#Tripura #Bangladesh #Pakistan# Ayub #Khan#Dr. Yunus

আইয়ুবের পদাঙ্ক অনুসরন করেই ১৭কোটি মানুষের ভবিষ্যৎ ধ্বংস করে দেওয়ার পথেই হাঁটছেন ইউনূস। পূর্ব পাকিস্তানের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট থেকে কলম ধরলেন…অশ্রু হাসি।

।বাংলাদেশের দিকে দিকে ধ্বংসস্তূপ।(ছবি – সংগৃহীত)

পাট রপ্তানির ব্যাপক আয় পূর্ব পাকিস্তান থেকে হলেও তার সিংহভাগ পশ্চিম পাকিস্তানের ব্যয় হতো। পূর্ব পাকিস্তানের প্রতি এই বৈষম্য নিয়ে অসন্তোষ এবং রাষ্ট্র পরিচালনায় আইয়ুবের ব্যাপক অনিয়ম-অবিচারের কারণে পশ্চিম পাকিস্তানের মানুষও, ক্ষেপে যায় তাঁর  সরকারের বিরুদ্ধে । এই কারণেই দেশের মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি ঘুরাতে আইয়ুব খান ভারত বিদ্বেষী এজেন্ডাকে সামনে নিয়ে আসেন

যারা ধ্বংসের নেতৃত্বে আছেন, সবাই না বুঝলেও, কেউ বুঝেনা এটা মানা কষ্টকর।

আমি হতবাক হয়ে ভাবছি সত্যিই কি আমরা ধ্বংস হয়ে যাব? ধ্বংস হয়ে যাওয়ার জন্য সব বুঝে শুনে করছি? মনে অনেক কষ্ট এদেশের মানুষ সারা জীবন এক মুঠো ভাতের জন্য আত্মচিৎকার করত, রাস্তাঘাট ব্রিজ কালভার্ট কিছুই ছিল না – ৮৫ ভাগ মানুষের। দশ – বারো বছর আগেও বিদ্যুৎ ছিল না। একবার ধ্বংস হলে আবার চল্লিশ – পঞ্চাশ বছরেও এই জায়গায় ফিরে আসতে পারবো না। যারা ধ্বংসের নেতৃত্বে আছেন, সবাই না বুঝলেও, কেউ বুঝেনা এটা মানা কষ্টকর। তারপরও কেন এই জঘন্য পরিণতির দিকে যাওয়া বন্ধ হয় না, এটা ভাবতেই মনে পড়ে গেল-
১৯৮৮ সনে পাকিস্তানের জাতিয় নির্বাচনে বেনজির ভুট্টোর দল সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়া সত্বেও তাঁর নিকট ক্ষমতা হস্তান্তর না করার একটা কথা প্রচার হচ্ছিল। তখন “পারষ্টান ইকোনোমি রিভিউ” পত্রিকা পাকিস্তানের বিষয়ে একটা আর্টিকেল যা তখন আমি সিঙ্গাপুরে Strand Hotel এ বসে পড়ে জানলাম, যে ১৯৫৮ সনে ইস্কান্দার মির্জাকে উৎখাত করে আইয়ুব খান পাকিস্তানের ক্ষমতা দখল করে রাষ্ট্রপতি হন।

।।ভারত বিদ্বেষ!পুড়িয়ে দেওয়া হলো ঢাকার ইন্দিরা গান্ধী সেন্টার।।(ছবি – সংগৃহীত)

ইসকান্দর মির্জা বাংলাবাসি মুর্শিদাবাদের অত্যন্ত সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্ম। ১৯৪৭ সালে ভারত বিভক্তির পর তিনি পাকিস্তানের নাগরিকত্ব নেন। এবং  ১৯৫৬ থেকে ১৯৫৮ পযন্ত পাকিস্তানের রাষ্ট্রপতি ছিলেন।
যেহেতু সে সময় পূর্ব পাকিস্তানে উৎপাদিত পাট পৃথিবীতে ব্যাপক চাহিদা ছিল । যেমনটা বর্তমান আরব দেশগুলি তৈল রপ্তানি করে বিপুল পরিমান ডলার রোজগার করছে। পাকিস্থান এরকম  অর্থ আয় করতো পাট রপ্তানি থেকে। এজন্য পাটকে সোনালী আঁশ বলা হতো। সে সময় পশ্চিম পাকিস্তানের শিল্পপতিরা রাষ্ট্রিয় পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলাদেশর এই সোনালী আঁশকে প্রক্রিয়া জাত করে ব্যপক অর্থ কামানোর সুযোগ পাওয়ার জন্য আদমজি জুট মিল সহ শত শত শিল্প কারখানা স্থাপন করে।

আজমজী জুট মিলস (নারায়ণগঞ্জ)(ছবি – সংগৃহীত)

১৯৬০ দশকে এশিয়ার মধ্যে পাকিস্তান ধনী দেশের তালিকায় ২নম্বরে ছিলো ।নেপথ্যে পূর্ব পাকিস্তানের পাট শিল্প।

আরো খবর পড়ুন

https://janatarmashal.com/bangladesh-news-indian-coast-guard-arrested-78-bangladeshi-suspected-fishermen-yunus-government-does-not-have-the-courage-to-speak/

।।বিজ্ঞাপন।।

পৃথিবীতে তখন পাট ছাড়া এখনকার মত প্লাস্টিকের ব্যাগ (Artificial fiber) তৈরীর উন্নত প্রযুক্তি ছিল না। ঐ সময় পৃথিবীতে বহু যুদ্ধ চলছিল। বিভিন্ন পন্যের প্যাকেজিংয়ে ব্যবহার ছাড়াও, যুদ্ধের বাঙ্কার তৈরিতে পাটের ব্যাগের (বালি ভরে ব্যবহার করত) চাহিদা ছিল ব্যপক। যুদ্ধরত দেশগুলি পাটের বস্তার জন্য বেকুল হয়ে থাকত। তাই যে ব্যাগ  আজকে ১০০ ডলার আগামীকাল ৩০০ ডলার পরের দিন ৭০০/৮০০ ডলার, এমন কি ৩ দিনের ব্যবধানে ২০০০ ডলারেও বিক্রি হয়েছে ।

।পূর্ব পাকিস্তান তথা বর্তমান বাংলাদেশের আয়ের উৎস।।

সে কারণে পূর্ব পাকিস্তানের পাট রপ্তানি করে পাকিস্তান অনেক বেশি আয় করতো। তাই ১৯৬০ দশকে এশিয়ার মধ্যে পাকিস্তান ২নম্বর  অর্থনৈতিক দেশ আর জাপান ১ নম্বর অর্থনৈতিক দেশ হিসাবে পরিচিতি লাভ করে। কিন্তু পাট রপ্তানির ব্যাপক আয় পূর্ব পাকিস্তান থেকে হলেও তার সিংহভাগ পশ্চিম পাকিস্তানের ব্যয় হতো। পূর্ব পাকিস্তানের প্রতি এই বৈষম্য নিয়ে অসন্তোষ এবং রাষ্ট্র পরিচালনায় আইয়ুবের ব্যাপক অনিয়ম-অবিচারের কারণে পশ্চিম পাকিস্তানের মানুষও, আইয়ুব সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষেপে যায়।

আরো খবর পড়ুন

https://x.com/janatarmashal24/status/1863611005919433119?t=PierZcBZ-jc86JdP2KcJng&s=19

।।ইউনূসের ভারত বিদেশের নমুনা।।

ভারত বিদ্বেষী অবস্থা তুঙ্গে নিয়ে ১৯৬৫ সালে আগষ্ট মাসে  ভারতের বিরুদ্ধে যুদ্ধ আরম্ভ করে পাকিস্তান।

ঐ অবস্থায় আইয়ুব খাঁন ক্ষমতায় টিকে থাকার উদ্দেশ্য মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি অন্যদিকে সরিয়ে নেওয়ার জন্য তখন ভারতের বিরুদ্ধে বিনা কারণে উস্কানিমূলক বক্তব্য প্রচারের জন্য একদল সাবেক সেনা কর্মকর্তা ও তার সাথে সম্পৃক্ত সুযোগ সন্ধানী বিশিষ্ট ব্যক্তিকে নিয়োজিত করেন। যাতে মানুষকে ভারত বিদ্বেষী করে উত্তপ্ত অবস্থায় নেওয়া যায়। গণ অসন্তুষ্টির পাশাপাশি ভারত বিদ্বেষী অবস্থা তুঙ্গে নিয়ে ১৯৬৫ সালে আগষ্ট মাসে পাকিস্তান ভারতের বিরুদ্ধে যুদ্ধ আরম্ভ করে। তাতে গণ অসন্তোষ আইয়ুব খানের পরিবর্তে ভারতের বিরুদ্ধে নেওয়ার সুবিধা হিসাবে আইয়ুব খান ক্ষমতায় থাকা দীর্ঘায়িত করতে সক্ষম হয়। কিন্তু পাকিস্তানের অর্থনীতি ধ্বংস হয়ে যায়। সে সময় এশিয়ার ২য় অর্থনীতি দেশ ধীরে ধীরে পিছিয়ে পড়তে থাকে।আর পাকিস্তান থেকে বহু পিছিয়ে থাকা এশিয়ার দেশ সিঙ্গাপুর, হংকং, মালয়শিয়া, ইন্দোনেশিয়া সহ অনেকে দেশ উপরে উঠে যায়। আর বর্তমানও পাকিস্তানের অবস্থা এশিয়ায় সব থেকে পিছনে। বর্তমানে পাকিস্তান পৃথিবীতে ৪৬তম, আর ভারত ৫ম অর্থনৈতিক দেশ। উল্লেখ্য ২০০৮ সালের বাংলাদেশে ছিল পৃথিবীতে ৫৫ তম অর্থনৈতিক দেশ। আর যোগ্য স্থিতিশীল শাসন ব্যবস্থার কারণে ২০২৩ সালে পৃথিবীতে বাংলাদেশ ৩৫ তম অর্থনৈতিক দেশের গৌরব উজ্জ্বল স্থান দখল করে।

।।বাংলাদেশের জিডিপি গ্রাফ।।

বিশ্বের কাছে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সূচকের  অগ্রগতি ছিল অভাবনীয়।

২০০৮ সালে আমাদের মাথাপিছু আয় ছিল ৫৬৪ ডলার আর বর্তমানে ২৬২৪ ডলার যা ভারত, পাকিস্তান, নেপাল থেকে বেশি। যেখানে ২০০৮ সালে জিডিপি ছিল ১১০ বিলিয়ন ডলার আর ২০২৪ শে জুনে হয়েছে ৫০০ বিলিয়নের বেশি।
যত অর্থনৈতিক সূচক আছে সবগুলোই সারা পৃথিবীর কাছে বাংলাদেশের অগ্রগতি ছিল অভাবনীয়। এর পিছনে আমার অভিমত দুর্নীতি ছিল, রাজনৈতিক অস্থিরতা ছিল, সম্প্রীতির অভাব ছিল, বৈষম্য ছিল, গণমাধ্যমের স্বাধীনতার ঘাটতি ছিল, পক্ষপাতিত্বও ছিল কিন্তু আজকের মত এত সর্বনাশা অবস্থা ছিল না। আজকে সমাজে, প্রশাসনের, বিচার বিভাগে, দেশের অভ্যন্তরে সকল খাতে মারাত্মক সাংঘর্ষিক অবস্থা সৃষ্টি করা হয়েছে যা ধ্বংসের জন্য যথেষ্ট।
তার উপর প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সাথে বৈরিতা সৃষ্টির উস্কানি মানে আইয়ুবের পদাঙ্ক অনুসরন করে ১৭কোটি মানুষের ভবিষ্যৎ ধ্বংস করে দিবেনই।
(চলমান)


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *