ডেস্ক রিপোর্টার, ৩০মার্চ।।
                     গণতন্ত্রের মহোৎসবের উষ্ণতায় তপ্ত গোটা রাজ্য। রাজ্যের প্রতিটি প্রান্তে পুলিশে পুলিশে ছয়লাপ। সঙ্গে অতিরিক্ত হিসেবে আছে কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা বাহিনী। আছে নির্বাচন কমিশনের লোকজন। ২৪ ঘন্টা নানানদিকে নিরাপত্তা খতিয়ে দেখতে চক্কর কাটছে সাদা পোশাকের পুলিশ।রাজপথের মোড়ে মোড়ে পুলিশের অস্থায়ী নাকা। আছে স্থায়ী নাগা পয়েন্টও। প্রতিটি জায়গায় পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনী পথ চলতি দ্বি-চক্রি ও চার চক্রি যানবাহনে করছে নিয়মিত তল্লাশি। একেবারেই যেন মাছি গলার জো নেই। ভোটের মুখে পুলিশি নিরাপত্তার বহর দেখে সময়ে সময়ে বুকে কামড় ধরে পথ চলতি সাধারণ মানুষের। কিন্তু তারপরও রাজ্যজুড়ে অবাধে চলছে নেশা বাণিজ্য। নেশা জাতীয় সামগ্রী রাজ্য থেকে নিয়মিত পাচার হচ্ছে বহি: রাজ্যে। আবার বহি:রাজ্য থেকেও নেশা দ্রব্য প্রবেশ করছে রাজ্যে। কিভাবে তা সম্ভব?তাহলে কি করছে পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনী। অবশ্যই পুলিশের দাবি তারা প্রায় প্রতিদিনই আটক করছে নেশা সামগ্রী এবং গ্রেপ্তার করছে কারবারের সঙ্গে জড়িত চাইদের। পাচার হওয়া নেশা সামগ্রী কত শতাংশ পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনী আটক করতে পারছে? এই প্রশ্ন অবশ্যই ওঠছে সাধারণ নাগরিকদের মধ্যে।


মাদক বাজারের তথ্য অনুযায়ী, ভোটের বজ্র আঁটুনি নিরাপত্তাকে ভেদ করেই মাদক ব্যাপারীরা প্রতিনিয়ত তাদের সামগ্রী পাচার করছে। পাচার হওয়া নেশা সামগ্রীর মধ্যে সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ আটক করতে সক্ষম হয় পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনী। বাদবাকি ৯০ শতাংশ সামগ্রী নিশ্চিতভাবে কারবারিরা তাদের গোপন ডেরায় নিয়ে যেতে সক্ষম হয়। মাদক সাম্রাজ্যের অলিন্দের খবর, ভোটের মুখে কারবারিরা তাদের মাদক সামগ্রী পাচারের জন্য এম্বুলেন্সকে ব্যবহার করছে। একই সঙ্গে বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের গাড়ির ভুয়ো নেম-প্লেট ও  নম্বর প্লেট লাগিয়ে দেদার  করছে পাচার।


রাজ্যের মাদক কারবারের টাইকোন ইতিমধ্যেই বিভিন্ন ভূঁইফোড় সংস্থার নাম দিয়ে মারুতি ভ্যানকে অ্যাম্বুলেন্স বানিয়ে নিয়েছে। এই সমস্ত অ্যাম্বুলেন্স করেই নেশা সামগ্রী নিশ্চিতভাবে নির্ভয়ে পাচার করছে কারবারিরা। তথ্য বলছে, লোকসভার নির্বাচনের ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই রাজ্যজুড়ে মারুতি ভ্যান ক্রয় করার প্রবণতা ও বেড়ে গিয়েছে। ভ্যান গুলিকে অ্যাম্বুলেন্সের আদলে তৈরি করে তাতে মজুত করা হয় গাঁজা। পাচারের সময় গাড়িতে সাজিয়ে রাখা হয় নকল রোগী এবং এম্বুলেন্সের হুইসেল বাজিয়ে পুলিশের নাকা পয়েন্টের সামনে দিয়েই সজোরে বেরিয়ে যায় মাদক সামগ্রী বোঝায় অ্যাম্বুলেন্স।


আনুষ্ঠানিক রেওয়াজ, নিয়ম ও মানবিকতা দিক দিয়ে কখনো রোগী সমেত এম্বুলেন্সকে আটক করেনি পুলিশ। বিনা রোগীতে থাকা অ্যাম্বুলেন্সকেও তেমন সন্দেহের নজরে দেখেনি নিরাপত্তা বাহিনী। অ্যাম্বুলেন্স হুইসেল বাজানোর সঙ্গে সঙ্গেই রাস্তায় থাকা অন্যান্য যানবাহন ও পথ চলতি লোকজন রাস্তা পরিষ্কার করে দেয় ।তারা সরে দাঁড়ায়। যেন অ্যাম্বুলেন্সটি রোগী নিয়ে সময় মত পৌঁছে যেতে পারে তার গন্তব্যস্থল “হাসপাতালে”। স্বাভাবিকভাবেই ভোটের বজ্র আঁটুনি নিরাপত্তার মধ্যে মাদক কারবারিদের সফট টার্গেট হয়ে উঠেছে অ্যাম্বুলেন্স।


শুধু কি তাই, ভোটের মুখে মাদক কারবারিরা বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের গাড়ির ফেক নম্বর ও নেমপ্লেট ব্যবহার করছে। এই সমস্ত গাড়ি পুলিশের স্থায়ী, অস্থায়ী নাকা পয়েন্টের সামনে দিয়ে বুক চিরে চলে গেলেও নিরাপত্তা বাহিনী তল্লাসির কোন প্রয়োজনীয়তা বোধ করেনি। এটাই স্বাভাবিক। এই সুযোগের সদ ব্যবহার করে নির্ভয়ে গাড়িতে নেশা সামগ্রী মজুত করে কারবারীরা চলে যেতে পারে তাদের নিরাপদ ডেরায়। মাদক কারবারীদের পাচারের এই অভিনব পন্থা ভোটের বজ্র আঁটুনি নিরাপত্তাও তাদেরকে আটকে রাখতে পারেনি। দুই হাত খুলেই তারা তাদের ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে।
           

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *