
ডেস্ক রিপোর্টার, ১৪সেপ্টেম্বর।।
বাম জামানার সংস্কৃতি এখনো ঝেড়ে ফেলতে পারে নি রাম জামানার কান্ডারীরা। বাম জামানার মতোই রাজ্য প্রশাসনে তোষামোদ চলছে আইএএস, আইপিএস ও আইএফএস। গুরুত্ব পাচ্ছেন না স্থানীয় ক্যাডাররা। অভিযোগ, বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্রাত্য থাকছেন টিপিএস, টিসিএস ও টিএফএস- রা। রাজ্য প্রশাসনের এই কার্যকলাপে ফুসছে স্থানীয় ক্যাডাররা। তারা ভেঙ্গে পড়ছেন মানসিক ভাবেও। এটা কোনো ভাবেই ডা: মানিক সাহার প্রশাসনের জন্য শুভ ইঙ্গিত নয় । বিভিন্ন ক্ষেত্রে স্থানীয় তিন ক্যাডারের অফিসাররা যে ব্রাত্য তার বহু প্রমাণ রয়েছে। সব মিলিয়ে রাজ্য প্রশাসনে সর্ব ভারতীয় ক্যাডার ও স্থানীয় ক্যাডারদের মধ্যে বাড়ছে দূরত্ব। প্রশাসনের এই পরিস্থিতি রাজ্যের জন্য মঙ্গল দায়ক নয় বলে মনে করছেন ওয়াকিবহাল মহল।

রাজ্য আরক্ষা প্রশাসনে ক্রমশঃ দ্বৈরথ বাড়ছে আইপিএস ও টিপিএসদের মধ্যে।খবর অনুযায়ী, রাজ্যের মেজর স্ট্রাইকিং ফোর্স টিএসআর। প্রায় ছয় মাস যাবৎ টিএসআরের দ্বিতীয় ব্যাটালিয়নে কমান্ডেন্ট নেই। এটা নিঃসন্দেহে রাজ্য আরক্ষা প্রশাসনের ব্যর্থতা। ব্যাটেলিয়নের কাজ কর্ম দেখাশুনা বা লুক আফটারের জন্য টি পি এস লুৎলুঙ্গা ডারলংকে অতিরিক্ত দায়িত্ত্ব দেওয়া হয়েছে। কিন্তু দুর্ভাগ্যের হলেও সত্যি টিপিএস গ্রেড -১ অফিসার লুৎলুঙ্গা ডারলংকে টিএসআরে এখনো স্থায়ী পোস্টিং দিতে পারে নি স্বরাষ্ট্র দপ্তর। অভিযোগ বিভিন্ন ক্ষেত্রে টিপিএস অফিসারদের পোস্টিংয়ের বিষয়ে টালবাহানা করছে দপ্তর।অথচ আইপিএসদের পার্মানেন্ট পোস্টিংয়ের ক্ষেত্রে দপ্তর কোনো অতিরিক্ত সময় ব্যয় করে না। জরুরি কালীন অবস্থায় তাদের পোস্টিং দিয়ে দেওয়া হয়।

গত ৮ সেপ্টেম্বর পশ্চিম জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) আইপিএস নমিত পাঠককে গোমতী জেলার এসপির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। কিন্তু টিপিএসদের পোস্টিংয়ের বেলায় দপ্তরের বেলেল্লাপনা থাকে অন্তহীন। বলছেন, খোদ স্থানীয় ক্যাডারের পুলিশ আধিকারিকরা। একই অবস্থা টিসিএস ও টিএফএসদের। সম্প্রতি বড়মুড়াতে ত্রিপুরা স্টুডেন্ট ফেডারেশনের একটি আন্দোলনস্থলে একজন আন্দোলনকারী জনজাতি মহিলা তার বুকের অন্তর্বাস খুলে জাপটে ধরে ছিলো আই পি এস নমিত পাঠককে। হয়তো বা, আরক্ষা প্রশাসন এই ঘটনাকে কর্ম ক্ষেত্রে আইপিএস নমিতের সাফল্য হিসাবে দেখেছে। তাই হয় তো বা আইপিএস নমিত পাঠককে এসপি পদে পদোন্নতি দিয়েছে রাজ্য প্রশাসন।

টিপিএস ক্যাডারদের কথায়, এটা ত্রিপুরাতেই সম্ভব। এখানে বরাবর সর্ব ভারতীয় ক্যাডারের অফিসারা রাজ করে থাকেন।তারাই লিপ্ত থাকেন দুর্নীতিতে। তা সত্বেও তারাই পান প্রাধান্য। দীর্ঘ বাম জামানা থেকেই চলে এসেছে এই তোষামোদের সংস্কৃতি। এখন রাম জমানাতেও এই সংস্কৃতি বহাল। কিন্তু উত্তর পূর্বাঞ্চলের অন্যান্য রাজ্য গুলির দিকে তাকালে দেখা যায় বিপরীত চিত্র। সংশ্লিষ্ট রাজ্য গুলিতে বরাবর প্রাধান্য পেয়ে থাকেন স্থানীয় ক্যাডাররা।
এই কারণেই অসম,মেঘালয়, মনিপুর,মিজোরাম,নাগাল্যান্ডের মতো রাজ্য গুলির প্রশাসনিক কাজকর্ম অনেক বেশী গতি সম্পন্ন।

কারণ, স্থানীয় ক্যাডাররা রাজ্যের জন্য গায়ে গতরে খেটে কাজ করে থাকেন। কিন্তু সর্ব ভারতীয় ক্যাডারের অফিসাররা পালন করেন শুধু মাত্র তাদের ডিউটি।কারণ তারা ভালো করেই জানেন ত্রিপুরায় তারা ক্ষণস্থায়ী। এই জন্যই আইপিএস, আইএএস ও আইএফএস- রা ত্রিপুরা ছাড়ার সময় তারা সঙ্গে নিয়ে যায় মধু। এবং মরা মৌ-মাছির অবয়বের খোলটা এখানে ছেড়ে দিয়ে যায়। কিন্তু এই চিরন্তর সত্যকে বুঝাবেন কি রাজ্যের দন্ডমুণ্ডের কর্তাদের? লক্ষ টাকার প্রশ্ন তো এখানেই।