ডেস্ক রিপোর্টার,১৫মার্চ।।
আগামী বছর বিধানসভা নির্বাচনে বড় ফ্যাক্টর হবে তিপ্রামথা। প্রদ্যুতের দিকেই ফোকাস বাড়ছে রাজ্য রাজনীতি অলিন্দে থাকা দণ্ডমুণ্ডের কর্তাদের। প্রদ্যুতকে নিয়ে বাড়ছে আতঙ্কও।অর্থাৎ প্রদ্যুত যেদিকে ঝুঁকবে সেদিকে ভারী হবে পাল্লা। আপাত দৃষ্টিতে রাজনীতির রসায়ন এটাই বলছে।
প্রদ্যুত যদি বিজেপি’র সঙ্গে হাত না মেলান, তাহলে গেরুয়া শিবিরকেও হ্যাপা পোহাতে হবে।বর্তমান পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করলে এমনটাই মনে হবে।তবে যেকোনো সময় রাজনীতির রঙ পাল্টে যেতে পারে,এটাও বাস্তব।
রাজনীতিকরা বলছেন, পাহাড়ে প্রদ্যুতকে চাপে ফেলতেই নতুন সমীকরণ করছে বিজেপি।পাহাড় রাজনীতির জন্য ‘ত্রিপুরা পিপলস ফ্রন্ট’কে হাতিয়ার করছে বিজেপি। গত কয়েকমাস আগে খুমুলুঙ’র তিপ্রামথা ও ত্রিপুরা পিপলস ফ্রন্টের(টিপিএফ) মধ্যে ঘটে যাওয়া সংঘাতই এই আভাস দিয়েছিলো। প্রদ্যুতের বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলো টিপিএফ। প্রদ্যুতকে হাতজোড় করে ক্ষমা চাইতে হয়েছিলো।
রাজনীতিকদের ব্যাখ্যা, টিপিএফের সঙ্গে সখ্যতা বাড়ছে বিজেপি’র। টিপিএফ নেত্রী পাতাল কন্যাকে রাজনৈতিক কারণে গুরুত্ব দিচ্ছে গেরুয়া শিবির। কারণ প্রদ্যুতকে আটকাতে পাতালকে ব্যবহার করার পরিকল্পনা নিয়েছে বিজেপি নেতৃত্ব।এই কারণেই সোমবার পাতাল কন্যা তাঁর লোকজন নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর দ্বারস্থ হয়েছিলেন। মঙ্গলবার পাতালকন্যা জমতিয়া ছুটে যান আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মার দরবারে। পাতাল কন্যা পর পর ত্রিপুরা ও আসামের মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ পর্ব রাজনৈতিক ভাবে যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। রাজ্যের পাহাড় রাজনীতিতে যে গোপনে চলছে নতুন ভোট সমীকরণ তা বলার অপেক্ষা রাখে না।এমনটাই বলছেন রাজনীতিকরা।অর্থাৎ পাহাড়ে প্রদ্যুতের তিপ্রামথার সমান্তরাল দল খাড়া করতে চাইছে বিজেপি।ইতিমধ্যে রাজ্যের জনজাতি ভিত্তিক সিংহ ভাগ দল প্রদ্যুত কিশোরের মথার সঙ্গে মিশে গেছে। বাকি রয়েছে বিজেপি’র শরিক দল আইপিএফটি ও পাতাল কন্যার টিপিএফ। এই মুহূর্তে পাহাড়ে আইপিএফটি শুধু মাত্র সাইনবোর্ড সর্বস্ব। আইপিএফটির তৃণমূল স্তরের নেতা-কর্মীরা প্রদ্যুত কিশোরের তিপ্রামথার স্রোতে মিশে গেছে।বাকি রয়েছে দলের মন্ত্রী- বিধায়করা। বৃষকেতু দল ও বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন আগেই।তিনি আনুষ্ঠানিক ভাবে যোগ দিয়েছেন মথাতে।তবে বৃষকেতুর ইস্তফা এখনো গৃহীত হয়নি।
আগামী বিধানসভা নির্বাচনে আইপিএফটি তার ক্ষয়িষ্ণু শক্তি নিয়ে যে বিশেষ কিছু করতে পারবে না,তা বলার অপেক্ষা রাখে না।এটা বিলক্ষণ বুঝতে পেরেছে বিজেপি নেতৃত্ব। তাই পাহাড়ে প্রদ্যুতকে কাটার জন্য আইপিএফটির বিকল্প হিসেবে টিপিএফকে তুলে আনার চেষ্টা করছে বিজেপি। সেই রোডম্যাপ অনুযায়ী কাজ করতে শুরু করেছে গেরুয়া শিবির।
রাজনীতির প্রাজ্ঞদের বক্তব্য, এই মুহূর্তে পাহাড়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে তিপ্রামথা।যেকোনো রাজনৈতিক দলের কাছে প্রদ্যুতের এই সংগঠন ঈর্সার বিষয়। গত ১২মার্চ প্রদ্যুত বুঝিয়ে দিয়েছেন তিনি ২৩-র নির্বাচনে “কথা বলবেন।” যদি শেষ পর্যন্ত প্রদ্যুতের সঙ্গে বিজেপি’র কোনো সমঝোতা না হয়,তাহলে পাহাড়ে বিকল্প রাজনৈতিক দলের প্রয়োজন হবে।আর বিকল্প দলই হবে টিপিএফ।কিন্তু প্রদ্যুতের শক্তির কাছে পাতাল কন্যার টিপিএফ কতটা কার্যকরী ভূমিকা পালন করতে পারবে? আক্ষরিক অর্থে পাহাড়ে টিপিএফ কি প্রদ্যুতের বিকল্প শক্তি হিসেবে মাথা তুলে দাঁড়াতে পারবে?” এই সমস্ত অজস্র প্রশ্ন উঁকি দিচ্ছে রাজনৈতিক মহলে।
