।।ভূঁইফোড় আইনজীবী গোপাল সিং।।

ডেস্ক রিপোর্টার, ২৩ডিসেম্বর।।
           মুহুরি অমিত আচার্য্য হত্যা মামলায় ফের নয়া ক্লাইম্যাক্স।ধৃত গোপাল সিংকে আইনজীবী বলে
  দাবী করেছিলো তদন্তকারী পুলিশ।বাস্তবে ধৃত গোপাল সিং আইনজীবীই নন। নিজেকে আইনজীবী পরিচয় দিয়ে আদালতকে ঠকিয়েছে গোপাল সিং।
এখন পর্যন্ত ত্রিপুরা বার  গোপালকে দেয়নি সনদ।
আইন ব্যবসার জন্যও গোপালকে দেয় নি প্র্যাকটিস সার্টিফিকেট।তারপরও গোপাল সিং একজন আইনজীবী?গোপাল ব্যবহার করছেন
আইনজীবীদের ড্রেস কোডও।স্বাক্ষর করছেন বিভিন্ন
মামলার উকালত নামায় ?ছি: ছি:, লজ্জিত আদালতের মূল স্রোতের আইনজীবীরা।

।।খুন হওয়া অমিত আচার্য।।

চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসে আগরতলা জেলা ও দায়রা আদালতে  খুন হয়েছিলেন মুহুরি অমিত আচার্য্য। অনেক টালবাহানার পর অমিত হত্যাকান্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ গোপাল সিং নামে এক যুবককে গ্রেফতার করেছিলো। গ্রেফতারের পর তদন্তকারী পুলিশ দাবী করেছিলো, ধৃত গোপাল সিং একজন আইনজীবী। ব্যাস, একজন আইনজীবীকে জালে তুলে নিয়েছে পুলিশ। যেন অসাধ্য কে সাধন করেছেন। তাই গোপালকে গ্রেফতার করে পশ্চিম থানার  অনুসন্ধানকারী পুলিশ এই মামলার তদন্ত থেকে এক প্রকার হাতই গুটিয়ে নিয়েছে।কারণ অমিত হত্যাকাণ্ডে জড়িত আরোও তিন আইনজীবী  অনির্বাণ লোধ, রাজেশ সরকার, বিভাস দেববর্মা এবং মুহুরি শিবজুৎ বড়ুয়া, সুদীপ দেবরা এখনোও পর্দার আড়ালে।

।।বাদবাকী অভিযুক্তরা।।

পুলিশ তাদেরকে স্পর্শ করার সাহস দেখাতে পারে নি। জেলার এসপি কিরণ কুমার থেকে থানার ওসি সবাই চূড়ান্ত ব্যর্থ।বাস্তব এটাই রাজধানীর “বীরপুঙ্গব’ পুলিশ বাদবাকী অভিযুক্তদের ইচ্ছাকৃত ভাবেই গ্রেফতার করে নি।
অন্তরালে গোপন সমঝোতার সমীকরণ। অমিত হত্যা মামলায় জড়িত বাদবাকি অভিযুক্তদের এখন পর্যন্ত কেন গ্রেফতার করা হচ্ছে না? শহরের পুলিশের তথাকথিত বাঘা বাঘা পুলিশ অফিসারা কি বড় মুখ করে এই প্রশ্নের উত্তর দিতে পারবেন?অপেক্ষায় রইলো “জনতার মশাল”।


তদন্তকারী পুলিশ গোপালকে গ্রেফতার করে  বুক চাপড়িয়ে সাফল্যের ঢাক পিটিয়ে ছিলো। কিন্তু ধৃত গোপাল সিং যে আদতে একজন আইনজীবী নন, তা কি জানেন না এসপি কিরণ কুমার? পুলিশের এই ন্যাকার জনক ভূমিকা নিয়ে গুঞ্জন আদালত চত্বরেই। জেলা ও দায়রা আদালতে প্র্যাকটিসরত আইনজীবীদের কথায়, ধৃত গোপাল সিং ছিলো একজন মুহুরি। সম্প্রতি গোপাল  বহিঃ রাজ্যের একটি কলেজ থেকে এলবিবি পাশ করেন।


এলএলবি পাশ করলেই আদালতে গিয়ে মামলা করা যায় না। গায়ে জড়ানো যায় না কালা গাউন। গলায় লাগানো যায় না সাদা ব্যান। অর্থাৎ আইনজীবীদের ড্রেস কোড। তার জন্য একজন আইনজীবীকে প্রথমে সনদ নিতে হয়। তার জন্য ত্রিপুরা বার অ্যাসোসিয়েশনের একটি পরীক্ষায় বসতে হয়। পরীক্ষায় পাশ করলে দেওয়া হয় সনদ। তারপর দেওয়া হয় প্র্যাকটিস সার্টিফিকেট। কিন্তু অমিত হত্যা মামলায় ধৃত গোপাল সিংয়ের কিছুই নেই।  খোদ সিনিয়র আইনজীবীরাই উগলে দিয়েছেন এই তথ্য।


চমকে যাওয়ার মতো ঘটনা, খোদ আইন – আদলত ও সর্বোপরি বিচার ব্যবস্থার প্রকোষ্ঠে বসেই গোপাল একের পর এক ছুরি মারছে।গোপাল সিং একজন পরিপক্ক আইন ব্যাবসায়ীর মতোই আদালতে মামলা লড়ছেন। আইনজীবীদের ড্রেস কোড, গলায় সাদা ব্যান ও গায়ে কালা গাউন জড়িয়ে গোপাল আদলতে বিচারকের সামনে যাচ্ছেন।

।।আইনজীবীদের ড্রেস কোড।।

স্বাক্ষর করছেন বিভিন্ন মামলার উকালত নামাতেও। জামিন করিয়ে নিচ্ছে বিভিন্ন অভিযুক্তের।ঘুরিয়ে বললে গোপাল সিং আদালতের সঙ্গেও করেছে প্রতারণা। তার বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার দায়ে মামলাও হতে পারে।বিশেষজ্ঞ আইনজীবীদের বক্তব্য।


কিন্তু বিড়ালের গলায় ঘন্টা বাঁধবে কে? আদালত চত্বরে প্রশ্ন উঠছে, ত্রিপুরা বার  অ্যাসোসিয়েশনের দায়িত্ত্ব প্রাপ্ত কর্তাদের ভূমিকা নিয়েও। কিভাবে ত্রিপুরা বারের দন্ডমুণ্ডের  কর্তাদের নজর এড়িয়ে গিয়েছে এই মারাত্বক বিষয়টি?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *