ডেস্ক রিপোর্টার,২৭নভেম্বর।।
কর্তব্য পালন করতে গিয়ে মানসিক ভারসাম্যহীন উন্মত্ত যুবকের আক্রমণে শহীদ হলেন পুলিশ ইন্সপেক্টর সত্যজিৎ মল্লিক।বাড়ি শহরের ইন্দ্রনগরে। তিনি খোয়াই থানায় কর্মরত ছিলেন সেকেন্ড অফিসার হিসেবে।
ঘটনা শুক্রবার মধ্যরাতে।ঘটনা খোয়াইয়ের রামচন্দ্র ঘাটের শেওড়াতলি এলাকায়। এদিন খুনি যুবক প্রদীপ দেবরায় তার দুই শিশু কন্যাকেও খুন করে নিজের ঘরের মধ্যে।তারা হলো মন্দিরা দেবরায়(৭) ও অদিতি দেবরায় (১) ।শাবল দিয়ে গুরুতর জখম করে তার স্ত্রী মিনা পাল দেবরায়কে গুরুতর জখম করে।প্রদীপের ঘরে চিৎকার শুনে ছুটে যান তার দাদা অমলেশ দেবরায়। রক্ষা পান নি তিনিও।প্রদীপের শাবলের আঘাতে মৃত্যু হয় তার দাদা অমলেশের।

বাড়িতে তাণ্ডব চালিয়ে প্রদীপ দেবরায় বেরিয়ে যায় এলাকায়।বিভিন্ন বাড়ি ঘরে চালায় ভাঙচুর। মানুষ ভয়ে আতঙ্কিত হয়ে উঠে।এই সময় পাশের রাস্তা ধরে অটো নিয়ে বাড়ি যাচ্ছিলেন এলাকার কৃষ্ণ সাহা। অটো দাঁড় করিয়ে কৃষ্ণ সাহা ও তার ছেলে রণবীর দাসকে আক্রমণ করে প্রদীপ।ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় কৃষ্ণ দাসের।গুরুতর জখম হয় তাঁর ছেলে রণবীর।
প্রদীপ দেবরায়ের নৃশংস তাণ্ডব লীলার খবর পেয়ে বিশাল পুলিশ বাহিনী নিয়ে শেওড়াতলিতে ছুটে যান খোয়াই থানার সেকেন্ড অফিসার সত্যজিৎ মল্লিক। ঘটনাস্থলে পৌঁছার সঙ্গে সঙ্গেই প্রদীপ দেবরায় এগিয়ে এসে তার হাতে থাকা শাবল দিয়ে অফিসার সত্যজিৎ মল্লিকের আঘাত করে।ঘটনাস্থলেই সত্যজিৎ মল্লিক মাটিতে লুটিয়ে পড়েন।
পুলিশ সঙ্গে সঙ্গে রক্তাক্ত পাঁচ জনকে খোয়াই হাসপাতালে নিয়ে আসে। সেখানে প্রদীপ দেবরায়ের দুই শিশু কন্যা মন্দিরা ও অদিতি সহ তার দাদা অমলেশ দেবরায় ও এলাকাবাসী কৃষ্ণ দাসকে মৃত বলে ঘোষণা করে।গুরুতর আশঙ্কাজনক অবস্থায় জিবি হাসপাতালে রেফার করা হয় পুলিশ ইন্সপেক্টর সত্যজিৎ মল্লিক, খুনি প্রদীপ দেবরায়ের স্ত্রী মিনা পাল দেবরায় ও কৃষ্ণ দাসের ছেলে রণবীর দাসকে। জিবি হাসপাতালে আনার পর চিকিৎসকরা পুলিশ ইন্সপেক্টর সত্যজিৎ মল্লিককে মৃত বলে ঘোষণা করে।
এদিকে সমস্ত তাণ্ডব লীলার পর পুলিশ ও এলাকাবাসী সিরিয়াল কিলার সত্যজিৎ মল্লিককে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।রাতেই তাকে নিয়ে আসা হয় খোয়াই থানায়।শনিবার পুলিশ তাকে আদালতে সোপর্দ করে।আদালত খুনি প্রদীপ দেবরায় তার সমস্ত দোষ স্বীকার করে। আদালত তাকে জেল রিমান্ডে পাঠিয়ে দেয়। এই ঘটনা কেন্দ্র করে গোটা রামচন্দ্র ঘাট সহ খোয়াই জেলায় নেমে আসে শোকের ছায়া।
শনিবার ময়নাতদন্তের পর পুলিশ অফিসার সত্যজিৎ মল্লিককে মৃতদেহ সহ বাদবাকিদের লাশ তুলে দেওয়া হয় তাদের পরিবারের হাতে। দুপুরে সত্যজিৎ মল্লিকের মৃতদেহ নিয়ে যাওয়া হয় খোয়াই থানায়।সেখানে দেওয়া হয় গার্ড অফ অনার।উপস্থিত ছিলেন রাজ্য পুলিশের মহানির্দেশক ভি এস যাদব,জেলা পুলিশ সুপার সহ পদস্থ পুলিশ আধিকারিকরা।চোখের জলের প্রিয় অফিসারকে শেষ বিদায় দেন অরক্ষাকর্মীরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *