
ডেস্ক রিপোর্টার,আগরতলা।।
অবশেষে টনক নড়লো উত্তর জেলা প্রশাসনের। কাঞ্চনপুরে অবৈধ ভাবে পাট্টা দেওয়া জমি জবরদখলকারী প্রাক্তন বৈরীদের জমি ছাড়ার জন্য সময়সীমা বেঁধে দিয়েছে উত্তর জেলা প্রশাসন।

আগামী রবিবারের মধ্যে জমি না ছাড়লে প্রশাসন উচ্ছেদ অভিযান শুরু করতে বাধ্য হবে। বুধবার উত্তর জেলার জেলা শাসক নাগেশ কুমার বি কাঞ্চনপুরে এসে জমি জবরদখলকারী প্রাক্তন বৈরীদের এই হুশিয়ারি দিয়ে যান।

পাশাপাশি এলাকার যেই সমস্ত জনজাতি সম্প্রদায়ের মানুষের নামে পাট্টা ইস্যু হয়েছে তারাই এখন মাঠে নেমেছে। প্রাক্তন বৈরীদের বিরুদ্ধে ঘোষণা করেছে জেহাদ ঘোষণা। সাধারণ জনজাতিদের বক্তব্য ,প্রাক্তন জঙ্গিরা জমি না ছাড়লে তারাও বৃহত্তর আন্দোলনে পথ বেছে নিতে বাধ্য হবে। তাতে বিগড়ে যেতে পারে পরিস্থিতি। তখন তার দায়ভার নিতে হবে গোটা উত্তর জেলা প্রশাসনকেই।

গত কয়েকদিন ধরেই প্রাক্তন বৈরীদের জমি জবর দখলের কারণে তপ্ত পরিবেশ বিরাজ করছে দেউ উপত্যকা কাঞ্চনপুরে। মহকুমার মনু-মনপুঁই সড়ক সংলগ্ন ফরেস্ট ল্যান্ড ও পাট্টা দেওয়া জমি জবরদখল করে প্রাক্তন বৈরীরা। তারা জমি দখল করে অস্থায়ী ঘরবাড়ি বানাতে শুরু করেছে ধারাবাহিকভাবে। জঙ্গিদের বক্তব্য, সরকারি নিয়ম অনুযায়ী তারা পুনর্বাসন পাচ্ছে না।

এই কারণেই খাস জমি দখল করতে বাধ্য হয়েছে তারা। প্রাক্তন বৈরীরা তাদের প্রায় ১৫০০ পরিবার নিয়ে বিস্তীর্ণ অঞ্চল দখল করে। তাদের এই কার্য কলাপে নানান প্রশ্ন উকি দিতে থাকে জনমনে। বাড়তে থাকে আতঙ্ক।

বন দপ্তরের পক্ষ থেকে এই সংক্রান্ত বিষয়ে কাঞ্চনপুর থানায় মামলাও দায়ের করা হয়েছিল। তারপরও প্রশাসন তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিতে পারছিল না।

শেষ পর্যন্ত মঙ্গলবার প্রাক্তন জঙ্গিদের উচ্ছেদের দাবি তুলে রাস্তা অবরোধ করে সাধারণ জনজাতিরা।মূলত তারা সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের পাট্টা প্রাপক লোকজন। প্রাক্তন বৈরীরা তাদের জমিও দখল করে নিয়েছে। এবং তৈরি করছে বাড়িঘর। স্বাভাবিকভাবেই সাধারণ জনজাতি অংশের মানুষের মধ্যে ক্ষোভ ও আতঙ্ক উভয়ই বিরাজ করছে।

কোন উপায় না পেয়ে তারা রাস্তায় নামতে বাধ্য হয়। জনজাতি সম্প্রদায়ের মানুষ প্রাক্তন বৈরীদের বিরুদ্ধে জেহাদ ঘোষণা করতেই বিপাকে পড়ে যান উত্তর জেলার জেলা শাসক নাগেশ কুমার বি। বুধবার তিনি জরুরি তলবে ছুটে আসেন কাঞ্চনপুরে।

তিনি কথা বলেন, জমি জবর দখলকারী প্রাক্তন বৈরী নেতাদের সঙ্গে।একইভাবে স্থানীয় ক্ষুব্ধ জনজাতিদের সঙ্গেও আলোচনায় বসেন। খতিয়ে দেখেন পাট্টা প্রাপক জনজাতি লোকজনের কাগজপত্র। শেষ পর্যন্ত জেলা শাসক বুঝতে পারেন প্রাক্তন বৈরীরা বলপূর্বক নিয়ম নীতি লংঘন করে জমি জবরদখল করে রেখেছে। এই বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পরেই জেলাশাস নাগেশ কুমার বি জবরদখলকারী প্রাক্তন বৈরীদের জমি ছাড়ার নির্দেশ দেন। বেঁধে দিয়েছেন সময়।

প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে,আগামী রবিবারের মধ্যে প্রাক্তন বৈরীরা জমি দখল মুক্ত না করলে তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিকভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এবং শুরু হবে উচ্ছেদ অভিযান। তার জন্য দায়ী থাকবে না প্রশাসন। তবে জেলা শাসকের এই চরম বার্তা ভালো চোখে নেয় নি প্রাক্তন বৈরীরা। তারাই জমি ছাড়তে নারাজ। সব মিলিয়ে এক অগ্নি গর্ভ পরিস্থিতির সৃষ্টি হচ্ছে গোটা কাঞ্চনপুর জুড়েই।