ডেস্ক রিপোর্টার,১২জুন।।
আগামী ২৩জুন রাজ্যের চার বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচন। উপভোটে জয়ের জন্য প্রতিটি রাজনৈতিক দল তাদের সর্বশক্তি নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছে। বিনা যুদ্ধে কেউ জমি ছাড়তে নারাজ।
কংগ্রেস-সিপিআইএম ও তৃণমূল কংগ্রেস উপভোটে বিজেপি সরকারের নানান দুর্নীতি ও প্রতিশ্রুতি খেলাপকে হাতিয়ার করে ভোট ময়দান গরম করছে। তাহলে বিরোধীদের জব্দ করতে শাসক দলের অস্ত্র কি হবে ? কোন অস্ত্রের শান দিয়ে চার কেন্দ্রে উপ ভোটে বাজিমাত করবে শাসক দল বিজেপি? এই প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে রাজনৈতিক মহলে।
রাজ্য বিজেপি নেতৃত্বের বক্তব্য, উপ ভোটে বিজেপি অস্ত্র হবে ” প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেবের সু-শাসন ও তাঁর চালু করা অর্ধ শতাধিক প্রকল্প”। বিপ্লব কুমার দেব মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সিতে বসে সাড়ে চার বছরে অর্ধ শতাধিক প্রকল্প ঘোষণা করেছিলেন। প্রতিটি প্রকল্প এখন সচল।মানুষ সংশ্লিস্ট প্রকল্পের সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছে নিয়মিত। শহর থেকে সমতল,গ্রাম থেকে পাহাড় সর্বত্র মানুষ এই সমস্ত প্রকল্পের সুবিধা পেয়েছে। সঙ্গে আছে কেন্দ্রের মোদী সরকারের নানান প্রকল্প।
গেরুয়া শিবিরের নেতৃত্বের কথায়, পূর্বতন বাম সরকার তাদের ২৫বছরের শাসন কালে যে করতে পারেনি, বরং বিপ্লব কুমার দেব তার চেয়ে অধিক করেছেন। কৃষকদের স্ব-সহায়ক মূল্যে ধান ক্রয়, রাজ্যের কৃষি ক্ষেত্রে বড় ‘বিপ্লব’ ঘটিয়ে ছিলেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। শিক্ষা ক্ষেত্রে সিবিএসই সিলেবাস, বিদ্যাজ্যোতি প্রকল্প থেকে শুরু করে উচ্চশিক্ষা স্তরে ছাত্র-ছাত্রীদের পড়াশুনার নানান সুযোগ করে দিয়েছেন বিপ্লব কুমার দেব। রাজ্যের ছাত্র-ছাত্রীরা এই এখন অনেক উপকৃত হয়েছে। স্বাস্থ্য ক্ষেত্রেও রাজ্যের অভূতপূর্ব উন্নতি হয়েছে।এখন মানব দেহের জটিল অপারেশনগুলি হচ্ছে আগরতলা মেডিকেল কলেজে। তাও অনেক কম খরচে।আগে মানুষকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ছুটে যেতে হতো বহিঃরাজ্যে। শাসক দলের নেতৃত্বের দাবি, রাজ্যে কমেছে রেফার সংখ্যা। গরীব মানুষের কাছে পৌঁছে গেছে আয়ুষ্মান ভারতের মতো স্বাস্থ্য বীমা। সঙ্গে “আয়ুষ্মান ত্রিপুরা” নামে রাজ্য সরকারও পৃথক স্বাস্থ্য বীমা চালু রয়েছে রাজ্যে।
বিজেপি’র নেতৃত্ব সটান জানিয়ে দিয়েছেন, পর্যটন ক্ষেত্রেও রাজ্যে ব্যাপক প্রসার ঘটেছে।তার পেছেন ছিলেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব। বিজেপি সরকার ক্ষমতায় আসার পর রাজ্যের পর্যটন কেন্দ্র গুলির উন্নয়ন হয়েছে। বেড়েছে দেশি-বিদেশি পর্যটকদের সংখ্যা। পর্যটন ক্ষেত্র থেকে বেড়েছে রাজ্যের আয়।
বিপ্লব কুমার দেবের নেতৃত্বাধীন সরকার পরিবহনের ক্ষেত্রেও প্রসার ঘটিয়েছে। রাজ্যে বেড়েছে জাতীয় সড়কের সংখ্যা। রেল পথ, সড়ক পথ ও বিমান পথে ঘটেছে উন্নয়ন। সুদৃঢ হয়েছে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক। বাংলাদেশের সঙ্গে সড়ক পথে বেড়েছে আমদানি-রপ্তানি। আনুষ্ঠানিক ভাবে জল পথে এসেছে সিমেন্ট।আগামী প্রসার ঘটবে এই জল পথের। চলতি বছরের শেষ লগ্নে চালু হবে আগরতলা-ঢাকা রেলপথ। বিমান পথেও বাংলাদেশের সঙ্গে সমৃদ্ধ হয়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থা। সবই বিপ্লব কুমার দেবের সময় কালে।
গোটা রাজ্যে বেড়েছে কর্ম সংস্থান।এখন পর্যন্ত দেওয়া হয়েছে ১৪হাজারের উপর সরকারি চাকরি। প্রচুর বেকার এখন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী দেখানো পথে আত্ম নির্ভর হয়েছে। বিপ্লব কুমার দেবের আত্মনির্ভর ত্রিপুরা থেকেই রাজ্যের যুবারা অনুপ্রাণিত হয়েছে। রাজ্যের প্রচুর যুবক ছোট ও মাঝারি শিল্প করে এখন স্ব-নির্ভর হয়েছে। দাবি গেরুয়া শিবিরের।
বিপ্লব কুমার দেবের সময়েই রাজ্যে কমেছে অপরাধের সংখ্যা। অপরাধ দমানোর জন্য গঠন করা হয়েছিলো ক্রাইম ব্রাঞ্চ। চালু করা হয়েছিলো বিট পেট্রোল। পুলিশের আধুনিকি করণ করা হয়েছে। রাজ্যের নেশা কারবারী হাড়গুর ভেঙে দেওয়া হয়েছে। সবেতেই বিপ্লব কুমার দেবের হাত।
ভোটের মুখে রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব বলেছেন, বিপ্লব কুমার দেবের সুশাসন ও তাঁর চালু করা প্রকল্পকে হাতিয়ার করেই উপভোটে লড়াই করবে বিজেপি।এবং চার কেন্দ্রে নেবে দখল। বিরোধীদের জব্দ করতে বিজেপি হাতিয়ার ‘বিপ্লব মডেল’ যথেষ্ঠ কার্যকর।