ডেস্ক রিপোর্টার, ৩রা আগষ্ট।।
শহর – সমতলে বিজেপি ও কংগ্রেস। গ্রাম – পাহাড়ে বিজেপি ও তিপ্রামথা। মাঝখানে অল্প সময়ের জন্য অবশ্যই চিত্রটা ছিলো একটু অন্য রকম। সংঘর্ষের বারুদের মুখে ছিলো বিজেপি ও তৃণমূল কংগ্রেস। শহর – সমতলে, পুর ও নগর ভোটে।
এই হট রাজনৈতিক সংঘর্ষের সমীকরণে কোথায়ও খুঁজে পাওয়া যায় নি, রাজ্য রাজনীতির এক সময়ের দানবীয় সংগঠন সিপিআইএমকে। তারা যেন সংঘর্ষের ময়দান থেকে অনেকটাই দূরে সরে দাড়িয়ে আছে। এবং মাঠের সাইড লাইনে বসে উপভোগ করছে বিজেপি – মথা, বিজেপি – কংগ্রেসের লড়াই।
রাজ্য রাজনীতিতে দীর্ঘ সময় ছিল দুই দলীয় লড়াই। লড়াইয়ের মূল অলিন্দে থাকত সিপিআইএম এবং কংগ্রেস। ১৮র বিধানসভা নির্বাচনে রাজ্য রাজনীতির তৃতীয় বিকল্প শক্তি হিসেবে মাথাচারা দেয় বিজেপি। মাত্র আড়াই বছরের লড়াইয়ের ২৫ বছরের বাম দুর্গকে তছনছ করে দেয় গেরুয়া শিবির। এরপর থেকেই রাজ্য রাজনীতির দীর্ঘদিনের ঐতিহ্য দুই দলীয় সমীকরণে বদল ঘটে। পাহাড়েও একই অবস্থা। বামেদের পতনের মধ্য দিয়ে উত্থান হয়েছিলো আইপিএফটির। অর্থাৎ শহর – সমতলের মতো গ্রাম – পাহাড়েও রাজনৈতিক সমীকরণে নতুনত্ব আসে। বিজেপি – আইপিএফটি সরকার গঠনের প্রথম দিকে শহর – সমতলে বিজেপির টার্গেট পয়েন্টে ছিলো বামেরা। আবার পাহাড়েও আইপিএফটির আক্রমণের ফলায় ছিলো কমিউনিস্টরাই।


সর্বশেষ এডিসি নির্বাচনে এই রীতির বদল ঘটে। পাহাড়ে উত্থান ঘটে প্রদ্যুৎ কিশোরের তিপ্রামথার। সরাসরি পাহাড় রাজনীতিতে বিজেপি ও আইপিএফটি জোটের সঙ্গে লড়াই শুরু হয় মথার। এই লড়াইয়ে পাহাড়ে বিজেপি তার বিস্তার ধরে রাখতে পারলেও মথার রোষে চুপসে যায় আইপিএফটি। স্বাভাবিক ভাবেই পাহাড় রাজনীতিতে লড়াইয়ের মূল অলিন্দে চলে আসে বিজেপি ও তিপ্রামথা।
সাম্প্রতিককালে পাহাড়ে ৯৯ শতাংশ রাজনৈতিক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।বিজেপি ও তিপ্রামথার মধ্যেই। মাঝখান থেকে উধাও হয়ে গেছে পাহাড়ের দীর্ঘদিনের দখলদার কমিউনিস্টরা।
পাহাড় রাজনীতির প্রভাব পড়ে শহর- সমতলেও। পুর ও নগর ভোটে বিজেপির সন্মুখ সমরে ছিলো তৃণমূল কংগ্রেস। কিন্তু তৃণমূল কয়েকদিনের মধ্যেই লজ্জাবতি গাছের চুপসে যায়। বিজেপি ছেড়ে বেরিয়ে আসেন সুদীপ রায় বর্মন ও আশীষ কুমার সাহা।তারা যোগ দেন কংগ্রেসে।তাতেই সংঘর্ষের রাজনীতিতে তৈরি হয় নতুন ক্লাইম্যাক্স। রাজনৈতিক সংঘর্ষের বৃত্তে চলে আসে বিজেপি ও কংগ্রেস। কমিউনিষ্টদের যেন দূরবীন দিয়েও খোঁজে পাওয়া যায় না এই বৃত্তে।শাসক বিজেপিও তাদের টার্গেটের আতশ কাঁচে কংগ্রেসকে ধরে যেন জাল বুনছে।কিন্তু এই দুই দলের লড়াইয়ে বামেরা নিজেদের স্ক্রিনের বাইরে নিয়ে গিয়ে পরখ করছে গোটা ঘটনা। এবং দিচ্ছে জম্পেশ হাততালি। আর অঙ্ক কষছে ২৩-র ভোট যুদ্ধে প্রতিপক্ষ দলগুলিকে পেছনে ফেলে ফের ক্ষমতা দখলের। এই মুহূর্তে দূর থেকে খেলা দেখে পরবর্তী কৌশল ঠিক করাই হবে বুদ্ধিমানের কাজ।বলছেন রাজনীতিকরা।আর এটাই করছে বাম নেতৃত্ব।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *