ডেস্ক রিপোর্টার,১০ ডিসেম্বর।।
শ্রী শ্রী রামঠাকুরের “দীক্ষা” দেওয়ার ঘটনা কেন্দ্র করে তুলকালাম কান্ড প্রতাপগড় রামঠাকুর সেবা আশ্রমে। আশ্রম কর্তৃপক্ষের বেলাল্লাপনার জন্য ঠাকুরের দীক্ষা নিতে এসে অসুস্থ হয়েছে পাঁচজন অন্তঃসত্ত্বা মহিলা।ভিড়ে ঠাসা মন্দিরে এক অন্তঃসত্ত্বা মহিলা মেঝেতে পড়ে যান।তার পেটের উপর পা দিয়ে চাপিয়ে যায় দীক্ষা নিতে আসা ভক্তরা।গোটা মন্দির চত্বরে সৃষ্টি হয় এক চরম বিশৃঙ্খলা।ভক্তদের সঙ্গে হাতাহাতি হয় মন্দিরের কাজের সঙ্গে জড়িত লোকজনের। পুরো ঘটনার জন্য উপস্থিত ভক্তরা দায়ী করছেন মন্দির কর্তৃপক্ষকে।
বুধবার বাংলাদেশের কৈবল্যধাম থেকে
প্রতাপগড় রাম ঠাকুর আশ্রমে আসেন সপ্তম মোহন্ত মহারাজ কালিপদ ভট্টাচার্য। পূর্ব নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার সকাল নয়টা থেকে মোহন্ত মহারাজ দীক্ষা দান প্রক্রিয়া শুরু করেন।অনেক দূর-দুরন্ত থেকে ভক্তরা আশ্রমে আসেন দীক্ষা নিতে। শুরু থেকে কর্তৃপক্ষের চরম গাফিলতির জন্য সৃষ্টি হয় এক বিশৃঙ্খলা পরিস্থিতি।দীক্ষা নেওয়ার জন্য আশ্রমের একটি রুমে প্রচুর ভক্তের সমাগম ঘটে।একেবারেই শ্বাস ফালানোর জায়গা নেই। ছিলো না পুরুষ-মহিলার পৃথক লাইন।স্বাভাবিক ভাবেই ভিড়ে ঠাসা ছোট ঘরের মধ্যে ভক্তদের নাজেহাল হতে হয়।
রাজ্যে এখনো লাগু রয়েছে করোনা বিধি।গোটা দেশে বাড়ছে ওমিক্রনের আস্ফালন।ত্রিপুরাও ওমিক্রনের রাডারের বাইরে নয়। তা সত্ত্বেও আশ্রম কর্তৃপক্ষ আশ্রমে আসা ভক্তদের মধ্যে মাস্ক বাধ্যতামূলক করে নি। আশ্রমে দীক্ষা নিতে আসা ভক্তদের মধ্যে দৈহিক দূরত্বের কোনো বালাই ছিলো না। ছিলো না আশ্রমের ভলান্টিয়ার। গাদাগাদি করে মানুষকে ছোট ঘরে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছে।এদিন বেশ কয়েকজন অন্তঃসত্ত্বা মহিলা আশ্রমে এসেছিলেন দীক্ষা নিতে। কিন্তু আশ্রমের অব্যবস্থার জন্য ভিড়ে ঠাসা ঘরে একে একে অন্তঃসত্ত্বা মহিলারা অসুস্থ হয়ে পড়েন। শেষ পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট মহিলারা ঠাকুরের দীক্ষা না নিয়ে বাড়িতে চলে যান। ভিড়ে ধাক্কাধাক্কির সময় এক অন্তঃসত্ত্বা মহিলা মেঝেতে পড়ে যান।তখন মহিলার পেটে অন্যদের পায়ের চাপ পড়ে।এই মহিলার চিৎকারে চমকে উঠে উপস্থিত ভক্তরা।শেষ পর্যন্ত মহিলাকে তড়িঘড়ি টম-টম এনে হাসপাতালে নিয়ে যায়।
ভক্তদের বক্তব্য, এমন দিনে আশ্রম কর্তৃপক্ষ ইচ্ছা করলে একটি মেডিক্যাল টিম রাখতে পারতো।তাছাড়া একটি এম্বুলেন্সের ব্যবস্থা রাখতে পারতো। কিন্তু আশ্রম কর্তৃপক্ষ তা করে নি।শুধুমাত্র আশ্রমকে সামনে রেখে ঠাকুরের নামে ব্যবসা করাই আশ্রমের দন্ডমুন্ডের কর্তাদের মূল উদ্দেশ্য। তাদের খামখেয়ালিপনার জন্যই মূলত এধরণের ঘটনা সংঘটিত হয়েছে। অন্তঃসত্ত্বা মহিলা মেঝেতে পড়ে যাওয়ার পর হুঁশ ফিরে আশ্রম কর্তৃপক্ষের।তখন চাপের মুখে ভক্তদের লাইনে দাঁড়ানোর জন্য অনুরোধ করে।কিন্তু ততক্ষণে অনেক কিছু ঘটে যায়।
অনেক ভক্তরা অভিযোগ করেন,দীক্ষা নেওয়ার পর তাদের খিচুড়ি প্রসাদ দেওয়া হয়।তাও আবার বাণিজ্যিক কায়দায় ভক্তদের হাতে কুপন ধরিয়ে দেওয়া হয়। ভক্তদের এক ঘন্টা বসিয়ে প্রসাদ দেওয়া হয় এক হাতা করে।অথচ এই সমস্ত ভক্তরা আশ্রমে এসেছিলো সকাল সকাল।কিন্তু নম: বিষ্ণু করে এক হাতা খিচুড়ি দিয়ে দেওয়া হয়।কেন এই অবস্থা? ইচ্ছা করলে আশ্রম কর্তৃপক্ষ দীক্ষা নিতে আসা ভক্তদের ভর পেট খিচুড়ি খাইয়েই দিতে পারতো।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *