
কদমতলা ডেস্ক,১১জুলাই।।
রাজ্য জুড়েই ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে নেশা কারবারের চাইরা। সর্বত্রই তাদের বিচরণ। এবার নেশার আড়ত গড়ে উঠেছে খোদ মুদি দোকানে।ঘটনা উত্তর জেলার কদমতলা থানাধীন মহেশপুর বাজারে। পুলিশ দোকানের মালিক নুরুদ্দিনকে গ্রেফতার করেছে। তার দোকান থেকে পুলিশ ইয়াবা ট্যাবলেটের
এগারো প্যাকেট উদ্ধার করে। প্যাকেট ট্যাবলেটের মোট সংখ্যা ছিলো ১৯২৫টি। অভিযানকারী পুলিশের দাবি, উদ্ধারকৃত ট্যাবলেটের বাজার মূল্য ১০লক্ষ টাকা।
গোটা উত্তর জেলাতেই নেশা ব্যবসার রমরমা। সীমান্তবর্তী গ্রামগুলিতে মাশরুমের মতো ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে নেশা কারবারের চাইরা। প্রায় প্রতিদিন নিয়ম করেই উত্তর জেলার সীমান্ত এলাকাগুলো দিয়ে চলে নেশা সামগ্রীর পাচার বাণিজ্য। পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট জায়গা গুলিও হয়ে উঠেছে নেশা ব্যবসার হটস্পট।
উত্তর জেলার কদমতলা থানার সীমান্তবর্তী এলাকা মহেশপুর। মহেশপুরে বাজারের বুক চিরেই ভাগ হয়েছে ভারত – বাংলাদেশ সীমান্ত। এপারে ভারত ভূখণ্ড।ওপারে বাংলাদেশ। পাচার বাণিজ্যের জন্য একেবারেই উৎকৃষ্ট ভূমি বলা চলে। এই মহেশপুর বাজারেই নেশার আড়তদাররা সক্রিয়। মহেশপুর বাজারের ব্যবসায়ী নুরুদ্দিন। সে মূলত মুদি পণ্যের বিক্রেতা। তার বাড়ি স্থানীয় সরলা পঞ্চায়েতের পুরান গারদ গ্ৰামের ৫নম্বর ওয়ার্ডে।

কদমতলা পুলিশের বক্তব্য, নুরুদ্দিন দীর্ঘদিন ধরেই এলাকাতে নেশার ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। দোকানে মুদি জাতীয় পণ্যের অন্তরালে নানা রকম ট্যাবলেট, কফ সিরাপ , হিরোইন ও ব্রাউন সুগারের মতো ড্রাগস মজুত করছে। এই সমস্ত নেশার সামগ্রী নুরুদ্দিন প্রায় প্রতিদিন রাতের আঁধারে সীমান্তের ওপারে পাচার করে। শুধু কি তাই, গোটা মহেশপুর এলাকা তার আরো ব্রাঞ্চ ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। এই সমস্ত ব্রাঞ্চেও সে পাঠিয়ে দেয় নেশা সামগ্রী। স্থানীয় যুবকদের কাছে এই সমস্ত ড্রাগস বিক্রি হয় দেদার ।
সবমিলিয়ে গোটা মহেশপুরে নেশা ব্যবসার মৌসূরী পাট্টা খুলে বসে ছিলো নুরুদ্দিন।
প্রাপ্ত খবরের ভিত্তিতে শনিবার রাতে কদমতলা থানার পুলিশ নেশা কারবারি নুরুদ্দিনের দোকানে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক করে। পুলিশ তার দোকান থেকে উদ্ধার করে ইয়াবার ট্যাবলেটের ১১টি প্যাকেট। তাতে মোট ট্যাবলেটের সংখ্যা ছিল ১৯২৫টি। পুলিশের দাবি, উদ্ধারকৃত ট্যাবলেটের বাজার মূল্য ১০ লক্ষ টাকা। দোকানে থাকা অন্যান্য মুদি মালের সঙ্গে ইয়াবার ট্যাবলেটের প্যাকেট লুকিয়ে রেখেছিল ব্যবসায়ী নুরুদ্দিন। নুরুদ্দিন পুলিশকে জানিয়েছে, নেশা কারবার সম্পর্কে সে কিছুই জানে না। তার এক পরিচিত বন্ধু দোকানে এনে ইয়াবার ট্যাবলেটের প্যাকেট রেখে গিয়েছে। যদিও তার এই বক্তব্য পুলিশের কাছে হাস্যকর।

পুলিশ স্পষ্ট দাবি করেছে, এই সমস্ত নেশা সামগ্রী একটা অংশ সীমান্তের ওপারে পাচারের পরিকল্পনা ছিল। অপর অংশ এপড়ে খুচরো ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রির সিদ্ধান্ত ছিল। পুরো ঘটনা ধাপা চাপা দেওয়ার জন্যই নুরুদ্দিন পুলিশের চোখে গোলক ধাঁধা বাধানোর চেষ্টা করেছিল। যদিও পুলিশ তার ছলছাতুরি বুঝে গিয়েছিল। এবং তাকে গ্রেফতার করে নিয়ে এসেছিলো থানায়। পুলিশের টানা জিজ্ঞাসাবাদে, ব্যবসায়ী নুরুদ্দিন স্বীকার করে আরো বেশ কয়েকজন তার সঙ্গে রয়েছে।তাদের নামও পুলিশের কাছে উগলে দিয়েছে নুরুদ্দিন। কদমতলা থানার পুলিশ নুরুদ্দিনের বিরুদ্ধে এনডিপিএস আইনের ৮/২২(সি)ও ২৫ ধারায় মামলা (৪৬/২২) রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে।