ডেস্ক রিপোর্টার,আগরতলা।।
          রাজ্যের প্রধান রেফারেল হাসপাতাল জিবিতে রোগীর পরিজনদের কাছে রক্ত চুষক হয়ে হয়ে উঠেছে স্পেশাল নার্সরা।জিবি হাসপাতালের প্রতিটি ওয়ার্ডে স্পেশাল নার্সদের তাণ্ডবে অতিষ্ট রোগীর পরিজনরা। তারা রোগীদের সেবা – সুশ্রসার নামে রীতিমতো একটি একটি নিটোল চক্র পরিচালনা করছে। রোগীর পরিজনদের ভাষায় এটা একটা “অপরাধ”। স্পেশাল নার্সদের লোক ঠকানো কার্যকলাপ সম্পর্কে ওয়াকিবহাল চিকিৎসকরা।কিন্তু  হাসপাতালের দুর্নামের ভয়ে তারাও মুখে কুলুপ এঁটে রেখেছে। স্বাস্থ্য প্রশাসনও উদাসীন। এই কারণেই স্পেশাল নার্সদের দস্যিপনায় নাভি শ্বাস উঠছে রোগী ও তাদের পরিজনদের।
           জিবি হাসপাতালের প্রতিটি ওয়ার্ডেই আছেন স্পেশাল নার্স। তারা স্বাস্থ্য প্রশাসনের বেতন ভুক্ত নার্স নয়। পুরোপুরি বেসরকারী। রাজধানীর জিবি ও আইজিএম হাসপাতালে স্পেশাল নার্স হিসাবে শতাধিক মহিলা কাজ করছেন।হচ্ছে তাদের বিকল্প কর্ম সংস্থান। তাতে অবশ্যই কোনো আপত্তি নেই।তারা হাসপাতালে রোগীর  সেবা- শুশ্রূষা করে থাকেন। বিনিময়ে বুঝে নেন পারিশ্রমিক। জিবি হাসপাতালের নিয়োজিত স্পেশাল নার্সরা প্রতি রোগীদের আট ঘণ্টা পরিষেবা দেওয়ার বিনিময়ে পারিশ্রমিক পান তিনশ টাকা। তারা মূলত কাজ করেন দিন ও রাতের শিফটে। যে সমস্ত রোগীর আত্মীয় পরিজনরা স্পেশাল নার্সদের পরিষেবা নিতে চান তাদেরকেই গুনতে হয় টাকা।কিন্তু টাকা দেওয়ার পর তাদের কাছ থেকে পর্যাপ্ত পরিষেবা পাওয়া যায় না। কারণ একজন স্পেশাল নার্স এক শিফটে কম করেও সাত থেকে আট জন রোগীর পরিষেবার দায়িত্ব নিয়ে থাকেন।বিনিময়ে এক শিফটে  তারা রোজগার করেন প্রায় দুই হাজার টাকা। টাকার জন্য সাত – আট জন রোগীর দায়িত্ব নেওয়ার ফলে কোনো রোগীকেই পর্যাপ্ত সময় দেওয়া তাদের পক্ষে সম্ভব হয় না।স্বাভাবিক ভাবেই বেঘাত ঘটে রোগীদের  সেবা- শুশ্রূষায়।
           জিবি হাসপাতালে ভর্তি থাকা অনেক রোগীর পরিজনরা স্পেশাল নার্সদের উপর ভরসা করেন। এবং তাদের উপর রোগীর দায়িত্ব দিয়ে চলে যান।অবাক করার মতো ঘটনা তারা বাড়ির লোকজনের অনুউপস্থিতিতে রোগীদের উপর কোনো নজরই দেন নি। কারণ একজন নার্স সাত – আট জন রোগীর দায়িত্বে থাকলে যা হওয়ার তাই হচ্ছে। তাদের খামখেয়ালিপনার জন্য মৃত্যু হচ্ছে অনেক রোগীর।  কখনো কখনো দেখা যায়  অক্সিজেন সরবরাহ সঠিক ভাবে না হওয়ার কারণে রোগীর মৃত্যু ঘটছে।কিন্তু রোগীর পরিজনরা তা দেখার জন্য টাকা দিয়ে রেখেছিল স্পেশাল নার্স। প্রতিদিন এরকম ঘটনা ঘটছে জিবি হাসপাতালে।



শুধু কি তাই, মুমূর্ষ রোগীদের হাসপতালে আনা নেওয়ার জন্য রাখা হয় হুইল চেয়ার। এখানে অনৈতিক ভাবে ব্যবসা করে  স্পেশাল নার্সরা। তারা সরকারী সম্পত্তি এই হুইল চেয়ার লুকিয়ে  রেখে দেয় । তাও আবার নিজেদের হেফাজতে। হাসপতালে ভর্তি হওয়া যে সমস্ত রোগীর পরিজনরা তাদের নিয়োগ করবে,এই রোগীরাই কেবল হুইল চেয়ারের পরিষেবা পাবে। অন্যদের  হুইল চেয়ার পেতে কাঠ খর পুড়াতে হয়। প্রয়োজনে স্পেশাল নার্সরা রোগীকে হুইল চেয়ার দিয়ে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গাতে নিয়ে যাবে। তার জন্য অবশ্যই স্পেশাল নার্সদের দিতে হবে টাকা।পরিমাণ নেহাৎ কম নয়। হুইল চেয়ারে রোগীকে বসালেই দিতে হয় দেড়শ থেকে দুইশ টাকা। যে সমস্ত রোগীর পরিজন আর্থিক ভাবে দুর্বল। বা যারা নিজেরাই রোগীদের হুইল চেয়ারে করে নিয়ে যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করে তাদের কপালে দুর্গতির অন্ত নেই।কারণ তারা হাতে পাবে না হুইল চেয়ার। রীতি মতো জুলুমবাজী শুরু করে দেয় স্পেশাল নার্সরা। অতিরিক্ত হিসাবে তো আছেই দুর্ব্যবহার। আর সুযোগ পেলেই দূর দূরান্ত থেকে আসা রোগীর পরিজনদের কোপ (টাকা লুঠ) দিয়ে সিদ্ধ হস্ত স্পেশাল নার্সরা। জিবি হাসপাতালে স্পেশাল নার্সরা রীতিমতো গুন্ডারাজ চালালেও উদাসীন রাজ্য স্বাস্থ্য প্রশাসন ও জিবি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *