ডেস্ক রিপোর্টার, ২২অক্টোবর।।
“গোটা দেশ থেকেই হারিয়ে গেছে সিপিআইএম। আর ২০২৩- র বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফলের পর রাজ্যের সিপিআইএমের বড় বড় নেতারাও হার্টফেল করে মারা যাবেন।”… বক্তা রাজ্যের সাংসদ রেবতী ত্রিপুরা। শনিবার গন্ডাছড়া বাজারে অনুষ্ঠিত মেগা যোগদান সভাতে একথা বলেন তিনি। এদিনের জনসভায় রাইম্যা ভ্যালী কেন্দ্রে ৫১১পরিবারের ১৫০৪জন ভোটার বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। তাদের হাতে দলীয় পতাকা তুলে দেন প্রদেশ বিজেপির সভাপতি রাজীব ভট্টাচার্য ও সাংসদ রেবতী ত্রিপুরা সহ মণ্ডল নেতৃত্ব।

সাংসদ রেবতী ত্রিপুরা বলেন, বিজেপি সরকারের জামানায় রাজ্যের ঘরে ঘরে পৌঁছে গেছে সুশাসন। জল থেকে ঘর,সামাজিক ভাতার সুযোগ সুবিধা পেয়েছে মানুষ। সাংসদের কথায়, বিজেপি বিভিন্ন প্রকল্পের সুবিধা দেওয়ার ক্ষেত্রে দলীয় করণ করে না। এই কারণেই এখন সিপিআইএমের ঘরেও সুশাসন পৌঁছে গেছে। এবং গ্যাস সিলিন্ডারের মাধ্যমে বামেদের রান্না ঘরেও পৌঁছে গেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বিজেপির জামানায় বাম কর্মী – সমর্থকরাও সমস্ত সরকারী সুযোগ সুবিধা পাচ্ছে। রাজ্যের পূর্ব আসনের সাংসদ রেবতী ত্রিপুরা কৌতুক করে বলেন, রাইম্যা ভ্যালী কেন্দ্রের সিপিআইএমের প্রাক্তন বিধায়ক ললিত মোহন ত্রিপুরার বাড়িতেও বিজেপি সরকার জল ও গ্যাস পৌঁছে দিয়েছে। অথচ ২৫বছরের বাম জামানায় লতিত ত্রিপুরা তা করতে পারেন নি।
প্রদেশ বিজেপির জনজাতি মুখ সাংসদ রেবতী ত্রিপুরা তীব্র ভাষায় আক্রমন করেন তিপ্রা মথাকে। তিনি বলেন, তিপ্রামথা হলো “লাল মথা”। অর্থাৎ বাম নেতারা বিজেপির বিরুদ্ধে অপপ্রচার করার জন্য তাদের লোকজনকে মথাতে পাঠিয়ে দিয়েছে। এই কারণেই মথার লোকজন দলের সুপ্রিমো প্রদ্যুৎ কিশোরের কথাকে মান্যতা দেয় না। এর পেছনেও কারণ রয়েছে।কেননা, কমিউনিস্টরা কখনো রাজতন্ত্রকে মেনে নিতে পারেনি। শুধু মাত্র বিজেপি সরকার মহারাজা বীর বিক্রম কিশোর মানিক্যকে যোগ্য সন্মান দিয়েছে।

গ্রেটার তিপ্রাল্যান্ডের প্রসঙ্গে সাংসদ রেবতী ত্রিপুরার বক্তব্য, এডিসি নির্বাচনের সময় রাজা (!) প্রদ্যুৎ কিশোর ঘোষণা দিয়েছিলেন ক্ষমতায় বসার পর পরই এডিসিতে গ্রেটার তিপ্রাল্যান্ডের বিল পাস করা হবে। সাংসদের প্রশ্ন, তিপ্রামথা ক্ষমতায় বসেছে দেড় বছর হয়ে গেছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত কেন এডিসিতে গ্রেটার তিপ্রাল্যান্ডের বিল পাস হয়নি?

রেবতী ত্রিপুরা দৃঢ় প্রত্যয়ের সঙ্গে বলেন, ২৩ ‘ র বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি এককভাবে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করবে।৬০ এ ৬০টি আসন না পেলেও কিছুটা কম পাবে । কিন্তু সরকার গঠন করবেই। তবে ৬০টি আসনের লক্ষ্য মাত্রাকে সামনে রেখেই কাজ করছে বিজেপি। শুক্রবার রাজধানীতে অনুষ্ঠিত বামেদের “বিশাল জনসভা” প্রসঙ্গে সাংসদ রেবতী ত্রিপুরা বলেন, রাজ্যের প্রতিটি বিধানসভা কেন্দ্র থেকে পাঁচশো জন করে কর্মী- সমর্থক আস্তাবল গিয়েছে।সেই হিসেব অনুযায়ী, ত্রিশ হাজার মানুষ মাঠে যেতেই পারে। অথচ প্রতিটি বিধানসভা কেন্দ্র বামেদের পাঁচ থেকে ছয় হাজার লোকজন রয়েছে। তারা তো যায় নি। সুতরাং আস্তাবল মাঠের এই লোকজন দেখে বামেরা বলছে ২৩ – এ তারা ক্ষমতায় ফিরবে। তাহলে কিভাবে ক্ষমতায় আসবে বামেরা?

এদিন রাজ্য বিজেপির সভাপতি রাজীব ভট্টাচার্যও বামেদের তীব্র সমালোচনা করেন। রাজীব বলেন, “২৫ বছর ধরে ক্ষমতায় ছিলো বামেরা। তারপরও বিজেপিকে তারা একা আটকাতে পারবেনা। তার জন্য মহাজোট করতে চাইছে। তাও আবার কংগ্রেসের সঙ্গে। বামেদের জন্য এটা লজ্জার। তা থেকে স্পস্ট মানুষ বামেদের প্রত্যাখ্যান করছে। বামেদের সঙ্গে একই সারিতে এনে নাম না করে তিপ্রামথাকে আক্রমন করেন রাজীব ভট্টাচার্য্য।

তিনি বলেন, পৃথক রাজ্য,স্বাধীন ত্রিপুরা, গ্রেটার তিপ্রাল্যাণ্ড নিয়ে অনেকেই আন্দোলন করছে।কিন্তু কোনো দিন কেন জনজাতিদের পানীয় জল, স্বাস্থ্য, শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে আন্দোলন করেনি। শুধু মাত্র বিজেপি সরকারই জনজাতিদের স্বার্থ নিয়ে চিন্তা করে। এবং সেই চিন্তা ভাবনা বাস্তবে পরিণত করে। এদিন ধলাই জেলা সফরে জেলার কার্যকর্তাদের সঙ্গে সাংগঠনিক বৈঠক করেন সভাপতি রাজীব ভট্টাচার্য ও সাংসদ রেবতী ত্রিপুরা।