ডেস্ক রিপোর্টার,৮ফেব্রুয়ারি।।
রাজনৈতিক সন্ন্যাসে গেলেন মানিক সরকার।সরে গেলেন সক্রিয় রাজনীতি থেকে।২৩র মহাযুদ্ধের অলিন্দে থাকবেন না মানিক। তবে যুদ্ধের প্রচারে সাবলীল তিনি।
মানিক সরকার।তিনি রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী।বর্তমান বিরোধী দল নেতা। রাজ্য থেকে এক মাত্র পলিটব্যুরোর সদস্য। টানা ২০ বছর রাজ্যের এবং দেশের কমিউনিস্ট রাজনীতির মুখ ছিলেন তিনি। রাজ্য রাজনীতির দীর্ঘ সময়ের মুখ্যমন্ত্রী।২৩ র ভোটের পর কমিউনিস্ট রাজনীতির এই আইকনকে মানুষ দেখতে পাবে না বিধানসভায়। তার দল ক্ষমতায় এলে তিনি থাকবেন না মন্ত্রিসভায়। তারপরও কমিউনিস্ট রাজনীতিতে মানিক সরকার থাবেন “ব্র্যান্ড নেম” হিসাবেই।
আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে মানিক সরকার লড়াই করবেন না। তাই তিনি অনেকটা ফিকে হয়ে গেছেন মিডিয়ার প্রচার থেকেও। তারপরও ত্রিপুরার রাজনীতিতে মানিক সরকার যে দাগ কেটে গেছেন তা লেখা থাকবে চিরদিন। আর কোনো মুখ্যমন্ত্রী এতো দিন এক চেয়ার ধরে রাখতে পারবে কিনা তাও যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে।
রাজনীতিকরা বলছেন, মানিক সরকারের জামানায় রাজ্যে আক্ষরিক উন্নয়ন হয়েছে। ছিলো উন্নয়নের গতি। ছিল ধারাবাহিকতা।তিনি ডান – বাম মুখ্যমন্ত্রীদের মধ্যে আজও অদ্বিতীয়। তবে মানিক সরকারের হাত ধরেই রাজ্য রাজনীতির সূচকের উর্ধ্বে উঠেছিলো কমিউনিস্টরা।আবার তার জামানাতেই সূচকের নিচে চলে আসতে হয়েছিল সিপিআইএমকে।
২৩ র ভোটে সিপিআইএম মানিক সরকারের জনপ্রিয়তার ফ্লেভার কাজে লাগতে চাইছে। রাজ্য রাজনীতিতে মানিক সরকারের জনপ্রিয়তা এখনো অটুট।শুধু কমিউনিস্ট নয়, কংগ্রেস – বিজেপির সাধারণ কর্মী সমর্থকদের মধ্যেই মানিক আজও জনপ্রিয়। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকারের হাত ধরেই রাজ্যে স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচি একটা আন্দোলনে পরিণত হয়েছিলো।এই কারণে মানিক জামানায় রাজ্যের হাসপাতাল গুলিতে ছিলো না রক্তের স্বল্পতা। মানিক জামানতেই রেগার আদলে পুর এলাকায় চালু হয়েছে ছিলো টুয়েপ। এতে শহরের গরীব অংশের মানুষ লাভবান হয়েছিলো। এছাড়াও প্রচুর প্রকল্প ঘোষনা করেছিলেন মানিক সরকার। গোটা রাজ্যেই সীমিত ক্ষমতার মধ্যে থেকে হয়েছিলো সাধারন মানুষের অর্থনৈতিক মান উন্নয়ন। সব মিলিয়ে মানিক সরকারের জামানায় নেহাৎ খারাপ ছিলো না, রাজ্যের মানুষ।
তবে সিপিআইএমের নিচু স্তরের নেতাদের দুর্নীতির কারণে মানুষ হয়ে উঠেছিলো বীতশ্রদ্ধ। এই কারণেই ১৮ ভোটে রাজ্য রাজনীতির দানবীয় সংগঠন সিপিআইএম তাসের ঘরের মতো ভেঙ্গে পড়েছিলো। কমিউনিস্টদের আস্থা ভাজন মানিক দাদার পক্ষেও সম্ভব হয় নি বাম দূর্গ রক্ষা করা। তবে ২৩ র মহারণেও বামেদের ভোট টানার ক্ষেত্রে মুখ্য ভূমিকা পালন করবেন মানিক সরকার।বলছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।
কিন্তু আজ মানিক সরকার সক্রিয় রাজনীতি থেকে অব্যাহতি নেওয়ার পর,বহু মানুষ কাকের মত মুখ মুছে নিয়েছেন।তাদের মূখে এখন শোনা যায়, মানিক সরকার তার জামানায় নাকি কিছুই করেন নি। আসলে এই রাজনীতি বড় নিষ্ঠুর। যত দিন ক্ষমতার অলিন্দে নেতারা থাকবেন, ততো দিনই তাদের কদর।ক্ষমতায় না থাকলে গুরুত্বহীন থাকেন তারা। আর এটাই রূঢ় বাস্তব। তাই তো টানা কুড়ি বছরের মুখ্যমন্ত্রীও রাজনীতির পাতে হয়ে উঠেন অপাংতেয়।
