ডেস্ক রিপোর্টার, আগরতলা।।
ঊনকোটি জেলা হাসপাতালের বিচ্ছিরি চিকিৎসা পরিষেবা দেখে প্রচন্ড ক্ষোভ প্রকাশ করেন খোদ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা: মানিক সাহা। শুক্রবার তিনি ঝটিকা সফরে কৈলাসহর এসে রামকৃষ্ণ মহাবিদ্যালয়ের বিজ্ঞান ভবনের উদ্বোধন করেন। এরপর তিনি সোজা চলে যান আর জি এম হাসপাতালে। খতিয়ে দেখেন জেলা হাসপাতালের চিকিৎসা পরিষেবা। মুখ্যমন্ত্রী হাসপাতালের বেহাল পরিষেবা দেখে প্রচন্ড ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন।
ঊনকোটি জেলা হাসপাতালের প্রতিটি বিভাগের চিকিৎসক নিয়ে অনেক দিনের পুঞ্জীভূত অভিযোগ রয়েছে রোগীর আত্মীয় স্বজনদের। ভগবান নগর জেলা হাসপাতালের ভিতরে প্রবেশ করার পর হাসপাতালে ভর্তি রোগী এবং রোগীর আত্মীয় স্বজনরা মুখ্যমন্ত্রী ডা: মানিক সাহাকে ঘিরে হাসপাতালের চরম চিকিৎসা পরিষেবা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
রোগীর আত্মীয় পরিজনদের বক্তব্য, খোদ মেডিক্যাল সুপার প্রতি সপ্তাহে দুদিন ছুটি কাটান।দূর্গা পূজার সময়ে তিন জন মেডিসিন বিশেষজ্ঞের মধ্যে ডাঃ প্রীতম দেবনাথের বাবা মারা যাওয়ার কারনে স্বাভাবিক ভাবেই ছুটিতে থাকবেন। ডাঃ পি দেববর্মা নিয়ম নীতি মেনে ছুটি নিলেও অপরজন ডাঃ তাপস দত্ত কৈলাসহরে ডিউটিরত থাকলেও পূজার সময় রোগীরা তাকে খুঁজেই পায়নি বলে অভিযোগ করেছেন। আরেকজন করিৎকর্মা চিকিৎসক প্রসূতি রোগ বিশেষজ্ঞ সুজিত দাস শুধুমাত্র প্রাইভেট চেম্বার নিয়েই বেশীরভাগ সময় ব্যাস্ত থাকেন। ঘুম থেকে উঠে চলে যান হাসপাতালের নিকটবর্তী চেন্বারে। যা নিয়ম বিরুদ্ধ। প্রায় ১০টি ফার্মেসিতে তিনি নিয়ম করে রোগী দেখেন। এত সবের মধ্যে হাসপাতালে পরিষেবা দেওয়ার সময় খুব একটা পাননা। আর হাসপাতালে সিজার করার সময় তিনি নিয়মিত প্রনামী নিয়ে থাকেন। তার অজস্র উদাহরণ রোগীর আত্মীয়রাই। রোগীরা এবং রোগীর আত্মীয় স্বজনরা এদিন মুখ্যমন্ত্রীকে কাছে পেয়ে বলেন যে, জেলা হাসপাতালে শিশু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক একদিন আসলে তিনদিন আসেন না। তাছাড়া, জেলা হাসপাতালের ইমারজেন্সি বিভাগ দেখেও মুখ্যমন্ত্রী ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন। জেলা হাসপাতাল পরিদর্শনে মুখ্যমন্ত্রীর সাথে ছিলেন কৈলাসহর পুর পরিসদের চেয়ারপার্সন চপলা রানী দেবরায়,ভাইস চেয়ারপার্সন নীতিশ দে, টিআইডিসির চেয়ারম্যান টিংকু রায়, ঊনকোটি জেলার জেলাশাসক উত্তম কুমার চাকমা, জেলার পুলিশ সুপার কান্তা জাঙ্গীর সহ আরও অন্যান্য আধিকারিকরা। জেলা হাসপাতাল পরিদর্শন শেষে সংবাদ প্রতিনিধিদের মুখোমুখি হয়ে মূখ্যমন্ত্রী জানান, তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রী হবার সুবাদে অনেক দিন ধরেই কৈলাসহরের আর.জি.এম হাসপাতাল এবং ঊনকোটি জেলা হাসপাতালের অভিযোগ শোনে আসছিলেন। ইদানীং কালে কৈলাসহরে আসা হয়নি বলেই হাসপাতালের প্রকৃত খোঁজ খবর নিতে পারেননি। এদিন কৈলাসহরে অন্য অনুষ্ঠানে আসায় এই দুইটি হাসপাত পরিদর্শনের সুযোগ হয়েছে। এই দুইটি হাসপাতালে এসে বাস্তব পরিস্থিতি দেখলেন এবং বিশেষ করে শিশু বিভাগের চিকিৎসা পরিষেবার ব্যাপারে নিজ চোখে না দেখলে বিশ্বাস করতে পারতেন না বলেই মন্তব্য করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি এব্যাপারে খুব শীঘ্রই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন বলেও জানিয়েছেন।