ডেস্ক রিপোর্টার, ২রা জুন।।
           শরীরে ইনজেকশনের সিরিঞ্জ পুশ করে ড্রাগস নিচ্ছে যুবক- যুবতীরা। এক সময় উত্তর – পূর্বাঞ্চলের মিজোরাম, মনিপুর ও মেঘালয়ে এই দৃশ্য দেখা যেতো। ত্রিপুরার ক্ষেত্রে এরকম দৃশ্য ছিল বিরল। কিন্তু এখন ব্যতিক্রম নয় ত্রিপুরা। শহর থেকে সমতল, গ্রাম থেকে পাহাড়। সর্বত্র এই সংক্রান্ত দৃশ্য দেখা যায়। খোদ দিন দুপুরে আগরতলার পুরানো মোটর স্ট্যান্ডে রাজপথে দাড়িয়ে যুবকরা তাদের শরীরে ইনজেকশন পুশ করে ড্রাগস নিচ্ছেন। এই দৃশ্য এখন অনেক বেশি সহজ লভ্য।

।।বিজ্ঞাপন।।

এই সমস্ত নেশা আসক্ত যুবকরা এখন রাজ্যের জন্য ডেকে আনছে ঘোর অশনি সঙ্কেত।প্রতিদিন তারা আলিঙ্গন করছে মারণ ব্যাধী এইডসকে। এমন হাড় হিম করা তথ্য উঠে আসছে ত্রিপুরা এইডস কন্ট্রোল সোসাইটির প্রাপ্ত রিপোর্ট থেকে।

।।ইনজেকশন পুশ করে ড্রাগস নিচ্ছে যুবক।।

ত্রিপুরা এইডস কন্ট্রোল সোসাইটির প্রাপ্ত তথ্য বলেছে, রাজ্যে নেশা আসক্ত যুবক – যুবতীদের মধ্যেই এখন এইচআইভি সংক্রমনের প্রকোপ বাড়ছে। রাজ্যের নেশা কারবারের আধুনিক সংযোজন “কৌটা”। এই কৌটাতেই বিক্রি হয় ব্রাউন সুগার, হেরোইনের মতো ড্রাগস। তাও আবার রাজপথে দিন দুপুরে।
স্বাস্থ্য দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী,রাজ্যে তড়িৎ গতিতে বাড়ছে এইডস আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা।বর্তমানে রাজ্যে এইডস রোগীর সংখ্যা চার সহস্রাধিক।
আগামী দিনে রাজ্যে শুরু হবে এডইস আক্রান্ত রোগীর মৃত্যুর মিছিল।এই আশঙ্কা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের ।


এক সময় ড্রাগস নেওয়ার কারণে এইচআইভি সংক্রমনের সংখ্যা উত্তর পূর্বাঞ্চলের মধ্যে প্রথম স্থানে ছিলো মনিপুর।এখন মনিপুরকে পেছনে ফেলে প্রথম স্থানে উঠে এসেছে ত্রিপুরা। শেষ সাত- আট বছরে ইনজেকশনের মাধ্যমে ড্রাগস নেওয়ার প্রবণতা যুব সমাজের মধ্যে প্রবল ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।অন্তত ত্রিপুরা ড্রাগস কন্ট্রোল সোসাইটির তথ্যই তার প্রমাণ।
এইডস কন্ট্রোল সোসাইটির তথ্য অনুযায়ী, ২০১৫- ১৬তে সারা রাজ্যে  ৯১২ জন ড্রাগস বেসনকারিকে সনাক্ত করে পরীক্ষা করা হয়েছিল।তাদের মধ্যে মাত্র ১১জনের শরীরে এইচআইভির সংক্রমণ ধরা পড়েছিল।


২০১৯- ২০ বর্ষে  ১৪১২জন ড্রাগস সেবনকারীকে
    সনাক্ত করে তাদের শারীরিক পরীক্ষা করেছিলো।তাতে দেখা যায় ১৪৩জনের শরীরে এইচআইভির সংক্রমণ। ২০২২- ২৩ – এ ৭৬৭ জন ড্রাগস আসক্ত মানুষকে পরীক্ষা করে ৭৬ জনের শরীরে এইচআইভির সন্ধান পাওয়া যায়। শতাংশের হিসাবে ১০শতাংশ।


ত্রিপুরা এইডস কন্ট্রোল সোসাইটির এই তথ্য থেকে পরিষ্কার হু হু করে রাজ্যে এইডস আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। সরকারী তথ্য অনুযায়ী, এই মুহূর্তে রাজ্যে মোট ৪০৩৭ জন এইডস আক্রান্ত রোগী রয়েছে। এটা কোনো ভাবেই শুভ লক্ষণ নয়।দিনের পর দিন ব্রাউন সুগার,হেরোইন সেবন করার প্রবণতা বাড়ছে যুব সমাজের মধ্যে। নাগরিকদের কথায়, পুলিশ প্রায়শই ব্রাউন সুগার,হেরোইন উদ্ধার করছে।


উদ্ধারকৃত ব্রাউন সুগার,হেরোইনের সংখ্যাটা খুব কম।এই কারণেই পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে কারবারীরা কৌটার মাধ্যমে ড্রাগস ব্যবসা ছড়িয়ে ছিটিয়ে দিয়েছে গোটা রাজ্যে। রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তরকে আরোও বেশি সচেতন হওয়া প্রয়োজন।নয়তো আগামী কয়েক বছরের মধ্যে ত্রিপুরা হয়ে উঠবে এইচআইভি আক্রান্ত রোগীর মিনি ক্যাপিটাল। এমন আশঙ্কা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *