ডেস্ক রিপোর্টার, ১৩সেপ্টেম্বর।।
                 ডা: মানিক সাহা বনাম ড: হিমন্ত বিশ্ব শর্মা। দুই মুখ্যমন্ত্রীর সম্পর্কে কি ধরবে টান?নেপথ্যে ত্রিপুরা ব্যাডমিন্টন অ্যাসোসিয়েশন।আগরতলা থেকে গুয়াহাটি এবং দিল্লি।রাজনৈতিক মহলে
পড়েছে শোরগোল।
রাজ্যের ব্যাডমিন্টন অ্যাসোসিয়েশন দখল নিয়ে জুজুধান দুই শক্তি। এক গোষ্ঠী অপর গোষ্ঠীকে অবৈধ বলে দাবি করছে। ব্যাডমিন্টন কোর্টের গোষ্ঠীবাজির জল এখন গড়িয়েছে থানা – পুলিশে। তবে পুলিশ অবশ্যই পালন করছে বাবা গোসাইয়ের ভূমিকা। এটা বরাবর করে থাকে পুলিশ। তাই পুলিশের ভূমিকা নিয়ে ভাবছে না রাজ্যের নতুন প্রজন্মের ব্যাডমিন্টন খেলোয়াড়রা।


সর্ব ভারতীয় ব্যাডমিন্টন অ্যাসোসিয়েশন  অর্থাৎ বাই রাজ্যের একটি ব্যাডমিন্টন অ্যাসোসিয়েশনে এফিলেশন দিয়েছে। সর্ব ভারতীয় ব্যাডমিন্টন অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট হলেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা। বাইয়ের  অনুমোদিত ত্রিপুরা ব্যাডমিন্টন অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি হয়েছেন প্রদীপ সাহা। বাইয়ের সমস্ত নিয়ম নীতি মেনেই প্রদীপ সাহা রাজ্য ব্যাডমিন্টন সংস্থার সভাপতি হয়েছেন। আগামী চার বছরের জন্য তিনি থাকবেন রাজ্য ব্যাডমিন্টন অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি।


বাইয়ের অনুমোদিত ত্রিপুরা ব্যাডমিন্টন অ্যাসোসিয়েশনকে মান্যতা দিতে নারাজ অপর গোষ্ঠী। এই গোষ্ঠীর প্রধান রতন সাহা। তিনি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ডা: মানিক সাহার ভাই। সম্প্রতি রতন সাহা তার বিপক্ষ গোষ্ঠীর অ্যাসোসিয়েশনের সচিব সঞ্জীব সাহার বিরুদ্ধে সংস্থার অর্থ নয় ছয়ের অভিযোগ এনে পশ্চিম থানায় মামলাও দায়ের করেছিলেন। তবে খবর অনুযায়ী, ত্রিপুরা স্পোর্টস কাউন্সিল রাজ্যের দুইটি ব্যাডমিন্টন অ্যাসোসিয়েশনকেই  নাকি অনুমোদন দিয়েছে। ত্রিপুরা স্পোর্টস কাউন্সিলের এই বিলাসিতার কারণ কি? তা অবশ্যই বলতে পারবেন কাউন্সিলের বর্তমান দন্ডমুণ্ডের কর্তারা।


সম্প্রতি ত্রিপুরা ব্যাডমিন্টন অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে ন্যাশনাল মিটে অংশ অংশ নিতে একটি টিম গিয়েছিল অরুণাচল প্রদেশ এই টিমটি ছিল বাইয়ের অনুমোদিত। একই সঙ্গে বাইয়ের এফিলেশান না থাকা সত্ত্বেও অরুণাচল প্রদেশে রতন সাহার গোষ্ঠী অন্য আরেকটি টিম পাঠিয়েছিলো। কিন্তু রতন সাহার পাঠানো টিমকে খেলার অনুমতি দেয়নি সর্বভারতীয় ব্যাডমিন্টন এসোসিয়েশন। এরপরই রাজ্য ব্যাডমিন্টন মানচিত্রে ক্লাইম্যাক্স ক্রমশই পরিবর্তন হতে শুরু করেছে। অভিযোগ,বাইয়ের অনুমোদিত ত্রিপুরা ব্যাডমিন্টন অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি প্রদীপ সাহাকে নানান সময় তার পদ ছাড়ার জন্য হুমকি হুজ্জুতি দিতে থাকে দুষ্কৃতীরা। এরা প্রত্যেকেই মুখ্যমন্ত্রীর ব্যাবসায়ী ভাই রতন সাহার অনুগামী।

। রতন সাহা।।

শেষ পর্যন্ত রবিবার বাই অনুমোদিত ত্রিপুরা ব্যাডমিন্টন অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি প্রদীপ সাহার বাড়িতে হামলা করে দুষ্কৃতীরা। আক্রান্ত প্রদীপ সাহা বলেন,এদিন দুষ্কৃতীরা বাড়িতে এসে তাকে মারধর করে। তার কাছে একটি কাগজ দেয় স্বাক্ষর করার জন্য।
  

।।রাজ্য ব্যাডমিন্টন সংস্থার আক্রান্ত সভাপতি প্রদীপ সাহা।।

প্রদীপ সাহার বক্তব্য, দুষ্কৃতীরা তাকে নানান ভাবে হুমকি হুজ্জুতি দিতে থাকে ক্রমাগত। এবং ত্রিপুরা ব্যাডমিন্টন অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি পদ থেকে পদত্যাগ করার জন্য কাগজে স্বাক্ষর করতে চাপ দেয় দুষ্কৃতীরা। শেষ পর্যন্ত তিনি ভয়ে স্বাক্ষর করে দেন।


প্রদীপ সাহার বক্তব্য, তিনি যদি দুষ্কৃতীদের  দেওয়া কাগজে স্বাক্ষর না করতেন তাহলে বিপদ আরো বাড়তে পারতো। তবে তিনি দুষ্কৃতি মধ্যে চার জনকে চিনতে পেরেছেন। তারা হলো রূপক কুমার সাহা, আর কে মনোজিত সিং, নরেন কর্মকার ও জুয়েল চাকমা। তাদের বিরুদ্ধে প্রদীপ সাহা পূর্ব থানায় মামলা দায়ের করেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত পুলিশ অভিযুক্তদের গ্রেফতার করে নি।

।।প্রদীপ সাহাকে আক্রমণকারী চার দুষ্কৃতি।।

আর করবে না।কারণ ,গোটা ঘটনার নেপথ্যে মুখ্যমন্ত্রীর ভাই রতন সাহা।বলছেন খোদ ব্যাডমিন্টন অ্যাসোসিয়েশনের লোকজন। প্রদীপ সাহা জানিয়েছেন,তিনি বিষয়টি জানিয়েছেন সর্বভারতীয় ব্যাডমিন্টন অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট হিমন্ত বিশ্ব শর্মা ও সম্পাদককে।


অসমের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত বিশ্ব শর্মার নেতৃত্বাধীন সর্বভারতীয় ব্যাডমিন্টন অ্যাসোসিয়েশনের অনুমোদিত ত্রিপুরা ব্যাডমিন্টন সংস্থার সভাপতিকে জোর করে পদত্যাগ পত্রের স্বাক্ষর করানোর ঘটনা গোটা দেশেই নজিরবিহীন। ত্রিপুরার ক্রীড়া মানচিত্রে এর আগে এমন ঘটনা কখনো ঘটে নি। এখন দেখার বিষয় বাই অনুমোদিত ত্রিপুরা ব্যাডমিন্টন অ্যাসোসিয়েশনের পরবর্তী সভাপতি কে হন?


নাকি বাই পাল্টা ব্যবস্থা নিয়ে ব্যাডমিন্টন কোর্টে মাফিয়ারাজ আমদানি করা ভেকদারি রাজনৈতিক মদত পুষ্ট ক্রীড়া ব্যক্তিত্বদের ছুড়ে ফেলে দেবে। এই ঘটনার রেশ ধরে কি  অসম ও ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত বিশ্ব শর্মা ও ডা: মানিক সাহার সম্পর্কের মধ্যে অবনতি ঘটবে? এমন প্রশ্ন উঠছে খোদ ক্রীড়া ও রাজনৈতিক মহলে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *