
ডেস্ক রিপোর্টার, ৭মার্চ।।
আশীষ কুমার সাহা।রাজ্য রাজনীতির একটি ব্র্যান্ড নেম। স্বজন ভদ্র লোক হিসাবেই তিনি পরিচিত। রাজনৈতিক ক্যারিয়ার বেশ লম্বা। এবং সুনামের সঙ্গেই বিভিন্ন সময় সংসদীয় রাজনীতির দায়িত্ব পালন করেছেন। বরাবর বড়দোয়ালি বিধানসভা কেন্দ্রটি ছিলো আশীষ কুমার সাহার গড়। কংগ্রেসের টিকিটে ধারাবাহিক ভাবে তিনি এই কেন্দ্র থেকে জয়ী হয়ে আসছিলেন।১৮- র নির্বাচনে কংগ্রেস ছেড়ে গিয়েছিলেন বিজেপিতে। এবং আগলে রেখেছিলেন নিজের গড়।কিন্তু ছন্দ পতন ঘটে বিজেপি ছাড়ার পর।
আশীষ কুমার সাহা কেন বিজেপি ছাড়লেন?এই প্রশ্নের উত্তর সবার জানা। রাজ্য রাজনীতিতে
আশীষ বরাবর বর্মন গোষ্ঠীর লোক হিসাবেই পরিচিত।সুদীপ রায় বর্মন তার বন্ধু। বর্মন গোষ্ঠীর হাত ধরেই আশীষ সাফল্য কুড়িয়েছেন রাজ্য রাজনীতিতে।বন্ধু সুদীপের সঙ্গে তিনি কংগ্রেস ছেড়ে গিয়েছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসে।এরপর টিএমসি ছেড়ে গিয়েছিলেন বিজেপিতে।কিন্তু ১৮- র বিজেপি আই পি এফ টি সরকারের দেড় বছরের মধ্যেই তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেবের সঙ্গে সুদীপ রায় বর্মনের ঝামেলা শুরু হয়।কিন্তু আশীষ ছিলেন নির্ভেজাল। সুদীপ – বিপ্লবের ঝামেলার সময় বিজেপি আশীষ কুমার সাহাকে মন্ত্রিত্বের অফার দিয়েছিলেন।কিন্তু বন্ধু সুদীপের দিকে তাকিয়ে আশীষ বিজেপি নেতৃত্বের অফার পত্র পাঠ বিদায় করে দেন। বিজেপি নেতৃত্ব শেষ পর্যন্ত চেষ্টা চালিয়ে ছিলেন আশীষকে ধরে রাখার জন্য।কিন্তু ব্যর্থ হয়। আর আশীষও বন্ধুত্বের নিদর্শন রাখতে গিয়ে বিজেপির মূল স্রোত থেকে দূরে সরে আসেন।

এক সময় বিজেপিকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুদীপের সঙ্গে – আশীষও বিজেপি ছেড়ে বেরিয়ে আসেন।পদত্যাগ করেন বিধায়ক পদ থেকেও।তখন থেকেই ধীরে ধীরে আশীষ রাজনৈতিক ভাবে ব্যাকফুটে চলে যান। ২০২২- র উপ নির্বাচন থেকে আশীষ কুমার সাহার অবনমন শুরু হয়। উপ ভোটে তিনি পরাজিত হয়। তার প্রতিপক্ষ ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী ডা: মানিক সাহা। ২৩- র ভোটে বামেদের সঙ্গে জোট করে বিজেপির প্রার্থী তথা মুখ্যমন্ত্রী ডা: মানিক সাহার সঙ্গে লড়াই করেছিলেন।কিন্তু ভাগ্যের পরিহাস! সদ্য সমাপ্ত বিধানসভা নির্বাচনেও আশীষ কুমার সাহাকে পরাজয় বরণ করতে হয়েছে। আগামী দিনে আশীষ কুমার সাহার পক্ষে বড়দোয়ালী বিধানসভা কেন্দ্র থেকে লড়াই করে ভোট বৈতরণী পাড় হওয়া শুধু অসম্ভব নয়, অলীক স্বপ্নও বটে। রাজনীতিকরা বলছেন, স্বাভাবিক ভাবেই এক গভীর অমাবস্যায় ধাবিত হচ্ছে আশীষ কুমার সাহার রাজনৈতিক জীবন। রাজ্য রাজনীতিতে
আশীষ কুমার সাহা আর মাথা তুলে দাঁড়াতে পারবেন কিনা তা নিয়ে ঘোর সন্দেহ প্রকাশ করেছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা। তার পেছনে বড় কারণ সুদীপের প্রতি আশীষের বন্ধুত্বের নিদর্শন। রাজনীতিতে এরকম বন্ধুত্বের নিদর্শন নিঃসন্দেহে বিরল। রাজনীতির অভিধানে যেখানে ডান হাত বাম হাতকে বিশ্বাস করতে পারেনা, সেখান বন্ধুত্বের জন্য আশীষের ত্যাগী মনোভাব সত্যি প্রশংসার যোগ্য।