
ডেস্ক রিপোর্টার,আগরতলা।।
আজও ব্রাত্য দেশ নায়ক নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসু।১২৮ তম জন্ম দিনেও যোগ্য সন্মান পেলেন না তিনি।চূড়ান্ত ব্যর্থ গোটা বাঙালি জাতি।হিন্দি বলয়ের চক্রবুহ্যে থেকে বের হতে পারে নি বাঙালিও।
জহর লাল নেহেরু থেকে মনমোহন সিং। অটল বিহারী বাজপায়ী থেকে হালের নরেন্দ্র মোদী। তারা কেউই দেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের পুরোধা নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুকে যোগ্য সন্মান দিতে পারেন নি। হিন্দি বলয়ের কান্ডারীরা দশকের পর দশক সুভাষ চন্দ্র বসুকে হেয় প্রতিপন্ন করে চলেছেন। তার জন্য অবশ্যই দায়ী মেরুদণ্ড হীন বাঙালি জাতি। তাই সুভাষ চন্দ্র বসুর ১২৮ তম জন্ম বার্ষিকীকেও জাতীয় ছুটি হিসাবে ঘোষনা দিতে পারলো না কেন্দ্রের মোদী সরকার।

তবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ক্ষমতায় এসে ২৩- শে জানুয়ারিকে “পরাক্রম দিবস” হিসাবে ঘোষনা দিয়েছিলেন। এবং এদিন থেকেই শুরু প্রজাতন্ত্র দিবসের উদযাপন । দেশের কোনো সরকার তার দ্বারা গঠিত কমিশন দিয়ে এখনো নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর অন্তর্ধানের রহস্য উন্মোচন করতে পারে নি। নেতাজি অন্তর্ধান ইসুতে এখনো বহু ফাইল বছরের পর বছর লাল ফিতায় দম বন্ধকর অবস্থায় পড়ে আছে দিল্লির সরকারী ডাস্টবিনে। বলছেন,নেতাজীকে নিয়ে গবেষণা করা প্রাজ্ঞরা।

দেশকে ব্রিটিশের পরাধীনতার শৃঙ্খল থেকে মুক্ত করতে নিজের জীবন উৎসর্গ করে দিয়েছিলেন বাঙালির বীর সন্তান নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসু। তার ক্ষিপ্রতায় কম্পন শুরু হয়ে গিয়েছিল ব্রিটিশদের শিরা উপশিরায়। নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুই ব্রিটিশের রক্ত চক্ষু উপেক্ষা করে দেশের মাটিতে প্রথম উড়িয়ে ছিলেন ছিলেন ভারতীয় জাতীয় পতাকা। আক্ষরিক অর্থে নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুই হলেন প্রথম প্রধানমন্ত্রী। অথচ যুগের পর যুগ তিনিইব্রাত্যই থেকে গেলেন। হিন্দি বলয়ের ধান্দাবাজ রাজনীতিকরা সুভাষ চন্দ্র বসুর অস্তিত্ব মুছে ফেলার জন্য চেষ্টা করছে সর্বক্ষণ। আজও বহাল এই গভীর ষড়যন্ত্র’ র কালশিটে রেখা। দাবী, দেশের বাঙালি নেতৃত্বের।

নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুর জন্ম দিনে সরকারী – বেসরকারি ভাবে অনেক অনুষ্ঠান হয়ে থাকে।কিন্তু এই দেশের বাঙালিদের দাবি মেনে নেতাজি জন্ম দিবসকে জাতীয় ছুটি হিসাবে ঘোষনা করে নি কেন্দ্রিয় সরকার। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর বহু রাজনৈতিক দল দিল্লির মসনদে বসেছে। হয়েছেন একের পর এক প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু কোথায়? বাঙালির দাবী, তাদের কাছে বরাবর অরণ্যের রোদনের মতই। বিবেকানন্দ – বিদ্যাসাগর – রবীন্দ্র নাথ – রাজা রাম মোহনের বাঙালি সমাজ আজ মেরুদন্ড হীন। তাই মেরুদণ্ড না থাকা একটা জাতির চিৎকারে আন্দোলিত করতে পারে নি লালকেল্লাকে। ভারতীয় রাজনীতির পীঠস্থান সংসদ ভবনের দণ্ডমুণ্ডের কর্তাদের কর্ন কুহরেও পৌঁছাতে পারেনি বাঙালির আওয়াজ। কারণ এই দেশের বাঙালি আজ রাজনৈতিক ভাবে শত বিভক্ত। তাই বাঙালির গলার আওয়াজ দিনের পর দিন জীর্ণ হয়ে আসছে।স্বাভাবিক ভাবেই কংগ্রেস থেকে জনতা পার্টি,হালের বিজেপি নেতৃত্বের কাছে ব্রাত্যই থেকে গেলেন দেশের বীর সন্তান নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসু।

২৩- শে জানুয়ারিকে জাতিয় ছুটি দিন হিসাবে ঘোষনা করার জন্য বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কয়েকবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি দিয়েছিলেন। কিন্তু কোনো কাজ হয় নি। অথচ রাজনৈতিক ভাবে বিজেপি বাংলার প্রধান বিরোধী দল। গত লোকসভা নির্বাচনেও পেয়েছিল ১৮টি আসন। বাঙালি প্রধান ত্রিপুরাতেও ক্ষমতায় বিজেপি। ২৩- র ভোটে বাঙালিরাই বাঁচিয়েছে মান।

অসমের বাঙালিরা বিজেপিকে দুই হাত ভরে দিয়েছিলেন ভোট। সদ্য সমাপ্ত তেলেঙ্গানার নির্বাচনেও বিজেপির ত্রাতা ছিলো বাঙালি। তারপরও কেন নরেন্দ্র মোদী – অমিত শাহের কাছে ব্রাত্য থাকবেন নেতাজী সুভাষ? তবে যেখানে বাঙালির জাতির সন্মান ধুলোতে গড়াগড়ি খাচ্ছে, সেখানে নেতাজির জন্ম দিনকে জাতিয় ছুটি কিভাবে ঘোষণা করবেন গুজরাটি বেনিয়ারা? প্রশ্ন বাঙালি জাতির স্বার্থে কাজ করা লোকজন।