ডেস্ক রিপোর্টার,২৪ ডিসেম্বর।।
কারা দপ্তরের কেলেঙ্কারির নায়ক তথা বিশালগড় সেন্ট্রাল জেলের জেলার প্রসেনজিৎ দাসকে পদোন্নতি দেওয়ার তোড়জোড় শুরু করেছে দপ্তর। ইতিমধ্যেই দপ্তরে জমা পড়েছে তার এসিআর।এই এসিআর স্বাক্ষর করেছেন কারা দপ্তরের প্রাক্তন প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি বিকে শাহু। দপ্তরের কেলেঙ্কারির সঙ্গে প্রাক্তন প্রিন্সিপাল সেক্রেটারির নামও উঠে এসেছিলো।এই কারণেই তাকে কারা দপ্তর থেকে দেওয়া হয়েছিলো অব্যাহতি। তিনি দপ্তর ছাড়ার আগেই জেলার প্রসেনজিৎ দাসের এসিআর তৈরি করে রেখেছিলেন।এই এসিআর-ই এখন জমা পড়েছে দপ্তরে।কারা দপ্তরের খবর অনুযায়ী, আগামী ৩১ডিসেম্বরের আগেই হয়তোবা ডেপুটি সুপার হিসাবে পদোন্নতি পেয়ে যেতে পারেন প্রসেনজিৎ দাস। এমন গুঞ্জন কারা দপ্তরে।
আন্তর্জাতিক এটিএম হ্যাকার হ্যাকান জাম্বু বিশালগড় সেন্ট্রাল জেল থেকে অসুস্থতার কথা বলে জিবি এসে পালিয়ে গিয়েছিলো।জিবি থেকে খোয়াই সীমান্ত দিয়ে তুরস্কের নাগরিক হ্যাকান জাম্বু গা ঢাকা দেয় বাংলাদেশে। এই ঘটনার পর রাজ্যের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়েছিলো।এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত রাজ্যের মাস্টার মাইন্ড শাকিব ত্রিপুরাকে গ্রেফতার করেছিলো পুলিশ।শাবিক ত্রিপুরা পুলিশকে জানিয়েছিলো আন্তর্জাতিক এটিএম হ্যাকার হ্যাকান জাম্বুকে সে কিভাবে সাহায্য করেছিলো পালিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে। হ্যাকান জাম্বু পালিয়ে যাওয়ার পর এই ঘটনার সুষ্ঠ তদন্তের জন্য এক কমিটি গঠন করা হয়েছিলো। এখন পর্যন্ত কমিটি কোনো রিপোর্ট জমা করেনি।হয়তো বা আরো কিছুটা সময় লাগবে।
সম্প্রতি কারা দপ্তরের ই-প্রিজন কেলেঙ্কারি প্রকাশ্যে এসেছিল। ই-প্রিজনের কোটি টাকার আর্থিক কেলেঙ্কারির ঘটনায় নাম জড়িয়েছে সেন্ট্রাল জেলের জেলার প্রসেনজিৎ দাসের। তার সঙ্গে নাম উঠে এসেছিলো কারা দপ্তরের তৎকালীন প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি বিকে শাহু’র নাম। এই কারণেই বিকে শাহুকে কারা দপ্তরের প্রিন্সিপাল সেক্রেটারির পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছিলো। রাজ্য প্রশাসন তাকে কিছুদিন বসিয়ে রাখার পর ফের বিজ্ঞান প্রযুক্তি দপ্তরের দায়িত্ব দিয়েছে। ই-প্রিজন কেলেঙ্কারির পর ঝর উঠে কারা দপ্তরে। আর্থিক কেলেঙ্কারির সত্যতা যাচাই করতে গঠন করা হয়েছে তদন্ত কমিটি।এখনো শেষ হয়নি কমিটির তদন্ত প্রক্রিয়া।কেননা তদন্ত কমিটি এখনো জমা করেনি তদন্ত রিপোর্ট।
আন্তর্জাতিক এটিএম হ্যাকার হ্যাকান জাম্বু কান্ড ও ই-প্রিজন কেলেঙ্কারির মূল নায়কদের অন্যতম বিশালগড় সেন্ট্রাল জেলের জেলার প্রজেনজিত দাস।তার বিরুদ্ধে দুইটি বড় কেলেঙ্কারির তদন্ত চলছে। কোনোটারই রিপোর্ট জমা পড়ে নি।এই পরিস্থিতিতে কারা দপ্তর প্রজেনজিত দাসকে পদোন্নতি দেওয়ার জন্য শেষ তুলির টান দিচ্ছে। দপ্তরের নিষ্ঠাবান অধিকারিকদের প্রশ্ন, কারা দপ্তরের দুইটি বড় কেলেঙ্কারি সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিকে শাস্তি না দিয়ে বরং তাকে দেওযা হচ্ছে তোফা। স্বাভাবিক ভাবেই কারা দপ্তরের অন্দর মহলে প্রসেনজিৎ দাসের পদোন্নতির প্রক্রিয়া নিয়ে চলছে জোর গুঞ্জন।
প্রসঙ্গত বাম জমানাতেও কারা দপ্তরে প্রচুর কেলেঙ্কারির ঘটনা ঘটেছে। কেলেঙ্কারির রহস্যের উন্মোচনের জন্য গঠিত হয়েছিলো তদন্ত কমিটি।তদন্ত প্রক্রিয়া শেষে বিভাগীয় তদন্ত কমিটি রিপোর্টও জমা করেছিলো।এই রিপোর্টের উপর ভিত্তি করে ভিজিল্যান্সও পৃথকভাবে তদন্ত করেছিলো।কিন্তু তাতেও বিশেষ কিছু হয় নি। দপ্তরের বাস্তু ঘুঘুরা বেঁচে গিয়েছিলো অদৃশ্য শক্তির অঙ্গুলির নির্দেশে। বিজেপি সরকারের জমানাতেও কি তার ব্যতিক্রম হবে না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *