*অভিজিৎ ঘোষ*
                        _______________


দেশীয় রাজনীতিতে বিজেপির একমাত্র বাঙালি মুখ্যমন্ত্রী ডা: মানিক সাহা।তিনিই এখন জাতীয় স্তরে বিজেপির বাঙালি মুখ। নিঃসন্দেহে এটা রাজ্য  রাজনীতির বড় পাওনা।আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে বঙ্গে মানিকই এখন বিজেপির তুরুপের তাস।
        রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ মানিক সাহা একজন সজ্জন ভদ্রলোক। রাজ্য  ও জাতীয় রাজনীতিতে মানিক সাহা এভাবেই নিজের পরিচয় করিয়ে নিয়েছেন। রাজ্যের মানুষের কাছেও দন্ত চিকিৎসক ডা: মানিক সাহা একজন “মুখ্যমন্ত্রী” হিসেব বেশ জনপ্রিয়। সব মিলিয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ডা: মানিক সাহা এখন হয়ে উঠছেন জাতীয় রাজনীতির মুখ। তাই দেশের মধ্যে ঘোষিত বাঙালি প্রধান রাজ্য পশ্চিম বাংলায় আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হয়ে উঠছেন ভাজপার ভোট টানার যন্ত্র। বাংলার মাটিতে তার ইমেজকে কাজে লাগাতে চাইছেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। ত্রিপুরায় ডাবল ইঞ্জিন সরকারের জনমুখী প্রকল্পের সুবিধা কিভাবে পৌঁছে যাচ্ছে মানুষের ঘরে ঘরে? বাংলা সফরে গিয়ে বাঙালিদের কাছে এই তথ্য তুলে ধরেছেন ডা: মানিক সাহা।


আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের প্রচারের জন্য  মুখ্যমন্ত্রী ডা: মানিক সাহা এখন বাংলা সফরে। বৃহস্পতিবার শুরু হয় মুখ্যমন্ত্রীর দুইদিনের বঙ্গ সফর।এদিন  উত্তর ও দক্ষিণ মালদা লোকসভা কেন্দ্রে ভারতীয় জনতা পার্টির প্রার্থীদের সমর্থনে  নির্বাচনী প্রচারে অংশ নিয়েছিলেন। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহাকে নিয়ে বিজেপির স্থানীয় নেতা – কর্মীদের মধ্যে ছিলো বাধন হারা উচ্ছ্বাস। শুক্রবারেও  মালদায় বিজেপির টানা সাংগঠনিক কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন তিনি।
               সফরের প্রথম দিনে মালদা দক্ষিণ  লোকসভা কেন্দ্রের ভারতীয় জনতা পার্টির মনোনীত প্রার্থীর সমর্থনে মানিকচকে আয়োজিত সাংগঠনিক সভায় অংশ গ্রহণ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।উত্তর মালদা কেন্দ্রে ভারতীয় জনতা পার্টির  উদ্যোগে আয়োজিত এক সুবিশাল “বুথ সভাপতি” সভায়ও মুখ্যমন্ত্রী গিয়েছিলেন। তিনিই ছিলেন সভার মূল কেন্দ্র বিন্দুতে। এই  সভায় বক্তব্য রাখেন মুখ্যমন্ত্রী।  মুখ্যমন্ত্রী ডা: মানিক সাহা বাংলার বিজেপির কর্মীদের উদ্দেশ্যে বার্তা দিয়ে বলেন, “তৃণমূল কংগ্রেসের অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রত্যেকের  প্রতিবাদ করতে হবে। তাহলেই তারা পিছু হটবে। গোটা বাংলা জুড়ে এখন চলছে অরাজকতা।”


মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “এক সময় ছিলো, বাংলা আগে যা ভাবতো, গোটা দেশ তার পরে ভাবতো।এখন তৃণমূল কংগ্রেসের জামানায় সব তালগুড় পাকিয়ে গিয়েছে। বাংলা বলতেই বঙ্কিম চন্দ্র,রবীন্দ্র নাথ, স্বামী বিবেকানন্দ, রামকৃষ্ণ পরমহংস দেব, শ্যামা প্রসাদ মুখার্জিদের নাম উঠে আসতো। আর এখন কি চলছে? বাংলার বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে গোটা দেশ ওয়াকিবহাল।”


মুখ্যমন্ত্রী কমিউনিষ্টদের দিকে আঙুল তুলে সুর চড়া করে বলেন, “এক সময় কমিউনিস্টরা ত্রিপুরাতে ভয়ের রাজনীতি কায়েম করেছিলো।মানুষ প্রতিবাদী হয়ে উঠতেও তারা পালিয়ে গিয়েছে। বাংলাতেও টানা ৩৪ বছর বামেরা অত্যাচার করেছিলো।এরপর ক্ষমতায় আসে তৃণমূল।তারা বামেদের অত্যাচারের কার্বন কপিকেও ছড়িয়ে গিয়েছে।”


শুক্রবারেও মুখ্যমন্ত্রী ডা: মানিক সাহা মালদায় বিজেপির সাংগঠনিক সভায় অংশ গ্রহন করেন।এদিন মুখ্যমন্ত্রী মালদার গয়েশপুর এলাকায় জনসম্পর্ক অভিযানে যান করেন।বাংলার স্বৈরাচারী তৃণমূল সরকারের সকল বঞ্চনা ও অত্যাচারের জবাব গনতান্ত্রিক ভাবে দেওয়ার জন্য সকল গ্রামবাসীদের প্রতি আহ্বান করেন মুখ্যমন্ত্রী।মালদায় ভারতীয় জনতা পার্টির বিভিন্ন পদাধিকারী ও কার্যকর্তাদের সঙ্গে পৃথক ভাবে করেন বৈঠকও। মুখ্যমন্ত্রী ডা: মানিক সাহা দক্ষিণ মালদার ষ্টেশন রোড এলাকায়  ভারতীয় জনতা পার্টির মনোনীত প্রার্থী রুপা মিত্র চৌধুরীর সমর্থনে দেওয়াল লিখন কর্মসূচিতেও অংশগ্রহন করেন।


সর্বশেষে মুখ্যমন্ত্রী তার বাংলা সফর নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লিখেছেন,
        “ভয় কি মরণে রাখিতে সন্তানে
       মাতঙ্গী মেতেছে আজ সমর রঙ্গে…।
পৈশাচিক শক্তির আগ্রাসন  রুখে দিতে ঘরে ঘরে বাংলার মায়েরা আজ হাতে তুলে নিয়েছে ভারতীয় জনতা পার্টির পদ্মফুল অঙ্কিত গৈরিক ঝান্ডা..”

ভারতীয় জনতা পার্টির দেশীয় রাজনীতির প্রেক্ষাপটে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ডা:মানিক সাহার বাংলা সফর যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। রাজ্যের জন্য এটা বড় পাওনা। এক সময়ে দেশীয় রাজনীতির প্রেক্ষাপটে  পূর্বতন বাম সরকারের মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার ছিলেন রাজ্যের পোস্টার বয়। মাঝে বিজেপি সরকারের অপর প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব নিজেকে সেই উচ্চতায় তুলে ধরার চেষ্টা করেছিলেন।এখন রাজ্যের মানুষের জন্য রাজনীতির এই ব্যাটন মুখ্যমন্ত্রী ডা: মানিক সাহার হাতে। রাজনীতিকদের কথায়, তিনিই এখন দেশীয় রাজনীতিতে ত্রিপুরার পোস্টার বয়। তৎসঙ্গে বিজেপির রাজনীতিতে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীও “বাঙালি” প্রধান মুখ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *