ডেস্ক রিপোর্টার, ৭আগষ্ট।।
“দেশের মধ্যে যে রাজনৈতিক দল নিজেদের বিজেপি’র প্রধান বিরোধী দল হিসেবে দাবি করে। তারাই দফায় দফায় বৈঠক করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে। কংগ্রেস নেতৃত্বের বিরুদ্ধে যখন সিবিআই, ইডি অভিযান চালায় তখন তারা থাকে মোদীর দরবারে।”….. বক্তা কংগ্রেস বিধায়ক সুদীপ রায় বর্মন।রবিবার আগরতলায় রাজ্য কংগ্রেসের সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত মেগা যোগদান সভায় একথা বলেন তিনি। সুদীপ রায় বর্মন তার এই বক্তব্যের মাধ্যমে কোন রাজনৈতিক দলকে ইঙ্গিত করেছেন? রাজনীতিকদের কাছে তা সহজেই অনুমেয়।
রাজনীতিকরা বলছেন, সুদীপ রায় বর্মন তার এই বক্তব্যের মাধ্যমে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করেছেন। কারণ সিবিআই, ইডি দফাওয়ারী হানায় যখন সোনিয়া গান্ধী বিপর্যস্ত, তখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দিল্লিতে নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বৈঠক করেন। এটাও বাস্তব মোদী – মমতার এই বৈঠক নিয়ে দেশজুড়েই চর্চা শুরু হয়েছে। অথচ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বরাবর বলে থাকেন একমাত্র তৃণমূল কংগ্রেসই হল বিজেপি’র প্রধান বিরোধী দল।
কংগ্রেস বিধায়ক সুদীপ রায় বর্মনের কথায়, সদ্য সমাপ্ত উপর রাষ্ট্রপতি নির্বাচনেও এই রাজনৈতিক দলটি ভোট দানে বিরত থাকে। এই কার্যকলাপ থেকেই রাজনৈতিক দলটির উদ্দেশ্য স্পস্ট। সুদীপ রায় বর্মনের ভাষায়,একমাত্র কংগ্রেসই হল বিজেপি’র বিকল্প শক্তি। বিজেপি’র বিরুদ্ধে একমাত্র কংগ্রেসই ধারাবাহিক আন্দোলন বজায় রাখছে। সুদীপ রায় বর্মনের ব্যাখ্যা, এই রাজনৈতিক দলের উপর অর্থাৎ তৃণমূলের উপর মানুষ আস্থা হারিয়ে ফেলছে। তারা যোগদান করছে কংগ্রেসের। তার জ্বলন্ত দৃষ্টান্ত প্রদেশ তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক বাপটু চক্রবর্তী।
প্রদেশ কংগ্রেস নেতা আশীস কুমার সাহা তার বক্তব্যে তৃণমূল কংগ্রেসকেই আঘাত করে তিনি বলেন, মাঝখানে রাজ্যে মাথাচারা দিয়ে উঠেছিল তৃণমূল। মানুষ বিশ্বাস করেছিল তাদের।কিন্তু অল্প কিছুদিনের মধ্যেই তৃণমূল কংগ্রেস মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে। ভঙ্গ করে বিশ্বাস। স্বাভাবিকভাবেই রাজ্যের মানুষ তৃণমূলের প্রতি আস্থা হারিয়ে ফেলে। তাদের কাছে একমাত্র বিকল্প শক্তি হয়ে উঠে কংগ্রেস। এই কারণেই মানুষ কংগ্রেসের যোগ দিচ্ছেন। আশীস কুমার সাহা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কটাক্ষ করে বলেন, এই দলেও চলছে একনায়কতন্ত্র। একজন মহিলা তার মর্জি মাফিক যা বলবে, সেই অনুযায়ী চলবে দল। বাস্তব অর্থে মানুষ এই ধরনের নেতৃত্বের পাশে থাকতে চায় না।এ কারণেই রাজ্যেও ধরাশায়ী হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস।
এদিনের কংগ্রেসের যোগদান সভায় রাজধানীর বিভিন্ন বিধানসভা কেন্দ্র থেকে বিজেপি তৃণমূল ও সিপিএম থেকে ২৫২৭জন নেতা – কর্মী কংগ্রেসে যোগ দিয়েছে। বড়দোয়ালী, বাঁধারঘাট, বনমালীপুর, প্রতাপগড়,খয়েরপুর,রামনগর, বড়জলা ও বামুটিয়া বিধানসভা কেন্দ্র থেকে মানুষ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ছেড়ে কংগ্রেসে শামিল হয়েছেন। তাদের মধ্যে বিভিন্ন স্তরের দুই শতাধিক নেতৃত্ব রয়েছে। দাবি কংগ্রেস শিবিরের।প্রদেশ কংগ্রেসের জন্য এদিনটি ঐতিহাসিক। এদিন ছিলো কংগ্রেস নেতা তথা রাজ্যের প্রথম মুখ্যমন্ত্রী শচীন্দ্র লাল সিংয়ের জন্ম বার্ষিকী। তাই এদিনের যোগদান সভার মঞ্চটির কংগ্রেস নামকরণ করেছে “শচীন্দ্রল সিং মঞ্চ।”
প্রসঙ্গত প্রদেশ তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক বাপটু চক্রবর্তী যোগ দিচ্ছেন কংগ্রেসে। এই খবর সর্বপ্রথম সম্প্রচারিত করেছিল “জনতার মশাল”। রবিবার বাপটু কংগ্রেসের যোগ দেওয়ার পর ফের জনতার মশাল ‘র খবরের সত্যতা প্রকাশ পেল অর্থাৎ আবারও সত্যের দৃষ্টান্ত স্থাপন করল “জনতার মশাল”।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *