ডেস্ক রিপোর্টার,১৫জানুয়ারি।।
২৩-এ রাজ্য বিধানসভা নির্বাচন। সময় বাকি আরো এক বছর।কিন্তু এখন থেকেই শুরু হয়ে গেছে কাউন্ট-ডাউন।
শাসক দল বিজেপিকে আটকাতে একই মঞ্চে আসতে চলছে কংগ্রেস-তিপ্রামথা ও তৃণমূল কংগ্রেস। বলছে রাজনীতিকরা।আবার কেউ কেউ বলছে তিপ্রামথা শেষ মুহূর্তে যোগ দিতে পারে বিজেপি’র সঙ্গে। ২৩-র নানান ভোট সমীকরণের কথা বলছে রাজনৈতিক বিশারদরা। চলতি বছর দেশের পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফলের উপর নির্ভর করবে রাজ্য রাজনীতির নয়া ভোট সমীকরণও।
ত্রিপুরার রাজনীতিতে বরাবর “পাহাড়” গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। রাজনীতিকরা বলে থাকেন, “পাহাড় যার রাজ্য তার”। এটাই বাস্তব। এই মুহূর্তে পাহাড় তিপ্রামথার দখলে। একসময় পাহাড়ে একছত্র আধিপত্য বিস্তার করে রেখেছিল বামেরা। রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল বামেরা পাহাড়ে তাদের শক্তি পুনরুদ্ধার করতে নির্দিষ্ট পরিকল্পনা নিয়েই শুরু করেছে কাজ।আর যদি বামেরা পাহাড়ে তাদের পরিকল্পনায় সফল হয়ে যায়,তাহলে ২৩-র পাল্টে যেতে পারে ভোট সমীকরণ। পাল্লা ভারী হয়ে উঠবে বামেদের।এমনই বক্তব্য রাজ্যের বাম নেতৃত্বের।
রাজ্য রাজনীতির ইতিহাস ঘাটলে দেখা যায়, বামেরা যখন পাহাড়ে এডিসি নির্বাচনে পর্যুদস্ত হয়েছিলো,তার পরের বিধানসভা নির্বাচনে পাহাড় ছিলো বামেদের দখলে। এই অঙ্ক মাথায় রেখেই ২৩-র বিধানসভা নির্বাচনে পাহাড়ে ভালো ফলাফলের আশা করছে বামপন্থীরা।
“জনতার মশাল”র কাছে একান্ত সাক্ষাৎকারে দিতে গিয়ে সিপিআইএম রাজ্য সম্পাদক জিতেন্দ্র চৌধুরী বলেন, “১৯৯০-সালে এডিসি নির্বাচনে বামফ্রন্ট হেরে গিয়েছিলো।কিন্তু ১৯৯৩-র বিধানসভা নির্বাচনে পাহাড়-সমতলে বামেদের জয়জয়কার হয়।রাজ্যে ক্ষমতায় সত্ত্বেও ২০০০ সালে এডিসিতে সিপিআইএম পরাজিত হয়েছিলো।২০০৩-র বিধানসভা নির্বাচনে পাহাড়ে ধুয়ে মুছে গিয়েছিলো বিরোধী শক্তি। ক্ষমতায় আসে বামেরা। সুতরাং পাহাড়ে এখনো বামেদের ভীত যথেষ্ট শক্ত। পাহাড়ে অস্বাভাবিক পরিস্থিতির কারণে কেউ কেউ ভাবছে পাহাড়ে বামেরা দুর্বল।পাহাড়ে মূল উন্নয়ন করছে বামেরা।বাকীরা তো লুঠ করেছে।এখনো তাই চলছে।তিপ্রামথা ক্ষমতায় আসার পর পাহাড়ে কি চলছে তা আচ করতে পারছে সাধারণ মানুষ।”
১৯৯৩,২০০৩-র মতোই ২০২৩-ও পুনরাবৃত্তি হবে। এমন স্বপ্ন নিয়েই পাহাড়ে কাজ করছে বামেরা। এই জন্যই তিপ্রামথার উত্থানকে “সাময়িক”বলে কটাক্ষ করেন সিপিআইএম রাজ্য সম্পাদক জিতেন্দ্র চৌধুরী। ৯৩ ও২০০৩-এ এডিসি নির্বাচনে সিপিআইএমের ভরাডুবির পর তারা ঘুরে দাঁড়িয়েছিলো। ২১-র এডিসি নির্বাচনেও বামেরা ধুরে মুছে ছাপ হয়ে যায়। দশ শতাংশ নেমে আসে তাদের ভোট।অথচ তারাই এডিসি’র শেষ ১৫বছরের শাসক শক্তি।তবে ২০১৮-র বিধানসভা নির্বাচনে পাহাড়ের ২০টি আসনের মধ্যে মাত্র দুইটি আসন দখল করতে সক্ষম হয়েছিলো। জোলাইবাড়ি ও মনু এই দুইটি আসনে নিজেদের অস্তিত্ব ধরে রেখেছিলো বামেরা।
বামেদের খবর অনুযায়ী, পাহাড়ে গণ মুক্তি পরিষদ তাদের নেটওয়ার্ককে আরো মজবুত করে চলছে।সিপিআইএমের রাজ্য সম্পাদক জিতেন্দ্র চৌধুরীর নেতৃত্বে পাহাড়ে জিএমপি ২৩-র লক্ষ্যে গকুলেই কাজ করছে।এবং শক্ত করছে নিজেদের ভীত। পাহাড়ে যে বামেরা দুর্বল হয়ে যায়নি তা প্রমাণ করার জন্য বাম নেতৃত্ব ২৩-কে বেছে নিয়েছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
৯৩ ও ২০০৩ এ পাহাড়ে লড়াই হয়েছিলো একের বিরুদ্ধে একের।তবে ২৩-এ কিন্তু এরকম।অঙ্ক হবে না।অনেকাংশে চিত্র ভিন্ন। পাহাড়ের বর্তমান শাসক দল তিপ্রামথা, বিরোধী দল বিজেপি ও সিপিআইএম এই তিন দলের লড়াই হবে। আপাতত চিত্র এমটাই।তবে যেকোনো সময় অদল-বদল ঘটতে পারে এই চিত্রের। হতে পারে নতুন সমীকরণ।তার জন্য অবশ্যই অপেক্ষা করতে হবে ২৩-র প্রাকলগ্ন পর্যন্ত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *