ডেস্ক রিপোর্টার,১৪ মে।
        মেয়েকে নিয়মিত নির্যাতন করে তার স্বামী।মেয়ের সংসার বাঁচাতে অসহায় বাবা গিয়েছিলেন তার শশুর ঘরে। মেয়ে ও জামাতাই নিয়ে বসেন সমস্যার সমাধান করতে। এই মীমাংসার সভাতেই আলোচনা চলাকালীন অচামকা জামাই দা দিয়ে আঘাত করে মেয়ের উপর। মেয়ের মাথায় রক্ত দেখে নিজেকে ধরে রাখতে পারেননি এক অসহায় পিতা। ঘটনাস্থলেই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় হতভাগী মেয়ের শোকার্ত পিতার। এই হৃদয় বিদারক ঘটনা খোয়াই থানাধীন উত্তর দুর্গানগর গ্রামে। নিহত পিতা
আগরতলার  শানমুড়া এলাকার নিরুলাল দাস। মঙ্গল বার সকলের এই ঘটনায় শোকের ছায়া নেমে আসে শানমুড়া এলাকায়। পুলিশ গ্রেফতার করে অভিযুক্ত স্বামী অনুপ সাহাকে । প্রাথমিক ভাবে তার আহত স্ত্রীর জয়া দাসের চিকিৎসা চলে খোয়াই জেলা হাসপাতালে। পরে তাকে রেফার করা হয় জিবি হাসপাতালে।

।।অভিযুক্ত স্বামী অনুপ ও জয়া।।

গতবছর খানেক আগে আগরতলা শানমুড়া এলাকার বাসিন্দা নিরুলাল দাস তার মেয়ে জয়াকে বিয়ে দিয়েছিলেন খোয়াই উত্তর দুর্গানগরের বাসিন্দা অনুপ সাহার কাছে। অভিযোগ, বিয়ের পর থেকেই স্বামী অনুপ সেন জয়াকে মারধর করতে থাকে। এই নিয়ে বহুবার বসেছিল বিচার সভাও। তাতেও কোন সমাধান সূত্র বের হয়নি। দিনের পর দিন অনুপ তার স্ত্রীর উপর অত্যাচারের স্টিম রোল বাড়িয়ে দেয়। সর্বশেষে সোমবারেও অনুপ ও জয়ার মধ্যে ঝামেলা হয় ।এই ঝামেলা মিটমাট করার জন্য মঙ্গলবার আগরতলার শানমুড়া থেকে মেয়ের বাড়িতে ছুটে গিয়েছিলেন নিরু লাল দাস। মেয়ে ও জামাইয়ের মধ্যে চলতে থাকা পারিবারিক কলহ মিটমাট করতে আলোচনায় বসে ছিলেন তিনি।আলোচনা চলা কালীন হঠাৎ করে মেয়ের জামাই অনুপ তার স্ত্রী জয়াকে দা দিয়ে আক্রমণ করে। ঘটনাস্থলেই রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়েন গৃহবধূ জয়া। মেয়ের এই অবস্থা দেখে হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন অসহায় বাবা নিরুলাল। তিনি এই ঘটনা সহ্য করতে পারেননি। সঙ্গে সঙ্গেই তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হন। এবং ঢলে পড়েন মাটিতে। উপস্থিত লোকজন নিরু লাল দাসকে নিয়ে আসে খোয়াই জেলা হাসপাতালে । কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।


পুলিশ অবশ্যই ঘটনার পর পর গ্রেফতার করে অভিযুক্ত স্বামী অনুপ সাহা তাকে মঙ্গলবারেই আদালতে সোপর্দ করা হয়। আইন চলবে,আইনের মতো করেই। সুস্থ হয়ে উঠবেন জয়াও।কিন্তু আর ফিরে আসবে না তার আদরের পিতা নিরু লাল দাস। আর যাবেন না মেয়ের শশুর ঘরে। তিনি যে বিদায় নিয়েছেন চিরতরে। এটাই কি বিধাতার নিষ্ঠুর পরিহাস?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *