ডেস্ক রিপোর্টার, আগরতলা।।
    মানব পাচার,ত্রিপুরা সহ গোটা উত্তর পূর্বাঞ্চলের অপরাধ জগতের কুটির শিল্প। পাচারের পণ্য নারী, পুরুষ সহ শিশুরা। তার মধ্যে অধিক প্রাধান্য পেয়ে থাকে নারীরা। রাজ্যের সীমান্ত এলাকা গুলিতে যে নারী বাজারের রমরমা বাণিজ্য চলছে তথ্য সহ তার প্রমাণ বহু আগেই দিয়েছিলো “জনতার মশাল”।
      “জনতার মশাল”- এ এই সংক্রান্ত খবর প্রকাশিত হয়েছিল চলতি বছরের ২১জুন।প্রতিবেদনে তথ্য দিয়ে তুলে ধরা হয়েছিল ত্রিপুরার বিলোনিয়া, সাব্রুম সহ গোটা দক্ষিন জেলা ও সিপাহীজলা জেলায় কিভাবে সক্রিয় হয়ে কাজ করছে নারী পাচার চক্রের চাইরা।তাদের সঙ্গে সরাসরি জড়িত ওপার বাংলার রাজনৈতিক নেতারা।


বিজ্ঞাপণ

নারী পাচার নিয়ে জনতার মশাল – এ প্রকাশিত  খবরটি যে সম্পূর্ন ভাবে বাস্তব সম্মত ছিলো তার প্রমাণ দিয়েছে দেশের সর্বোচ্চ তদন্তকারী সংস্থা ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি তথা এনআইএ। মঙ্গলবার রাতে রাজ্য পুলিশকে ঘুমে রেখে গোটা রাজ্যে নারী পাচার চক্রের চাইদের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে ছিলো এনআইএ। একে একে জালে তুলেছে ২১জন চাইকে। তাদের মধ্যে রয়েছে বিলোনিয়ার মতাইয়ের বাসিন্দা তথা নারী পাচার চক্রের মাষ্টার মাইন্ড শুকলাল মিয়া। সঙ্গে তার সঙ্গি ঝুটন দাস। এনআইএ – র টিম রাজ্যে দফাওয়ারী অভিযান চালিয়ে সাব্রুম থেকেও তিনজনকে গ্রেফতার করেছে। এরা হলো সাব্রুমের আইলমারার বাসিন্দা বিক্রম ত্রিপুরা, বাবুল ত্রিপুরা ও স্থানীয়  আমতলী অঞ্চলের সুকান্ত দত্ত।

।।ধৃত মানব পাচারকারী শুকলাল মিয়া।।

গোয়েন্দার তথ্য অনুযায়ী, দীর্ঘ দিন ধরেই ত্রিপুরাকে করিডোর করে চলছে রমরমা মানব পাচার। এই সমস্ত খবর ছিলো এনআইএ – র কাছে।তারা সন্তর্পনে বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করে। এরপরই একে একে ভেসে উঠে শুকলাল, ঝুটন,বিক্রম,বাবুলদের নাম।স্বাভাবিক ভাবেই তাদেরকে গ্রেফতারের জন্য জাল বিস্তার করে ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি।

।।ধৃত মানব পাচারকারী ঝুটন দাস।।

রাজ্য পুলিশকে ঘুমে রেখে মঙ্গলবার রাতে এনআইএ রাজ্যের বিভিন্ন জায়গাতে এক সঙ্গে অভিযান চালায়। এবং হাতে নাতে পেয়ে যায় সাফল্য।
গত ১৮ জুলাই আসাম পুলিশ আচামকা বিলোনিয়াতে হানা দিয়েছিলো।শিলচর থানায় দায়ের হওয়া আন্তর্জাতিক নারী পাচার সংক্রান্ত একটি মামলার প্রেক্ষিতে। তখন আসাম পুলিশ বিলোনিয়ার বাসিন্দা তথা নারী পাচার চক্রের চাই পার্থ সেনকে গ্রেফতার করেছিল।এবং তাকে নিয়ে গিয়েছিল আসামে।

।।বিলোনিয়াতে আসাম পুলিশের হাতে ধৃত পার্থ সেন।।

পরবর্তী সময়ে আসাম পুলিশ ধৃত পার্থ সেনকে তুলে দিয়েছিল এন আই এ’র হাতে। ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি ধৃত পার্থ সেনকে টানা জিজ্ঞাসাবাদ করে। এবং গোয়েন্দার জিজ্ঞাসাবাদে পার্থ সেন বিলোনিয়া, সাব্রুম সহ গোটা রাজ্যের নারী পাচার বাণিজ্যের গোপন উপাখ্যান খোলসা করে।


নারী পাচার বাণিজ্যে পার্থ সেনের দেখানো রুট ম্যাপ ধরেই রাজ্য ঝাঁপিয়ে পড়ে এনআইর আধিকারিকা। এবং তাদের গ্রেফতার করে মঙ্গল বার দুপুরে তারা রওনা হয় গুয়াহাটির উদ্দেশ্যে।

।।রাজ্যে মানব পাচারের হটস্পট দুই জেলা।।

গত ২১জুন “জনতার মশাল” – এ সম্প্রচারিত খবরে আমরা দাবি করেছিলাম,এপারে নারী পাচার চক্রের চাই শুকলাল মিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশের পশুরামের মেয়র নিজাম উদ্দিনের সম্পর্কের কথা। ওপারের নিজাম উদ্দিন একজন আন্তর্জাতিক নারী পাচার চক্রের চাই।

দুই পাড়ের মানব পাচারের এজেন্ট শুকলাল ও নিজাম উদ্দিনের বিমানে ভ্রমণ।

শুকলাল নিয়মিত আসা যাওয়া করতো।ওপারে নিজাম উদ্দিনের দরবারে। নিজাম উদ্দিনও সীমান্ত ডিঙিয়ে চলে আসতো এপার বিলোনিয়াতে।

।।বাংলাদেশে নিজামের বাড়িতে শুকলাল।।

মূলত তাদের উদ্দেশ্য ছিলো দুইপাড়েই এক নিটোল নারী বাজার তৈরি করা।তারা তাদের উদ্দেশ্যে সফল হয়েছে ঠিকই, কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *