#Tripura #India #BNSS #Police #Janatar# Mashal



যদি কোন ব্যক্তিকে অযথা দীর্ঘসময় আইন বহির্ভূত আটক রাখে সেই ক্ষেত্রে আইন লঙ্ঘিত হয় এবং কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া যায়।


আইন পুলিশ ও বিচারককে গ্রেপ্তারের ক্ষমতা প্রদান করেছে। অনেক সময় অনেক অপরাধের ক্ষেত্রে জনসাধারণও অপরাধীকে গ্রেপ্তার করতে পারেন এবং আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য পুলিশের কাছে হস্তান্তর করতে পারেন। ভারতীয় সংবিধানের আর্ট ২২(২) অনুযায়ী সময় শেষে গ্রেপ্তার সংবিধান বিরোধী। গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তিকে গ্রেপ্তারের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আদালতে সোপর্দ করিতে হইবে। যদিও পথের হিসেব বহির্ভূত। ভারতীয় সংবিধানের আর্ট ২২(১) অনুযায়ী গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তিকে তাহার গ্রেপ্তারের কারণ যত শীঘ্র সম্ভব জানাইতে হইবে। অকারণ বা যুক্তি বহির্ভূত গ্রেপ্তার BNS 2023 এর 258 ধারা অনুযায়ী শাস্তি যোগ্য।

।লেখক ড: প্রণব সেনগুপ্ত।

              মানুষের মর্যাদা সভ্য সমাজের প্রতীক। উত্তেজিত জনতা বা আশু আইন শৃঙ্খলা রক্ষার্থে আটক করার জন্য BNSS 2023 এর 148,149,150 ধারায় বর্ণিত। তাছাড়া অপরাধের নিমিত্ত দণ্ডের জন্য ভারতীয় দণ্ডবিধি আইন বর্তমান। দেখার বিষয় আইনের যেন অপপ্রয়োগ না হয় বা অমানবিক অধিকার বহির্ভূত ঘটনা যেন না ঘটে। আইনি পরিভাষায় গ্রেপ্তার বলতে বুঝায়, “In law, the arrest can be said to be an execu- tion/enforcement of a legal process requiring attendance in a proceeding, either suo-moto by Police or on orders of court.”

গ্রেপ্তারের অভিধান গত অর্থ “to bring to a standstill” “to check” “to seize” “to catch” “Fix” “to apprehend by legal authority” or “to seized by war- rant”

অনেকের মতে ইহা অনুমেয় ফ্রান্স শব্দ ‘এ্যারেস্টার’ থেকে এ্যারেস্ট শব্দের উৎপত্তি। Strouds এর ব্যাখ্যা অনুযায়ী arrest, is when one is taken and restrained from his liberty”. Bouvier’s এর মতে “Arrest – to deprive a person of his liberty by legal authority”. L.B. cuzzon (1979) মতে “To restrain and detain a per- son by lawful authority” যোগীন্দর কুমার বনাম উত্তর প্রদেশ সরকার এই মোকদ্দমায় আদালতের মন্তব্য। প্রত্যেক ক্ষেত্রেই গ্রেপ্তারের প্রয়োজনীয়তা থাকে না, যদিও পুলিশকে গ্রেপ্তারের ক্ষমতা প্রদান করা হইয়াছে। প্রতিটি গ্রেপ্তারের ক্ষেত্রে আইনি যৌক্তিকতার প্রয়োজন আছে। গ্রেপ্তারের ক্ষেত্রে ক্ষমতা থেকেও বেশি প্রয়োজন স্বাক্ষ্য। প্রমাণ ও আইনি দিক রুটিন গ্রেপ্তার ঠিক নই বা ছোট খাটো ঘটনায়ও ঠিক নয়। গ্রেপ্তার আইনি ও প্রমাণ সম্বলিত হওয়া প্রয়োজন। কিন্তু বিপজ্জনক অপরাধের ক্ষেত্রে যদিও ব্যতিক্রম।


অপর একটি ক্ষেত্রে আদালত মন্তব্য করেন আইন পুলিশ ও বিচারককে গ্রেপ্তারের ক্ষমতা প্রদান করেছে। অনেক সময় অনেক অপরাধের ক্ষেত্রে জনসাধারণও অপরাধীকে গ্রেপ্তার করতে পারেন এবং আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য পুলিশের কাছে হস্তান্তর করতে পারেন। ভারতীয় সংবিধানের আর্ট ২২(২) অনুযায়ী সময় শেষে গ্রেপ্তার সংবিধান বিরোধী। গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তিকে গ্রেপ্তারের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আদালতে সোপর্দ করিতে হইবে। যদিও পথের হিসেব বহির্ভূত। ভারতীয় সংবিধানের আর্ট ২২(১) অনুযায়ী গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তিকে তাহার গ্রেপ্তারের কারণ যত শীঘ্র সম্ভব জানাইতে হইবে। অকারণ বা যুক্তি বহির্ভূত গ্রেপ্তার BNS 2023 এর 258 ধারা অনুযায়ী শাস্তি যোগ্য।

যে কোন নাগরিক প্রতিকার পাওয়ার জন্য উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হতে পারেন, সংবিধানের আর্ট ২২৬ এবং ৩২ মতে। জীবনের অধিকার মর্যাদাসহ যা ভারতীয় সংবিধানের আর্ট ২১ মতে। যদি কোন ব্যক্তি “আর্মড ফোর্স স্পেশাল পাওয়ার্স অ্যাক্ট” ১৯৫৮ অনুযায়ী কোন সামরিক বা আধা সামরিক বাহিনী কর্তৃক গ্রেপ্তার হন, কর্তৃপক্ষের উচিত দ্রুত নিকটবর্তী থানার ভারপ্রাপ্ত কার্যকারকের কাছে হস্তান্তর করা, পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য। যদি অযথা কোন ব্যক্তিকে দীর্ঘসময় আইন বহির্ভূত আটক রাখে সেই ক্ষেত্রে আইন লঙ্ঘিত হয় এবং কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া যায়।

৫০ ধারা মতে জামিনযোগ্য অপরাধের ক্ষেত্রে পুলিশ অফিসার জামিনের জন্য বলিবেন, (Information of Right of bail under section 50)

“শীলা বরসে বনাম মহারাষ্ট্র সরকার” এই মোকদ্দমায় আদালত সুস্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছেন যে পুলিশ অফিসার গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তির নিকট হইতে তার বন্ধু বা আত্মীয়ের ঠিকানা নিয়ে সেই বন্ধু বা আত্মীয়কে গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তির গ্রেপ্তারের কারণ জানাইবেন। আইনের ১৭৬ ধারা মতে ধর্তব্য অপরাধের অপরাধে গ্রেপ্তারের পূর্বে বিষয় এবং তথ্য প্রমাণাদি সংগ্রহ প্রয়োজন। যাতে কোন নির্দোষ ব্যক্তি সাজা না পান। সামাজিক সুরক্ষার ক্ষেত্রে, স্বাধীনতা এবং নৈতিকতা, স্বাধীনতা এবং আইন, স্বাধীনতা এবং বিচার, স্বাধীনতা এবং সবার ভাল দেখা, স্বাধীনতা এবং দায়িত্ব এই দিকগুলো গুরুত্বপূর্ণ।

(কার্তার সিং বনাম পাঞ্জাব সরকার)

উপরোক্ত বিষয়গুলো ছাড়া স্বাধীনতা একা দাঁড়ানো সম্ভব নয়। কোন আর্থিক দিক দিয়ে গরিব অভিযুক্তের ক্ষেত্রে আইনি পরিষেবার কথা ভারতীয় সংবিধানের আর্ট ৩৯-এ এবং ১৪ এবং ২১ এ বর্ণিত। “জীবন এবং ব্যক্তি স্বাধীনতা” সংবিধানের আর্ট ২১। মর্যাদাসহ বাঁচার অধিকার, রাষ্ট্র কর্তৃক অত্যাচারের বিরুদ্ধে নিরাপত্তা এবং ব্যক্তি স্বাধীনতার সর্বোচ্চ মর্যাদা সম্পর্কে আদালতের সিদ্ধান্ত। (ডঃ হিদায়েত হোসেন খান বনাম উত্তর প্রদেশ সরকার এবং নূর মহম্মদ বনাম উত্তর প্রদেশ সরকার)।


মানব সভ্যতায় যে অধিকার আমরা মর্যাদাসহ বাঁচতে পারি তাকেই মানব-অধিকার বলা হয়। মানুষের অধিকার সম্পর্কে যদি পেছন ফিরে দেখি তার শুরু মাগনা কার্টা (১২১৫, এ.ডি), অধিকারের দরখাস্ত (১৬২৭ এ.ডি), অধিকার বিল (১৬৮৮), প্রথম ইংল্যান্ডে। মানুষের অধিকারের ঘোষণা (১৭৮৯) ফ্রান্সের জাতীয় অ্যাম্বেলিতে। ১৯ সেঞ্চুরিতে অধিকার মানুষের মুখ্য নীতি হিসেবে আধুনিক সভ্য রাষ্ট্রে পরিগণিত হয়। ডিসেম্বর ১০, ১৯৪৮ অধিকার সম্পর্কিত আন্তর্জাতিক ঘোষণা। সামাজিক ও সংস্কৃতির অধিকার আসে ৩রা জানুয়ারি, ১৯৭৬। আন্তর্জাতিক কনভেনশনে রাজনৈতিক অধিকার আসে ২৩শে মার্চ, ১৯৭৬। ভারত মানব-অধিকার বিষয়ক আন্তর্জাতিক ঘোষণাপত্রে সম্মতি প্রদানকারী এক অন্যতম রাষ্ট্র। ভিয়েনা ঘোষণা ২৫শে জুন, ১৯৯৩, বিশ্ব সম্মেলনে মানুষের অধিকার ঘোষিত। মানুষের অধিকার এবং মৌলিক স্বাধীনতা মানুষের জন্মগত অধিকার। যার প্রেক্ষিতে গ্রেপ্তার সম্পর্কিত নিম্ন বিষয়গুলো আলোচিত…


১) যদি কোন ব্যক্তি তার পরিচয় গোপন করে তার বিরদ্ধে সমন জারি করা যাইতে পারে।

২) কোন অপরাধ নিবারণ করতে বা আটকাইতে গ্রেপ্তার করা যাইতে পারে।

৩) কোন ব্যক্তিকে রক্ষা করতে বা সম্পত্তি রক্ষা করতে।

৪) গ্রেপ্তার এর পূর্বে স্বাক্ষ্য প্রমাণাদি অত্যন্ত আবশ্যক।

৫) কোন ব্যক্তির বিরুদ্ধে চার্জ গঠন হইলে এবং আদালতে হাজির না হইলে, তাকে আদালতের আদেশ ক্রমে গ্রেপ্তার করা হইবে।

গ্রেপ্তার ধর্তব্য অপরাধের তদন্ত চলাকালে প্রমাণের ভিত্তিতে গ্রেপ্তার করাকে যুক্তিসঙ্গত

বলা হয়ে থাকে। যেমন-

১) গুরুতর অপরাধ যেমন খুন, ডাকাতি, দস্যুতা, ধর্ষণ ইত্যাদি, যেখানে গ্রেপ্তারের প্রয়োজনীয়তা আছে যাতে অপরাধী স্বাক্ষ্য প্রমাণ লোপাট না করতে পারে এবং আক্রান্তকে কান ভয়ভীতি প্রদর্শন করতে না পারে।

২) ঘৃণ্য অপরাধে জড়িত অভিযুক্ত পলায়ন করতে পারে এবং আইনি প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করতে পারে।

৩) অপরাধীর উচ্ছৃঙ্খল ব্যবহার এবং পুনরায় কোন অপরাধ সংগঠিত করতে পারে।

৪) অপরাধী পেশাগত অপারধী এবং পুনরায় অপরাধ সংগঠিত করতে পারে এই সব ক্ষেত্রে অপরাধীকে গ্রেপ্তার ও কাস্টডিতে রাখার প্রয়োজন।

তথ্য, প্রমাণ ও যৌক্তিকতা ছাড়া গ্রেপ্তার অনৈতিক।

স্ত্রীলোক গ্রেপ্তারের ক্ষেত্রে মহিলার পবিত্রতা রক্ষা করা আবশ্যক এবং BNSS এর 148, 149, 150,

175,176,43,58,187 ধারা পরিলক্ষিত করা আবশ্যক, অনৈতিক গ্রেপ্তার ও নির্যাতন

শাস্তি ও জরিমানা উভয় হইতে পারে। ব্যক্তি জীবনের গোপনীয়তা সংবিধানের আর্ট ২১ মোতাবেক স্বীকৃত। প্রত্যেক ব্যক্তির তার ব্যক্তি জীবনের এবং পারিবারিক জীবনে গোপনীয়তা রক্ষার অধিকার আছে।


(আর, রাজাগোপাল বনাম তামিলনাড়ু সরকার)

In Malak Singh vs State of Pubjab and Haryana, where in Hon’ble Mr. Justice Chinnappa Reddy speaking on behalf of Bench observed that :-

“But surveillance may be intrusive and it may so seriously encroach on the Privacy of a citizen as to infringe his fundamental right to personal liberally guarantied by article 21 of the constitution and the freedom of movement guar- anteed by article 19(1)(d). This cannot be permitted.”

সুনীল বাটরা বনাম দিল্লি প্রশাসন, সর্বোচ্চ আদালত এই মামলার সিদ্ধান্তে উল্লেখ করেছেন যে জীবনের অধিকার মানে জীবন পাশাপাশি মর্যাদা এবং কয়েদিকেও হ্যান্ডকাপ লাগানো যাবে না। (সংবিধান আর্ট ২১), সংবিধান অনুযায়ী একজন কয়েদির ও তার অধিকার আছে।

তাছাড়াও কাস্টডিতে নির্যাতন মানুষের মর্যাদার প্রতি অবমাননা, হ্যান্ডকাপিং এর ক্ষেত্রে আদালতে কারণসহ আবেদন করা যাইতে পারে। এই সব ভারতীয় সংবিধানের আর্ট ২১ এর বিরুদ্ধে কার্যকলাপ বলেই গণ্য হয়। এই ক্ষেত্রে আদালত সুস্পষ্ট মন্তব্য করেছেন “সুনীল গুপ্তা বনাম মধ্যপ্রদেশ সরকার” এবং ‘দিল্লি জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন বনাম গুজরাট সরকার’ মামলায়। সঠিক সময়ে এফ.আই.আর রেজিস্ট্রি না করলে সেই অফিসারের জরিমানা হতে পারে। “ইন্দর সিং বনাম পাঞ্জাব সরকার” এই মোকদ্দমায় আদালত এই উক্তি করেন এবং দোষী অফিসারের বিরুদ্ধে জরিমানা করা হয়।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *