“তদন্তের শুরুতেই পুলিশের ব্যাপক খটকা লাগে এবং পুলিশের সন্ধিগ্ন চোখ চলে যায় তার স্ত্রী পূর্ণিমা দেবনাথের দিকে। পুলিশ পূর্ণিমাকে সন্দেহের রাডারের মধ্যে রেখে তার মোবাইল ফোন খতিয়ে দেখে।” …

মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর বাইকে করে কিঙ্কর দেবনাথের লাশ নিয়ে ফেলে দিয়েছিল পুলিনপুর এলাকায়।

ডেস্ক রিপোর্টার,২২ জুলাই।।
তেলিয়ামুড়া ফরেস্ট অফিসের বিট অফিসার কিঙ্কর দেবনাথ খুনের ঘটনায় গ্রেফতার তার স্ত্রী। সঙ্গে স্ত্রী’র প্রেমিক। স্ত্রী’র নাম পূর্ণিমা দেবনাথ ও প্রেমিক অমিত ঘোষ। তদন্তকারী পুলিশ শনিবার রাতে উভয়কে গ্রেফতার করে তেলিয়ামুড়া থানায় নিয়ে আসে। রাতভর চলে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ। রবিবার ধৃত পূর্ণিমা দেবনাথ ও তার প্রেমিক অমিত ঘোষকে আদালতে সোপর্দ করবে পুলিশ। জানিয়েছেন তেলিয়ামুড়া এসডিপিও বিজয় সেন।

গত ২০ জুলাই আসাম – আগরতলা জাতীয় সড়কের পুলিনপুর এলাকা থেকে বন দপ্তরের বিট অফিসার কিঙ্কর দেবনাথের লাশ উদ্ধার করা হয়। তেলিয়ামুড়া থানার পুলিশ বিট অফিসারের লাশ উদ্ধার করে একটি খুনের মামলার রুজু করে। তদন্তের শুরুতেই পুলিশের ব্যাপক খটকা লাগে এবং পুলিশের সন্ধিগ্ন চোখ চলে যায় তার স্ত্রী পূর্ণিমা দেবনাথের দিকে। পুলিশ পূর্ণিমা দেবনাথকে সন্দেহের রাডারের মধ্যে রেখে তার মোবাইল ফোন খতিয়ে দেখে। তখনই ধীরে ধীরে পুলিশের কাছে স্পষ্ট হয়ে ওঠে বন দপ্তরের বিট অফিসার কিঙ্কর দেবনাথের খুনের “মোডাস অপরেন্ডি”। তথ্য প্রমানের ভিত্তিতে পুলিশের কাছে পরিষ্কার হয়ে যায় কিঙ্কর দেবনাথের মৃত্যুর নেপথ্যে রয়েছে তার স্ত্রীর পরকীয়া সম্পর্ক।

পুলিশ পূর্ণিমা দেবনাথকে সন্দেহের রাডারের মধ্যে রেখে তার মোবাইল ফোন খতিয়ে দেখে। তখনই ধীরে ধীরে পুলিশের কাছে স্পষ্ট হয়ে ওঠে কিঙ্কর দেবনাথের খুনের “মোডাস অপরেন্ডি”।

পুলিশ তদন্ত নেমে জানতে পারে স্থানীয় প্রমোটর অমিত ঘোষের সঙ্গে বিট অফিসারের স্ত্রীর পূর্ণিমা দেবনাথের অবৈধ সম্পর্কের কথা। এই অবৈধ সম্পর্কের জের ধরেই শেষ পর্যন্ত পূর্ণিমা ও অমিত সিদ্ধান্ত নেয় কিঙ্করকে চিরতরে পৃথিবী থেকে সরিয়ে দেওয়ার। সিদ্ধান্ত মোতাবেক তারা রচনা করে কিঙ্করের খুনের স্ক্রিপ্ট। এবং এই স্ক্রিপ্ট বাস্তবায়িত করে।

তেলিয়ামুড়া এসডিপিও বিজয় সেন জানিয়েছেন, পুলিশের কাছে খুনের মোডাস অপারেন্ডি পরিষ্কার হওয়ার পর তারা কিঙ্করের স্ত্রী পূর্ণিমাকে আটক করে। পুলিশি জেলার মুখে ভেঙ্গে পড়ে পূর্ণিমা এবং কবুল করে তার অপরাধ। পূর্ণিমা পুলিশকে জানায় তার সঙ্গে প্রমোটর অমিত ঘোষের অবৈধ সম্পর্ক ছিল। এই সম্পর্কই শেষ পর্যন্ত কিঙ্কর দেবনাথকে ঠেলে দেয় মৃত্যুর মুখে। মূলত কিঙ্কর দেবনাথকে অতিরিক্ত ঘুমের ঔষধ খাইয়ে দিয়েই খুন করা হয়। মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর বাইকে করে কিঙ্কর দেবনাথের লাশ নিয়ে ফেলে দিয়েছিল পুলিনপুর এলাকায়। যৌথভাবেই পূর্ণিমা ও অমিত এই কাজটি করে।

পূর্ণিমা দেবনাথের স্বীকারোক্তির পর তদন্তকারী পুলিশ জালে তুলে অমিত ঘোষকে। নিয়ে আসে তেলিয়ামুড়া থানায়। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে অমিত ঘোষও তার অপরাধ স্বীকার করে। এরপরই পুলিশ আনুষ্ঠানিকভাবে পূর্ণিমা দেবনাথ ও অমিত ঘোষকে গ্রেফতার করে।