ডেস্ক রিপোর্টার, ৩মে।।
ঊষা বাজার ভারত রত্ন সংঘের সম্পাদক দূর্গা প্রসন্ন দেবের মৃত্যুর ৪৮ ঘন্টার অধিক সময় অতিক্রান্ত হলেও পুলিশ মূল কুশীলবদের গ্রেফতার করতে পারে নি। তারা কোথায় আছে, এখনোও নিশ্চিত হতে পারে নি। পুলিশ আদো খুনিদের জালে তুলতে পারবে কিনা তা বলবে সময়েই। তবে বৃহস্পতিবার রাতে এক লাস্যময়ী নারীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে পুলিশ। তার নাম সুস্মিতা সরকার।
” দুর্গা প্রসন্ন- র গাড়ির দরজায় কে নক করেছিলো?” অনুসন্ধানকারী পুলিশ এখন এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে ব্যস্ত।এটা এখনো পরিষ্কার হতে পারছে না তদন্তকারী পুলিশ।

“গত ৩০ এপ্রিল ঘটনার সন্ধ্যাতে শালবাগানে বিমান দাসের পাঠানো গাড়িতে করে গিয়েছিলেন দূর্গা প্রসন্ন। গাড়িটি শাল বাগান হাতি পাড়াতে যাওয়ার পর বিমানের দেওয়া গন্তব্য স্থলে থেমে যায়।তখন গাড়ির দরজায় কেউ এসে নক(knock) বা ঠকঠক করে। তখনই দূর্গা প্রসন্ন গাড়ির দরজা খোলে বেরিয়ে আসেন। কিছু বুঝে উঠার আগেই মুখে কালো কাপড় বাধা এক যুবক পর পর তাকে তিনটি গুলি করে। ঘটনাস্থলেই মাটিতে লুটে পড়েন দূর্গা প্রসন্ন।”- পুলিশকে এই তথ্য দিয়েছে গাড়ির চালক। দূর্গা প্রসন্ন হত্যার এই “সিন অফ ক্রাইম”- র কথা স্বীকার করেছিলেন খোদ পশ্চিম জেলার পুলিশ সুপার কিরণ কুমার।

দুর্গা প্রসন্ন হত্যাকাণ্ডের পর পুলিশ গাড়ির চালককে আটক করেছিলো। এবং তাকে জিজ্ঞাসাবাদও করে। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে চালক হত্যাকাণ্ডের ঘটনা এভাবেই বর্ণনা দিয়েছিলো। কিন্তু চালক জানে না কে গাড়ির দরজায় নক করেছে?তাকে চেনেও না। আর যে ব্যক্তি মুখে কালো কাপড় বেঁধে দূর্গা প্রসন্নকে পিস্তল থেকে একে একে তিনটি গুলি করে মৃত্যু নিশ্চিত করেছিলো, তাকে তো চেনার কোনো প্রশ্নই নেই। তদন্তকারী পুলিশ গাড়ির চলকের কথার উপর ভিত্তি করেই তদন্ত শুরু করেছে।কিন্তু কূল কিনারা পাচ্ছে না। তদন্তকারী পুলিশ এই গাড়িটিকেও আটক করেছে।

তদন্তকারী পুলিশের একাংশের গাড়ির চালকের বক্তব্য নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করছে। আটককৃত গাড়ির চালকের বাড়ি খোয়াইয়ে। সে নিজেও নেশাগ্রস্থ ছিলো,যখন আটক করা হয়েছিলো। গাড়ির চালকের কথা অনুযায়ী, দূর্গা প্রসন্ন গাড়ির দরজা খোলার সঙ্গে সঙ্গেই সামনে থেকে গুলি করা হয়েছিল।যদি তাই হয়, তাহলে গাড়ির বডিতে রক্তের দাগ থাকাটা স্বাভাবিক। কারণ দূর্গা প্রসন্ন গাড়ি থেকে রাস্তায় দুই পা রাখার সঙ্গে সঙ্গেই তাকে গুলি করা হয়েছিলো।কিন্তু এয়ার পোর্ট থানার পুলিশের উদ্ধার করা গাড়িতে কোনো রকমের রক্তের দাগ খুঁজে পাওয়া যায়নি। সিন অফ ক্রাইম অনুযায়ী, গাড়িতে রক্তের দাগ থাকাটাই স্বাভাবিক ছিল।

পুলিশের সন্দেহ, হয়তো বা যে গাড়ির সামনে দুর্গাপ্রসন্নকে গুলি করা হয়েছিল, ঘটনার পরপরই রক্তমাখা সেই গাড়িটিকে সরিয়ে নিয়ে যায় আততায়ীরা। এবং তারা এই গাড়ি করে ঘটনাস্থল থেকে কেটে পড়ে।পরিবর্তে অন্য একটি গাড়ি আগেই রেখে ছিলো পাশে। এবং এই পরিবর্তিত গাড়ির চালকের মুখ দিয়ে নতুন স্ক্রিপ্ট শুনিয়ে দেওয়া হয়েছে পুলিশকে। তাই আটককৃত নেশাগ্রস্থ চালকের বক্তব্য থেকে কোনো “আলামত” উদ্ধার করতে পারছে না তদন্তকারী পুলিশ। অর্থাৎ পুলিশের চোখে গোলক ধাঁধা লাগানোর জন্যই অমিত ঘোষের নির্দেশনায় ঘটনাস্থলেই পরিবর্তিত গাড়ি এনে রেখে দিয়েছিলো আততায়ীরা। এই পথেই আপাতত হাঁটছে তদন্তকারী পুলিশ।