে মিছিল ও সভা করার অনুমতি দিয়েছিল। কিন্তু অবাক করার মত ঘটনা ১১ আগস্ট রাতে পুলিশ পাল্টা চিঠি দিয়ে জানিয়ে দেয় রাজ্যের সুষ্ঠ আইন-শৃঙ্খলার প্রশ্নে স্বামী বিবেকানন্দ ময়দানে সনাতনী বাঙালি সমাজের সভা ও মিছিল বাতিল করা হয়েছে। পরিবর্তে সংগঠনটিকে আগরতলা রেল স্টেশনে সভা করার অনুমতি দেওয়া হয়।

পুলিশ সনাতনী বাঙালিদের রেল স্টেশন থেকে পত্র পাঠ বিদায় করে দিয়েছিল ।
সনাতনী বাঙালি সমাজের নেতৃত্বে বক্তব্য, পুলিশের দেওয়া নির্দেশ অনুযায়ী তারা ভ্যানু পরিবর্তন করে নিয়ে যায় আগরতলা রেল স্টেশনে।কিন্তু অবাক করার মতো ঘটনা পুলিশ আগরতলা রেল স্টেশনে সনাতনী বাঙালি সমাজের লোকজনকে জড়ো হতে দেয় নি। রাজ্যের বিভিন্ন মহকুমা থেকে সনাতনী লোকজন রেলে করে এসে স্টেশনে জড়ো হয়েছিলো। তাদেরকে পত্র পাঠ বিদায় করে দিয়েছিল পুলিশ।কিন্তু দুর্ভাগ্যের হলেও সত্যিই পুলিশ প্রশাসন সনাতনীদের সভা ও মিছিল ঠেকানোর জন্য আগরতলা রেল স্টেশনে তাদের যুদ্ধ নিরোধক যান বরুণ ও বজ্রকে নিয়ে হাজির করে। আর গোটা স্টেশন চত্বর ছিল পুলিশ টিএসআরের ছয়লাপ। সঙ্গে কেন্দ্রীয় বাহিনী সিআরপিএফ। উপস্থিত ছিলেন খোদ পশ্চিম জেলার পুলিশ সুপার কিরণ কুমার , আমতলীর এসডিপিও শংকর দাস, আমতলী থানার তৎকালীন ওসি রঞ্জিত দেবনাথ। সহ ডজন খানেক পুলিশ অফিসার। রাজ্যের বিভিন্ন জায়গা থেকে রেল স্টেশনে আসার সময় বহু সনাতনী বাঙালি যুবকদের পুলিশ গ্রেপ্তার করেছিল। যদিও তাদের পরবর্তী সময় ছেড়ে দেয়।

সনাতনী বাঙালি সমাজের নেতৃত্ব আক্ষেপ করে বলেন, ” আমরাও গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে আন্দোলন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম কিন্তু পুলিশ আগরতলা রেলস্টেশনেও আন্দোলন করার অনুমতি দেয়নি বরং তারা বজ্র, বরুনকে এনে বুঝিয়ে দিয়েছে এই রাজ্যের সনাতনী মানুষ পুলিশ প্রশাসনের শত্রু।”

এদিন আগরতলা রেলস্টেশনে দাঁড়িয়ে পশ্চিম জেলার পুলিশ সুপার কিরণ কুমার সনাতনী বাঙালি সমাজের নেতাদের আশ্বস্ত করে বলেছিলেন, ,” বাংলাদেশ ইস্যুতে কোন সংগঠনকেই তারা শহরে আন্দোলন করতে অনুমতি দেবে না”। কিন্তু কোথায় পুলিশ সুপার কিরণ কুমারের সেই প্রতিশ্রুতি?
শীততাপ নিয়ন্ত্রিত ঘর থেকে মোবাইলে রিং বেজে উঠলে এপি’র শরীরও অসার হয়ে যায়। এটাই বাস্তব।
বাংলাদেশের চট্টগ্রামে জনজাতিদের উপর হামলার ঘটনার প্রেক্ষিতে শনিবার দিনভর রাজধানীর রাজপথ ছিল বিভিন্ন জনজাতি সংগঠনের দখলে। তারা স্বজাতিদের উপর আক্রমণের ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে। এটাই কাম্য। তাদেরকে পুলিশ অনুমতিও দিয়েছে।কিন্তু সনাতনী বাঙালিদের ক্ষেত্রে পুলিশের দ্বিচারিতা নিয়ে সরব হচ্ছে এ রাজ্যের বাঙালি সমাজও।তারাও নামবে পথে।

তবে পুলিশের কি-ই করার আছে। শীততাপ নিয়ন্ত্রিত ঘর থেকে মোবাইলে রিং বেজে উঠলে এপি’র শরীরও অসার হয়ে যায়। এটাই বাস্তব। তাই সনাতনী বাঙালিদের পাশে থাকার জন্য পুলিশ কর্তা ব্যক্তিদের মন চাইলেও রাজনৈতিক দড়ি তাদেরকে টেনে নিয়ে যায় বিপরীত অভিমুখে।