ডেস্ক রিপোর্টার, ২১এপ্রিল।।
                  ত্রিপুরার রাজ পরিবার বরাবর রাজনীতির সঙ্গে অঙ্গাঙ্গী ভাবে জড়িত। রাজ পরিবারের সদস্যা কৃতি সিংয়ের কাছে সংসদে যাওয়ার হাতছানি। তিনি লোকসভার পূর্ব ত্রিপুরা আসনের বিজেপির প্রার্থী। আগামী ২৬ এপ্রিল পূর্ব ত্রিপুরা আসনের নির্বাচন। নানান ভোট সমীক্ষক সংস্থার সমীক্ষা বিজেপির প্রার্থী কৃতির পক্ষেই। সমীক্ষা অনুযায়ী কৃতি সিং যে সংসদে যাচ্ছেন ,তারা ভোটের আগেই ইঙ্গিত করছে। যদি তাই হয়, তাহলে দেশের সংসদে কৃতি সিং হবেন ত্রিপুরার মানিক্য পরিবারের তৃতীয় সদস্যা। এর আগে কৃতি সিংয়ের বাবা কিরিট বিক্রম কিশোর মানিক্য ও মা বিভু কুমারী দেবী লোকসভার পূর্ব ত্রিপুরা আসন থেকে জয়ী হয়ে সংসদে গিয়েছিলেন।

।।দেশের সংসদ ভবন।।

বিজেপি প্রার্থী হিসাবে কৃতি সিংয়ের নাম ঘোষণার আগে প্রদ্যুৎ কিশোর বলেছিলেন, ” তিনি সংসদে নিজের লোক পাঠাবেন। যিনি তিপ্রাসাদের স্বার্থে কথা বলবেন।”.
         প্রদ্যুৎ কিশোরের এই বক্তব্যের কয়েকদিন পর চিত্র পরিষ্কার হয়ে যায়। প্রদ্যুৎ তার বোন কৃতি সিংকে ছত্রিশগড় থেকে উড়িয়ে এনে বিজেপির টিকিট পাইয়ে দিয়েছেন।কারণ কৃতি সিং সংসদে গিয়ে জনজাতিদের জন্য কথা বলবেন। প্রদ্যুৎ একাজের জন্য নিজের দিদি ব্যতীত তিপ্রামথার কোনো নেতার উপরও আস্থা রাখতে পারেন নি।


নাম: কিরীট বিক্রম কিশোর মানিক্য

সদস্য: রাজ পরিবার

দল: জাতীয় কংগ্রেস

সাংসদের সময় কাল: ১৯৬৭,১৯৭৭ ও ১৯৮৯

সম্পর্ক: তিনি প্রদ্যুৎ কিশোরের পিতা


নাম: বিভু কুমারী দেবী

সদস্যা: রাজ পরিবার

দল: জাতীয় কংগ্রেস

সাংসদের সময় কাল: ১৯৯১

সম্পর্ক: প্রদ্যুৎ কিশোরের মা



তিপ্রামথার ফাউন্ডার প্রদ্যুৎ কিশোর দেববর্মনের পিতা কিরিট বিক্রম কিশোর মানিক্য তিন বার সাংসদ হয়েছিলেন।প্রতিবার তিনি জয়ী হয়েছিলেন পূর্ব ত্রিপুরা আসন থেকে। এবং কংগ্রেসের টিকিটে। প্রথম বার কিরিট বিক্রম জয়ী হয়েছিলেন ১৯৬৭ – লোকসভা নির্বাচনে। দ্বিতীয় বার তিনি জয়ী হন ১৯৭৭- র জাতীয় নির্বাচনে।তৃতীয় বার কিরিট বিক্রম সাংসদ হয়েছিলেন ১৯৮৯ সালের নির্বাচনে। একেবারেই কংগ্রেস অন্ত প্রাণ। এর পর তিনি আর নির্বাচনে লড়াই করেন নি।কিরীট বিক্রমের পর রাজ পরিবারের দ্বিতীয়া সদস্যা তথা তার সহধর্মিনী বিভু কুমারী দেবী লোকসভার পূর্ব  ত্রিপুরা আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। তিনি প্রদ্যুৎ কিশোরের মা।বিভু কুমারী দেবী ১৯৯১- র লোকসভা নির্বাচনে  কংগ্রেসের টিকিটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। এবং জয়ী হয়ে গিয়েছিলেন সংসদে।

এই দুর্দশার জন্য দায়ী কে?

অতীতে ধারাবাহিক ভাবে টানা চারটি লোকসভা নির্বাচনে রাজ পরিবার থেকে সংসদে গিয়েছিলেন কিরীট বিক্রম কিশোর মানিক্য ও তাঁর স্ত্রী বিভু কুমারী দেবী। তারা সম্পর্কে  প্রদ্যুৎ কিশোর ও বিজেপির প্রার্থী কৃতি সিংয়ের মা – বাবা। ১৯৬৭ থেকে ১৯৯১ এই সময়ে দেশের পার্লামেন্টে দাঁড়িয়ে রাজ্যের জনজাতিদের স্বার্থে কি কাজ করেছেন কিরীট বিক্রম ও তাঁর সহধর্মিনী? প্রাক্তন সাংসদ কিরীট বিক্রম মানিক্য প্রয়াত।

।।প্রদ্যুৎ কিশোর ।।

কিন্তু আছেন তাঁর সহধর্মিনী তথা প্রাক্তন সাংসদ বিভু কুমারী দেবী। ত্রিপুরার রাজ পরিবার কি পারবে কিরীট বিক্রম ও বিভু কুমারী দেবী সাংসদ থাকা কালীন কি কাজ করেছেন তার খতিয়ান তুলে ধরতে? সংসদের ভেতরে জনজাতিদের স্বার্থ রক্ষার জন্য তারা কি কি বক্তব্য রেখেছিলেন। তাদের বক্তব্যের বাস্তবায়ন  কতটা হয়েছে ছিল।


রাজ পরিবার বা প্রদ্যুৎ কিশোর কি এই সংক্রান্ত কোনো রিপোর্ট কার্ড বা শ্বেত পত্র প্রকাশ করতে পারবেন ২৬ এপ্রিলের আগে? কারণ রাজ্যের জাতি – জনজাতি উভয় অংশের মানুষ জানতে চাইছেন রাজ পরিবারে দুই সদস্য প্রয়াত সাংসদ কিরিট বিক্রম ও তার সহধার্মিনী প্রাক্তন সাংসদ বিভু কুমারী দেবী রাজ্যের জনজাতিদের স্বার্থ রক্ষার্থে কি করেছিলেন?

।।কৃতি সিং।।

অন্যথায় খোদ জনজাতিদের মধ্যে কৃতি সিংকে নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করবে। তিনি যদি সংসদে যাওয়ার টিকিট অর্জন করতে পারেন, তাহলে তিনিও জনজাতিদের স্বার্থে কতটা কাজ করবেন?কিরিট বিক্রম ও তার স্ত্রী বিভু কুমারী দেবী  সংসদের অন্দরে জনজাতিদের স্বার্থে করা  লড়াইয়ের ইতিহাস জানতে চায়।


অনুপুঙ্খ ভাবে এই সংক্রান্ত রিপোর্ট কার্ড চাইছে ত্রিপুরার মানুষ। এখন গোটা বিষয়টি নির্ভর করবে প্রদ্যুৎ কিশোরের উপর। রাজনৈতিকদের কথায়,  প্রদ্যুৎ যদি একজন সৎ রাজনৈতিক নেতা হয়ে থাকেন, তাহলে অবশ্যই জন সন্মুখে তুলে ধরবেন তার সাংসদ মা – বাবার জনজাতি স্বার্থ সম্বলিত কাজের রিপোর্ট কার্ড।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *