ডেস্ক রিপোর্টার, আগারতলা।।
              শারদ উৎসবে গোটা অসমে তটস্থ ছিল বাঙালি সম্প্রদায়ের মানুষ। শারদ উৎসবের আগেই বরাক সহ অসমের বাঙালিদের হুমকি দিয়েছিলো উলফা। শারদ উৎসব শুরু দিন থেকেই গোদের উপর বিষ ফোঁড়ার মত দুর্গা পুজার মণ্ডপে মণ্ডপে হামলা শুরু করেছিলো অসমের লাচিত সেনা ও আসমিয়া ছাত্র সংগঠন আসু। শারদ উৎসবে গোটা অসম জুড়ে তাণ্ডব চালিয়ে ছিলো এই দুইটি সংগঠন।তাদের পেছনে মূল মস্তিষ্ক ছিলো উলফা নেতা পরেশ বড়ুয়ার। স্বাভাবিক ভাবেই নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতে থাকে অসমের বাঙালি অংশের মানুষ। বিশেষ করে বাঙালি হিন্দুরা। তারা বাধ্য হয়ে নিরাপত্তা চেয়ে চিঠি দিয়েছে দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে। এখন পর্যন্ত অসমে বসবাসকারী হিন্দু বাঙালিদের নিরাপত্তার বিষয়ে কোনো রকম বক্তব্য জানা যায় নি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের পক্ষ থেকে।
                   ষষ্ঠীর দিন থেকেই অসমের বিভিন্ন দুর্গা মণ্ডপে  হানা দেয় অসমিয়া লাচিত সেনা ও আসুর সদস্যরা। প্রতিটি মণ্ডপে বাংলা ভাষায় লেখা থাকা বিভিন্ন পোস্টার, ব্যানার ও ফ্ল্যাক্স তারা প্রকাশ্যে ছিঁড়ে ফেলে দেয়। পূজা মন্ডপের ভিতরে থাকা বাংলায় লেখা থাকা নানান জিনিস তারা ভেঙ্গে দেয়।লাচিত সেনা ও আসু সরাসরি পুজা উদযাপন কমিটির বাঙালিদের হুমকি দেয়,”অসমে বসবাস করতে হলে অসমিয়া ভাষায় কথা বলতে হবে। লিখতে হবে এই ভাষাতেই। নয়তো অসমে থাকা যাবে না।
            কাছাড়,দিসপুর, ডিব্রুগড়, জোড়হাট সহ নানান জায়গাতে অসমিয়া দুষ্কৃতীরা পূজা মন্ডপে হামলা চালায়। পূজা আয়োজক কমিটির বাঙালি সম্প্রদায়ের লোকজনকে প্রাণ নাশের হুমকি দেয়। কিন্তু অসমের হিন্দুবাদী বিজেপি সরকারের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা ছিলেন নীরব। বাঙালি হিন্দুদের কোনো রকম নিরাপত্তা দেয় নি অসম প্রশাসন। স্বাভাবিক ভাবেই শারদ উৎসবে অসমের বাঙালিদের মনে তাড়া করছিল আতঙ্ক। তাদের কাছে ম্লান হয়ে যায় উৎসবের আনন্দ। কিন্তু নির্বিকার অসম সরকার।
             দুর্গা পুজার কয়েকদিন আগেই অসমের নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন উলফা সেই রাজ্যের বাঙালিদের উদ্দেশ্যে চিঠি দিয়েছিল।চিঠিতে উলফা স্পষ্ট ভাবে জানিয়ে দেন, বরাক উপত্যকা অসমের ও বিচ্ছিদ্দ অংশ। বরাক কখনো অসম থেকে পৃথক হবে না। এই ইস্যুতে উলফা  গোটা অসমের বাঙালিদের বক্তব্য জানতে চেয়েছে। তারজন্য সময় সীমা বেধে দিয়েছে ৬০দিন। তার পেছনেও কারণ রয়েছে। দিসপুরের শাসক গোষ্ঠীর দীর্ঘ বঞ্চনার কারণের বরাক উপত্যকার লোকজন পৃথক রাজ্যের দাবি তুলে। বরাক ডেমোক্রেটিক নামক একটি সংস্থা পৃথক রাজ্যের দাবিতে সরব হয়েছে। এই সংগঠনের আহ্বায়ক প্রদীপ দত্ত রায়। উলফার নেতারা প্রদীপ দত্ত রায়কেও হুমকি দিয়েছে। বরাক সহ গোটা অসমের বাঙালিদের পক্ষ বরাক ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট নিরাপত্তা চেয়ে চিঠি দিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে।কারণ স্থানীয় হিন্দু বাঙালিরা মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত-র প্রশাসনের উপর আস্থা হারিয়ে ফেলেছে। তাই তারা দ্বারস্থ হয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের দরবারে।
           

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *