
ডেস্ক রিপোর্টার, ২জানুয়ারী।।
সুরজিত দত্ত। তিনি ছিলেন রামনগর বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক। সদ্য প্রয়াত হয়েছেন। সুরজিত দত্তের মৃত্যুতে এই কেন্দ্রে উপনির্বাচনের প্রয়োজনীয়তা হয়ে পড়েছে। সুরজিতের মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গেই রামনগরের পরবর্তী অভিভাবক কে হতে পারেন, তা নিয়ে চলছে জোর আলোচনা। হেসেল থেকে চায়ের দোকান। পাড়ার গলি থেকে কুশাভাউ ভবন, সর্বত্রই আলোচনার কেন্দ্র বিন্দুতে “রামনগর”।
নিবাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের সঙ্গেই রামনগর বিধানসভা কেন্দ্রের উপ ভোট অনুষ্ঠিত হবে।স্বাভাবিক ভাবেই রামনগরের মতো হেভিওয়েট বিধানসভা কেন্দ্রের সম্ভাব্য প্রার্থীদের নাম নিয়ে বিজেপির ঘরে চড়ছে জল্পনার পারদ।

কৃষ্ণনগর কুশাভাউ ভবনের অন্দরের তথ্য বলেছে, রামনগর কেন্দ্রের উপ নির্বাচনে সম্ভাব্য প্রার্থীদের তালিকায় রয়েছে চার থেকে পাঁচটি নাম। এই মুহূর্তে এই কেন্দ্রের প্রার্থীর দৌঁড়ে রয়েছেন আগরতলা পুর নিগমের মেয়র দীপক মজুমদার ও প্রদেশ বিজেপির হেভিওয়েট নেতা অমিত রক্ষিত। অমিত রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক। তার পরেই আছেন অভিষেক দত্ত। তিনি আগরতলা পুর নিগমের কর্পোরেটর। আবার সদ্য প্রায়ত বিধায়ক সুরজিৎ দত্তের ভাইপো। পিছিয়ে নেই রামনগরের বিজেপি নেতা তুষার ভট্টাচার্য। তিনি সুরজিৎ দত্তের ভাব শিষ্য । প্রার্থী হিসেবে বিজেপির সহ – সভাপতি পাপিয়া দত্তের নামও উঠে আসছে।
বিজেপির রাজনীতির প্রাজ্ঞ বিশ্লেষকদের বক্তব্য, রামনগর বিধানসভা কেন্দ্রের পরবর্তী অভিভাবক হিসাবে দুইজনের নাম জোরালো ভাবে উঠে আসছে। তাদের মধ্যে একজন মেয়ের দীপক মজুমদার। অপর জন বিজেপির সাধারন সম্পাদক অমিত রক্ষিত। তারা দুই জনই রামনগর কেন্দ্রের। গোটা সুরজিৎ দত্তের পর অবাম রাজনীতিতে উভয়েই রামনগরের পরিচিত মুখ। টিআরপিতে এগিয়ে দীপক – অমিত উভয়েই। অন্যরা নাকি তাদের থেকে কয়েক শত যোজন দূরে।

বিজেপির অন্দরের খবর, ২০১৮- র বিধানসভা নির্বাচনে অমিত রক্ষিত রামনগর কেন্দ্রে টিকিটের দাবিবার ছিলেন। কিন্তু তৎ সময় স্যান্ডিং বিধায়ক সুরজিৎ দত্তকে সরিয়ে অমিতকে টিকিট দেওয়ার পক্ষে ছিলো না বিজেপি থিঙ্ক ট্যাঙ্ক।কারণ রামনগর কেন্দ্রের স্ল্যাম এরিয়া গুলি ছিলো প্রয়াত সুরজিৎ দত্তের মূল ভোট ব্যাংক। সেখানকার ভোটাররা জননেতা সুরজিৎ দত্তের অন্ধ ভক্ত ছিলো। স্বাভাবিক ভাবেই পাল্লা ভারী হয়ে যায় সুরজিতের।তাই অমিত রক্ষিতকে পাঠানো হয়েছিল খোয়াইয়ে।
২৩- র বিধানসভা নির্বাচনেও রামনগর ও খোয়াই কেন্দ্রের সম্ভাব্য প্রার্থীর তালিকায় অমিত রক্ষিতের নাম উঠে এসেছিল। কিন্তু বিধানসভা ভোটে স্থানীয় প্রার্থীর জোরালো দাবির কারণে খোয়াইয়ে অমিতকে টিকিট দেয় নি বিজেপি। পরিবর্তে স্থানীয় প্রার্থী সুব্রত মজুমদারকে দেওয়া হয়েছিলো টিকিট। রামনগরেও সুরজিৎ দত্তের স্ল্যাম এরিয়ার ভোট ব্যাংকের কথা মাথায় রেখেই পুনরায় তাকে টিকিট দেওয়ার পক্ষে সায় দিয়েছিলো বিজেপি নেতৃত্ব।

এই মুহুর্তে সুরজিৎ দত্ত অতীত। তার মৃত্যুর কারনে আগামীতে অনুষ্ঠিত উপ নির্বাচনে অবশ্যই স্ল্যাম এরিয়ার ভোটাররা আর ফ্যাক্টর হবে না। বরং সুরজিত দত্তের উওরসুরী হিসাবে সামনে আসা বিজেপির প্রার্থীকেই তারা ভোট দেবে।এক্ষেত্রে অমিত রক্ষিত বা দীপক মজুমদারকে টিকিট দিলে বস্তির ভোটারদের মনে কোনো বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হবে না।

আগরতলা পুর নিগমের মেয়র দীপক মজুমদারও রামনগর কেন্দ্রের প্রবল দাবীদার। কিন্তু এই মুহূর্তে তিনি আছেন লাইন লাইটে।মেয়রের পদ থেকে সরে গেলে ধাক্কা লাগবে তার লাইম লাইটেও। এই ভুল অবশ্যই মেয়র করবেন না,বলেই মনে করছেন রাজনীতিকরা। বরং ২৮- র বিধানসভা নির্বাচনে দীপক মজুমদারের জন্য আরোও বড় সুযোগের হাতছানি থাকতে পারে।

নির্বাচনে জয়ী হলে তিনি সরাসরি মন্ত্রিসভায় পেতে পারেন গুরুত্বপূর্ন পদ। এটা এখন সম্ভব নাও হতে পারে। তিপ্রামথা যে কোনো সময়ে যোগ দিতে পারে সরকারে। তখন মন্ত্রিসভায় স্থান পাওয়ার কোনো সম্ভবনাই থাকবে না।স্বাভাবিক ভাবেই চতুর রাজনীতিবিদ মেয়র দীপক মজুমদার প্রার্থী হবেন কিনা তা নিয়েও গুঞ্জন।

প্রয়াত বিধায়ক সুরজিৎ দত্তের ভাইপো অভিষেক দত্ত নিজেকে “উওরসুরী” হিসাবে তুলে ধরতে পারেনি। অভিযোগ, নিজেই জড়িয়ে গিয়েছেন অপরাধ মূলক কাজকর্মের সঙ্গে।

সাধারণ মানুষের কাছে তার চেহারা অনেকটা কুৎসিত হয়ে গিয়েছে জনমনে গ্রহন যোগ্যতা একে বারেই নেই। তাছাড়া বিজেপিতে পরিবার তন্ত্র প্রায় অচল। বিজেপি নেত্রী পাপিয়া দত্ত, বা সুরজিৎ দত্তের ভাব শিষ্য তুষার ভট্টাচার্য’র নামও ঘুরছে বিজেপির অলিন্দে।কিন্তু শেষ পর্যন্ত ধোপে টিকবে না, তা নিয়ে সন্দিহান রাজনীতিকরা।