ডেস্ক রিপোর্টার, ১৯সেপ্টেম্বর।।
বিতর্ক পিছু ছাড়ছে না রাজ্যের আইএএস অফিসার সোনাল গোয়েলকে। তার বিরুদ্ধে উঠেছে ২০০কোটি টাকার কেলেঙ্কারির অভিযোগ।এই অভিযোগ তুলেছে হরিয়ানার ভিজিল্যান্স। সোনাল গোয়েল ফরিদাবাদ মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনের কমিশনার থাকাকালীন এই আর্থিক কেলেঙ্কারির ঘটনা ঘটেছে।জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হরিয়ানা ভিজিল্যান্স নোটিশ দিয়েছে সোনাল গোয়েলকে। কিন্তু দিল্লি ত্রিপুরা ভবনে ভিআইপি ডিউটির জন্য ব্যস্ততার কথা জানিয়ে দিয়ে এযাত্রায় রক্ষা পেলেন সোনাল গোয়েল। বর্তমানে সোনাল গোয়েল দিল্লি ত্রিপুরা ভবনের রেসিডেন্ট কমিশনার হিসাবে কর্মরত। ত্রিপুরা ভবনেও সোনাল গোয়েলের বিরুদ্ধ অভিযোগের অন্ত নেই।ভবনের কর্মীদের সঙ্গে তাঁর দুর্ব্যবহার নিত্য দিনের ঘটনা। তাছাড়া নিজের ক্ষমতাকে অপব্যবহার করে অনেক অপকর্ম করছেন সোনাল। ত্রিপুরা ভবনে কান পাতলেই শোনা যায় এই সংক্রান্ত বিষয়।
খবর অনুযায়ী, সোনাল গোয়েল ২০১৬সালের ৬আগস্ট থেকে ২০১৭-র ১৪আগস্ট পর্যন্ত ফরিদাবাদ মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন কমিশনার ছিলেন। এই সময় প্রচুর অর্থিক দুর্নীতি হয়েছে ফরিদাবাদ পুর নিগমে। ভিজিল্যান্স’র দাবি, এই সময় নির্মাণ কাজ না করিয়ে ঠিকাদারকে টাকা পাইয়ে দেওয়া হয়েছিল।এই সংক্রান্ত প্রচুর তথ্য রয়েছে তদন্তকারী সংস্থার হাতে। এই তথ্য সোনাল গোয়েল সহ অন্যান্য আইএএস অফিসারদের গ্রেফতার করতে যথেষ্ট। সোনাল গয়েলের সঙ্গে ফরিদাবাদ মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনের আরো তিন প্রাক্তন কমিশনার তথা আইএএস অফিসারকে ভিজিল্যান্স জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নোটিশ পাঠিয়েছে। তারা সবাই কেলেঙ্কারির সময় ফরিদাবাদ মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনের কমিশনার ছিলেন।
হরিয়ানা ভিজিল্যান্সের দাবী, নোটিশ অনুযায়ী গত শনিবার সোনাল গোয়েলকে ভিজিল্যান্সের কাছে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য যাওয়ার কথা। কিন্তু তিনি যান নি। পাল্টা নোটিশ পাঠিয়ে জানিয়ে দেন ত্রিপুরা ভবনে ভিআইপি ডিউটির জন্য তিনি ব্যস্ত থাকবেন। তাই ভিজিল্যান্সের কাছে তিনি যেতে পারবেন না। ফরিদাবাদ মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনের ২০০কোটি টাকার কেলেঙ্কারি মামলায় এখনও পর্যন্ত হরিয়ানা ভিজিল্যান্স ঠিকাদার সতবীর, প্রধান প্রকৌশলী ডি আর ভাস্কর, রমন শর্মা, জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ার দীপক শর্মাকে কেলেঙ্কারিতে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বর্তমানে তারা সবাই জামিনে আছেন। এর পরের ধাপে
ফরিদাবাদ পুর নিগমের যুগ্ম পরিচালক দীপক থাপার, সিনিয়র অ্যাকাউন্টস অফিসার বিশাল কৌশিক, ফিনান্স কন্ট্রোলার সতীশ কুমার এবং সিনিয়র অ্যাকাউন্টস অফিসার হরগুলাল ফাগনাকে অডিট বিভাগ থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরা সবাই বর্তমানে কারাগারে।
হরিয়ানা ভিজিল্যান্স দাবি করেছে, তাদের কাছে আইএএস অফিসারদের বিরুদ্ধে এমন কাগজপত্র রয়েছে, যা প্রমাণ করে যে কেলেঙ্কারি সম্পর্কে তারা অবগত থাকা সত্ত্বেও চুপ ছিলেন। কাজ না করেই ঠিকাদারকে বেতন দেওয়া হয়েছে এমন অনেক ফাইল রয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে কাজের খরচও বেড়েছে। ফাইলগুলোতে আইএএস অফিসারাই স্বাক্ষর করেছেন।
দিল্লি কৌটিল্য মার্গস্থিত ত্রিপুরা ভবনে কান পাতলেই শোনা যায় ভবনের রেসিডেন্ট কমিশনার সোনাল গোয়েলের বিরুদ্ধে নানান অভিযোগ।তিনি নিজের ক্ষমতা অপব্যবহার করে ভবনের সরকারি কর্মচারীদের ব্যক্তিগত কাজে নিযুক্ত করে থাকেন। তিনি কোথাও কোন অনুষ্ঠানে গেলে ভবনের কর্মচারীদের সঙ্গে করে নিয়ে যান তার ছবি তোলার জন্য। অনৈতিক ভাবে তিনি ব্যবহার করেন ভবনের গাড়ি। তাতে বিঘ্নিত হয় ভবনের কাজকর্ম।কর্মচারীদের সঙ্গেও নানান দুর্ব্যবহার করার অভিযোগ রয়েছে আইএএস সোনাল গোয়েলের বিরুদ্ধে। শুধু কি তাই, ত্রিপুরা ভবনের রুম খালি থাকলেও ত্রিপুরার লোকজনদের দেওয়া হয়নি।এই রুম বরাদ্দ করা হয় হরিয়ানা পুলিশের পদস্থ আধিকারিকদের জন্য। অভিযোগ,হরিয়ানার পুলিশ আধিকারিকরা মহিলা নিয়ে দিনের পর দিন থাকেন ত্রিপুরা ভবনে(!)অথচ রাজ্যের মানুষকে দিল্লি ত্রিপুরা ভবনে থাকার জন্য কোনো রুম না পেয়ে ঘুরতে হয় হন্যে হয়ে। তাতে অবশ্যই সোনাল গোয়েলের কি আসে যায়? ত্রিপুরার কোষাগারের টাকায় পরিচালিত ত্রিপুরা ভবনেই ঠাই হয় না খোদ রাজ্যের মানুষের। সোনাল গোয়ালের বিরূদ্ধে উঠা এই সমস্ত অভিযোগ খতিয়ে দেখা উচিত রাজ্য প্রশাসনের। ত্রিপুরা ভবনকে দুর্নীতি মুক্ত করতে হলে অচিরেই সরাতে হবে আইএএস সোনাল গোয়ালকে।মনে করছে দিল্লি ত্রিপুরা ভবন থেকে ফিরে আসা ভুক্তভোগী মানুষ।